দোলাইরপাড়ে দুর্বৃত্তের হাতে ১ তরুণ খুন

আগের সংবাদ

জগন্নাথের ঘাটে ঘাটে হরিলুট

পরের সংবাদ

টুইন ম্যাজিক

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ভাবছেন, একটি সন্তান নিয়েই হিমশিম অবস্থা, দুটি সন্তান একেবারে জন্মালে কীভাবে সামলাবেন! কিন্তু এই টুইন বা যমজ শিশুদের নিয়ে আমাদের মধ্যে সব সময় এক ধরনের কৌতূহল কাজ করে। তাই যমজ সন্তানের সম্ভাবনা কাদের বেশি? কী কী কারণে যমজ সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা বাড়ে, তা নির্ভর করে বেশ কিছু বিষয়ের উপর।
ডা আশরাফুন্নাহার চৈতি

যমজের রকমফের
সাধারণত মনোজাইগটিক টুইন আর ফ্র্যাটেরনাল টুইন এই দুই রকম টুইন বা যমজ সন্তান হয়। মনোজাইগটিক টুইন অর্থাৎ যে সমস্ত যমজ বাচ্চা হুবহু এক রকম দেখতে হয়, আচার ব্যবহারেও খুব মিল থাকে তাদের। চেহারা ও স্বভাবে সম্পূর্ণ বিপরীধর্মী যমজ সন্তানও জন্মায় কখনো। তারা জন্মায় দুটি আলাদা ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনে। তারা বড় হয় আলাদা প্লাসেন্টার মাঝে। তাদের অ্যমনিওটিক স্যাক, কোরিয়নিক স্যাক নামের নিরাপত্তামূলক আবরণ গুলিও আলাদা হয়। ফলে একই পরিবারের সাধারণ দুটি বাচ্চার মধ্যে যেমন মিল ও অমিলের মিশেল থাকে, এদের মধ্যেও সে রকম হয়। এদের বলে ফ্র্যাটেরনাল টুইন।

বয়সের সঙ্গে বাড়ে সম্ভাবনা
বেশি বয়সে সন্তানধারণ করলে যমজ সন্তান জন্মের সম্ভাবনা বাড়ে। বিশেষ করে ৩৫ বা ৪০ বছরের বেশি হলে। মেয়েরা যত রজোনিবৃত্তির দিকে এগিয়ে যান, ততই তাদের শরীরে কিছু হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে শুরু করে। এবং তাতেই বাড়ে যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা। স্বাভাবিকভাবে, যত বেশি ডিম্বাণু, তত বেশি সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা। দুটো তো বটেই, কখনো তিনটে সন্তানও জন্ম নিতে পারে।

বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা করালে
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ওবেসিটির সমস্যা থাকলেও যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষত যাদের বডি মাস ইনডেস্ক (বিএমআই) ৩০-এর উপর, তাদের যমজ সন্তান হতে পারে। মূলত: বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় যে সমস্ত ওষুধ ব্যবহার করা হয় তারা প্রতি সাইকল এ ডিম্বাণুর সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়।

গায়ের রঙ শ্যাম বর্ণের হলে
২০১৮ সালে আমেরিকার জন্মহারের সমীক্ষা অনুযায়ী, গায়ের রং চাপা হলে যমজ সন্তানধারণের সম্ভাবনা বেশি থাকে।

আগে যদি সন্তান জন্মে থাকে
একটি বা দুটি সন্তান আগে জন্মে থাকলে পরের গর্ভসঞ্চার এ যমজ সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে। এছাড়াও পরিবারে কোনও যমজ থাকলে, আপনারও যমজ হতে পারে। অনেক মহিলার শরীরে দুই বা তার বেশি সংখ্যক ডিম্বাণু উৎপাদন হয়। একে বলে হাইপার ওভিউলেশন। এই প্রবণতা মেয়েদের মধ্যে মায়ের ডিএনএ থেকে আসতে পারে। এমন ক্ষেত্রে যমজ সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে।
উচ্চতা ও ওজন
শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে আপনি যত লম্বা হবেন, যত ওজন বেশি হবে আপনার, তত বেশি সম্ভাবনা যমজ সন্তান জন্মানোর। বেশি না, মোটে ৫ ফিট ৪ ইঞ্চির বেশি উচ্চতা ও একটুখানি ওজন বেশি থাকলেই আপনি এই সৌভাগ্যের অধিকারী হতে পারেন। গবেষকদের মতে, উচ্চতার জন্য দায়ী কিছু হরমোন যমজ সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

গর্ভাবস্থায় ঝুঁকি বেশি
যদি কোন মা জানতে পারেন যে, তার গর্ভে যমজ শিশু রয়েছে তাহলে তাকে অবশ্যই বেশি বেশি বিশ্রামে থাকতে হবে। যমজ শিশুর কোন নারী যমজ শিশু নিয়ে গর্ভধারণ করলে গর্ভাবস্থায় এবং সন্তান জন্ম দেয়ার সময় তার ঝুঁকি সাধারণ গর্ভাবস্থার তুলনায় অনেক বেশি থাকে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। যেকোন টুইন প্রেগনেন্সিকেই তারা হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি বা উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন গর্ভাবস্থা বলে ধরে থাকেন। এছাড়া গর্ভে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যাওয়া, গর্ভে থাকা অবস্থায় একটি বাচ্চা বেঁচে থাকলেও আরেকটি মারা যাওয়ার মতো গুরুতর অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। মায়ের দিক থেকে গর্ভধারণ করার কারণে যেসব শারীরিক সমস্যা যেমন বমি হওয়া, মাথা ঘোরা এগুলো অনেক বেশি হবে।
এখন অনেকেই বেশি বয়সে মা হওয়ার হওয়ার পরিকল্পনা করেন। মহিলাদের বেশি বয়সে সন্তানধারণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। অনেককেই সন্তানধারণের জন্য আইভিএফ পদ্ধতির সাহায্য নিতে হয়। অনেকের আবার ধারণা, আইভিএফ মানেই নাকি যমজ সন্তানের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া। তবে কাদের যমজ সন্তান হবে, তা নির্ভর করে উপরের উল্লেখিত বিষয়ের উপর।

জমজ শিশু মডেল : নারমিন ও নুরাইয়া

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়