পররাষ্ট্রমন্ত্রী : সোমবার ২৮৫ বিজিপি সদস্যকে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

আগের সংবাদ

সবুজে বাঁচুন, সবুজে হাসুন

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সবুজ জীবনের রঙ, সবুজ প্রকৃতির রঙ। প্রকৃতি থেকে এই সবুজ যখন কমে যাবে, তখন জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়বে। সুতরাং ভালো থাকতে হলে প্রকৃতি রক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে জানালা খুললেই এক পশলা সুবাতাস আপনার দিনটাকেই সুন্দর করে দিতে পারে। কিন্তু আমাদের এই ইট-কাঠের নগরে তার সুযোগ কোথায়!

ইট কাঠের নাগরিক সভ্যতার শহরগুলো থেকে দ্রুতই হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ। তাই
শৌখিন মানুষরা তাদের ঘরবাড়িতে সবুজকে ধরে রাখার জন্য একান্ত নিজস্ব ভাবনা আর প্রচেষ্টায় আপন আপন বাড়ির ছাদে তৈরি করছে ছাদ বাগান। কিছু ফলগাছ বাড়ির ছাদে লাগানো যায় । অন্যদিকে সতেজ মন নিয়ে দিন শুরু করতে শোবার ঘরে গাছ রাখার বিকল্প নেই। পাশাপাশি গরমের এই কটা দিন শীতল পরশ পেতে ঘরের বারান্দায় একচিলতে সবুজের আয়োজন করা যেতে পারে, যাতে আসবে প্রশান্তির আমেজ।?প্রকৃতির সান্নিধ্যে শীতল পরিবেশে জমে উঠতে পারে সন্ধ্যাকালীন আড্ডা আর অতিথি অ্যাপায়ন। তাই সবুজ দেখার সতেজ অনুভূতির পাশাপাশি গৃহসজ্জায় বাড়তি সৌন্দর্য দিবে গাছ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ইনডোর প্ল্যান্ট আপনার শরীরের উপর রাখতে পারে বিভিন্ন ইতিবাচক প্রভাব। বাতাস পরিশোধন, মনকে ভালো রাখা, মানসিক চাপ কমানোসহ এর রয়েছে দারুন সব উপকারী গুণাগুণ।
লাকি ব্যাম্বু:
পানিতে ও মাটিতে বেঁচে থাকতে পারে এমন আরেকটি মজার গাছ হলো লাকি ব্যাম্বু। অনেকেই মনে করেন এই গাছের সঙ্গে আপনার ভাগ্য সম্পর্কিত, তার থেকেই লাকি ব্যাম্বু নাম। ভাগ্য বিষয়ে আমি নিশ্চিত না। তবে এই গাছ ভালো গাছের সব গুণাবলি বজায় রাখে। এই গাছ খুব সহজেই মারা যায় না। আর অনেক নার্সারিতে লাকি ব্যাম্বু খুব শৈল্পিকভাবে সাজিয়ে রাখা হয়। যতœ করতে পারবেন না এমন চিন্তা থাকলে কিনে ফেলুন লাকি ব্যাম্বু গাছ। বাড়িতে সহজেই এটি রাখা যাবে খাবার ঘরের আশেপাশে।

স্নেক প্ল্যান্ট
অনেকটা সাপের মতোই এই গাছের পাতার আকৃতি। শোবার ঘরে গাছটি রাখার একটি বিশেষ সুবিধা আছে। তা হলো, এটি রাতে অক্সিজেন ছাড়ে। মাথা ধরা, চোখে ব্যথার মতো একাধিক শারীরিক অস্বস্তি কমিয়ে আরামে ঘুমিয়ে পড়তে সাহায্য করে স্নেক প্ল্যান্ট। নাসার বিজ্ঞানীরা একটি সমীক্ষা করে দেখেছেন যে ঘরের ভেতর এই গাছ রাখলে তা নাইট্রিক অক্সাইড ও ফরমালডিহাইডের মতো ক্ষতিকারক গ্যাসকে শোষণ করে ঘরকে দূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। ঘরের পরিবেশ বিশুদ্ধ করে রাতের ঘুমটাও ভালো হওয়ার পেছনে হাত আছে এই গাছের।

