প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর হতে হবে সুপ্রিম কোর্টকে : বিচারপতি বোরহান উদ্দিন

আগের সংবাদ

রাজাকারের পূর্ণাঙ্গ তালিকা মার্চেই

পরের সংবাদ

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ গ্যাস পানি বিদ্যুৎ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হোক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চন্দ্রবছর ঘুরে দ্বারপ্রান্তে মাহে রমজানুল মোবারক। পবিত্র রমজান মাসে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহের ব্যবস্থা এখন থেকেই নিতে হবে। সেহরি, ইফতার, তারাবিতে যেন লোডশেডিং না হয়। পরিচ্ছন্ন পানির সরবরাহ ওয়াসাকে করতে হবে। গ্রীষ্মের খরা, রৌদ্র ও তাপ ইতোমধ্যেই আবহাওয়া অফিস বার্তার মাধ্যমে জানান দিয়েছে। এই মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টির প্রকোপ তেমন বৃদ্ধি পাবে না। রমজান মাসে রোদের প্রচণ্ড তাপ পড়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তাই দেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রিয় মুসল্লি যেন নির্বিঘেœ রোজা, নামাজ, ইবাদত-বন্দেগি ইচ্ছামতো নির্বিঘেœ মনের খুশিতে আদায় করতে পারেন সেই জন্য বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্নভাবে থাকা চাই। সঙ্গে সঙ্গে পানি, গ্যাস, বিদ্যুতের অপচয় ঘর থেকে অফিস-আদালত সবক্ষেত্রে সবার মধ্যে অপচয় পরিহার করতে হবে। অফিস-আদালতে দেখা যায় একেকজন সরকারি কর্মকর্তা একেকটি এসি ছেড়ে দিয়ে বসে থাকেন। একটি অফিসে অথবা অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠানে পাঁচ-সাতটি এসি ছেড়ে কর্মকর্তারা বসে আছেন। অন্যদিকে গ্রামের নিরীহ শ্রমিক, কৃষক, মেহনতি কর্মজীবী জনগণ একটি পাখা চালানোর মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। এই ধরনের বৈষম্য দূর করা দরকার। বিদ্যুৎ অপচয়, অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, বাড়িঘর, অফিস-আদালতে গ্যাসের ব্যবহার অপচয় মুক্ত রাখা চাই।
রমজানে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ওয়াসাকে দিতে হবে। পবিত্র এই মাসে মুসল্লিরা ইফতার, সেহরির সময় বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন। সেই কারণে ওয়াসার লাইনে যেন পরিচ্ছন্ন ও খাওয়া ব্যবহার উপযোগী পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়। সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে মসজিদে তারাবি নামাজসহ ইবাদতের সময় পানি সরবরাহ, বিদ্যুতের চাহিদা যথাযথভাবে রাখা চাই।
রমজান মাসের ইবাদত-বন্দেগি নির্বিঘেœ পালন করার জন্য বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধ করতে হবে। সেহরি, ইফতার, তারাবি এসব সময়ে অবশ্যই বিদ্যুৎ, পানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় জনগণের সাহায্যকারী সব ধরনের প্রয়োজনীয় সেবা নির্বিঘœ ও নিশ্চিত করতে হবে। দেশের শহর-গ্রামের সব সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে রমজানুল মোবারকের সম্মানার্থে সব সেবা প্রতিষ্ঠানকে সচল-নির্বিঘœ রাখতে হবে। কোনো অবস্থায় লোডশেডিং, ইফতার, সেহরির সময় বিদ্যুতের আসা-যাওয়া বন্ধ করতে হবে। অফিস টাইমে রাস্তার যানজট কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রমজান মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার ঘোষণা এসেছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মচারী যথাসময়ে গন্তব্য স্থানে যাওয়া-আসার সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাস্তার যানজট নিয়ন্ত্রণে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। রাস্তার দুপাশে থামিয়ে রাখা সব ধরনের পরিবহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তার পাশে কোনো অবস্থায় যানবাহনকে দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না। স্টপিস ছাড়া যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রমজান মাসে সব ধরনের পেশার মানুষের জন্য বাজারমূল্য অবশ্যই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে হবে। সব পেশা-শ্রেণির মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। টিসিবিকে শহর, নগর, গ্রামে আরো জোরদার করতে হবে। রমজানের ফজিলত বরকত, মাগফিরাত, নাজাত প্রাপ্তির উদ্দেশ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করা দরকার। ব্যবসায়ীদের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের কথা মাথায় রেখে ভেজালমুক্ত দ্রব্য সরবরাহ অধিক মূল্য উপার্জন থেকে হাত গুটিয়ে নিতে হবে। সারা দুনিয়ার রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাস হলেও বাংলাদেশের ব্যবসায় এর বিপরীত অবস্থা। সরকারকে দেশের খেটে-খাওয়া মানুষের কথা মাথায় রেখে সব ধরনের নিত্যপণ্য সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। রমজান যেন সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির মাস না হয়। জনগণের সব পণ্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা চাই। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস অপচয় রোধ করে জনগণকে মিতব্যয়ী হওয়ার মাধ্যমে শৃঙ্খলায় থাকা চাই।
মাহমুদুল হক আনসারী : সংগঠক, গবেষক, চট্টগ্রাম।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়