ঈদে সাধারণ মানুষ নির্বিঘেœ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে : আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন

আগের সংবাদ

চবি-রাবিতে ফিরছে কলেজ

পরের সংবাদ

শুধু নির্দেশনা নয় মশা নিধনে কার্যকর উদ্যোগ দেখতে চাই

প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মৌসুমের শুরুতে রাজধানীতে কিউলেক্স মশার কামড়ে অতিষ্ঠ নগরবাসী। মশা নির্মূলের মূল দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের। মশা নিয়ন্ত্রণে করপোরেশনের তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। ওয়ার্ডভিত্তিক মশক নিধন শ্রমিকদের দিয়ে যেভাবে ডেঙ্গু ভাইরাসবাহিত এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ হয়েছে, এখন তেমন কোনো তৎপরতা নেই। চলতি মাসে মশার অত্যাচার মাত্রা ছাড়াবে- আগেই এমন আভাস দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাজধানীতে উদ্বেগজনকহারে কিউলেক্স মশার ঘনত্ব বাড়ছে। এর মধ্যে এক ফাঁদে যত মশা ধরা পড়ছে তার ৯৯ শতাংশ কিউলেক্স মশা। বাকি এক শতাংশ এডিস, এনোফিলিস, আর্মিজেরিস, ম্যানসোনিয়া। এমতাবস্থায় মশার উপদ্রব নগরবাসীকে বাড়তি শঙ্কায় ফেলছে। মশা বৃদ্ধির নানা কারণ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে শহর, বন্দর আর গ্রামের অবস্থা ভিন্নতর। প্রধানত আলোচনায় শহরের কথাই উঠে আসে, তাই শহরকেন্দ্রিক ভাবনাই প্রাধান্য পায়। আবদ্ধ পানি, উন্মুক্ত ড্রেন ও যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা রাজধানীতে মশার বংশবিস্তারের প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করছে। এটা নতুন কোনো তথ্য নয়। জানা যায়, ঢাকা শহরের সর্বত্রই এখন কিউলেক্স মশার মাত্রাতিরিক্ত উপদ্রব। পুরান ঢাকার কামরাঙ্গীরচর, লালবাগ, হাজারীবাগ, পোস্তগোলা, ডেমরা, শ্যামপুর, দনিয়া, পল্টন, হাজারীবাগ এলাকায় মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ লোকজন। বাসাবাড়ি, অফিস সব জায়গার চিত্র একই। অভিজাত গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, উত্তরা, মোহাম্মদপুরের বাসিন্দারাও মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) গঠিত এলাকা ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণ এবং বাড্ডা, কুড়িল, জোয়ার সাহারা এলাকায়ও কিউলেক্সের সমান উপদ্রব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভুক্তভোগী মাত্রই স্বীকার করবেন যে, মশক নিধনে ওষুধ কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রকৃত অর্থে মশক নিয়ন্ত্রণ করতে হলে মশার লার্ভার বিস্তার রোধে আগে থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। এ কার্যক্রম এখন দেখা যায় না। এছাড়া মশক নিধনের বেলাতেও বৈষম্য রয়েছে। বিশেষ বিশেষ স্থান ও এলাকায় যথারীতি ও নিয়মিত মানসম্পন্ন ওষুধ ছিটানো হলেও অন্য এলাকায় তার ছিটেফোঁটাও দেখা যায় না। মশা নিধনে বছর বছর বরাদ্দ বাড়াচ্ছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তারপরও মশার উৎপাতে সারা বছরই অতিষ্ঠ থাকে নগরবাসী। এ সমস্যা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশনের ভূমিকা নিয়েও নানা অভিযোগ নগরবাসীর। নগরবিদরাও বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণে সংস্থা দুটির নানা ব্যর্থতার কথা। দুই সিটি করপোরেশন অবশ্য বলছে, মশক নিয়ন্ত্রণে তাদের আন্তরিকতার অভাব নেই। তবে মশা নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা অব্যাহত থাকলে আবারো ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকবে। বছরের ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত কিউলেক্স মশার প্রজনন মৌসুম। কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, কিউলেক্স মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের, এটা নগরবাসীর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। কেননা কিউলেক্স মশার প্রজনন স্থান ডোবা-নালায় জমে থাকা পানিতে। আর ঢাকা শহরে এটা পরিষ্কারের দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনের। এসব কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হলে কিউলেক্স মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মশা নিধনের মতো জরুরি কাজে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছে কিনা- এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেরও দৃষ্টি দেয়া আবশ্যক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়