স্পাইডার প্ল্যান্ট
ঘরোয়া গাছ স্পাইডার প্ল্যান্ট। এটি ঘরের বাতাস থেকে সহজেই ৯০ শতাংশ টক্সিন দূর করতে পারে। বাতাস থেকে অ্যালার্জি ও বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক খনিজ পরিষ্কার করে। যাদের ধূলিকণায় অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই গাছ শোবার ঘরে রাখা খুবই উপকারী।

তুলসী
তুলসী গাছের পাতা, বীজ, বাকল বা শিকড় কোনো কিছুই ফেলনা নয়। ঔষধি এই জ্বর, কাশি, সর্দি, মাথাব্যথা, অবসাদ প্রভৃতি দূর করে ভালো ঘুমের নিশ্চয়তা দেয়। গাছটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বেশ কার্যকরি।

জুঁই
যদিও সূর্যের আলোতে ভালো হয় হয়, তবু শোবার ঘরে যেখানে অল্প হলেও রোদ আসে, সেখানে রাখলেও হবে জুঁই। এর সুগন্ধ মন ভালো রাখে, মানসিক চাপ কমায় এবং ঘুম গভীর করতে সাহায্য করে। এর সুগন্ধি ঘরের বাতাসকেও সমৃদ্ধ করে। শোবার ঘরে সুগন্ধি জুঁই ফুলের গাছ রাখতে পারলে ঘুম ভালো হবে।

পিস লিলি
লিলি ফুল গাছটি বাতাস শুদ্ধ করতে পারে, ঘরে রাখাও শুভ। সাদা রং ঘর থেকে নেগেটিভ এনার্জি দূর করে ঘরের পরিবেশকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। নাসার বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পিস লিলি বাতাসের বেনজিন ও ফরমালডিহাইড দূর করে বাতাস পরিশুদ্ধ করে। আর তাই ঘুমটাও ভালো হয়।

এরিকা পাম
এটি প্রজাতির পামজাতীয় গাছ। গাছটি বিষাক্ত বাতাস পরিশোধন করে এবং বাতাস থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড দূর করে। তাই সহজে শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার উপযোগী পরিবেশ বজায় রাখে এরিকা পাম। এই গাছ সঠিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে অনবদ্য ভূমিকা পালন করে।
যারা ঠান্ডা বা সাইনাসের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের শোবার ঘরে এই গাছের উপস্থিতি খুবই উপকারী। কারণ, এটি বাতাসের অতিরিক্ত আর্দ্রতা কমায়।

অ্যালোভেরা
সারা রাত ধরে অক্সিজেন সরবরাহ করে দ্রুত মানসিক চাপ ও উৎকণ্ঠা কমিয়ে ঘুম নিশ্চিত করে অ্যালোভেরা। তাই শোবার ঘরের জন্য এই গাছ আদর্শ। পাশাপাশি
বহু যুগ ধরেই চিকিৎসা, ওষুধ তৈরি এবং রূপচর্চায় অ্যালোভেরার ব্যবহার হয়ে আসছে। নাসার গবেষণা অনুযায়ী, বায়ু পরিশোধক হিসেবেও সেরা গাছ অ্যালোভেরা।

ইংলিশ আইভি
শুধু বাগানের জন্য নয়, শোবার ঘরের জন্যও সেরা ইংলিশ আইভি। অক্সিজেন উৎপাদনের পাশাপাশি লতানো গাছ ইংলিশ আইভি বাতাসের ছাঁকনির কাজ করে।
বাতাসে ভেসে থাকা দূষিত বেনজিন, ফরমালডিহাইড, ট্রাইক্লোরোইথিলিন শুষে নেয়। ওই সব যৌগ স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর, যা মানবদেহে ঢুকে ক্যানসারের কোষ তৈরি করতে পারে।
আমেরিকান কলেজ অব অ্যালার্জি, অ্যাজমা ও ইমিউনোলজির গবেষকেরা জানিয়েছেন, ইংলিশ আইভি গাছ ৭৪ শতাংশ বায়ুদূষণ মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যে দূর করতে পারে।

প্রকৃতির রুদ্ররোষের প্রভাব টের পাচ্ছি যেন প্রতিনিয়তই। প্রকৃতিতে গাছ কমে যাচ্ছে বলেই দিন দিন দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। কিন্তু প্রত্যেকে যদি সচেতন হই, সবুজের এই ঘাটতি পূরণ হবে অতি সহজে।
দূষণরোধের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো বেশি বেশি গাছ লাগানো।

মডেল : স্বর্না

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়