নামাজ পড়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা : গাজীপুর

আগের সংবাদ

মাঝপথে কাজ বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে বরিশালের বাসিন্দারা : সড়ক নয় যেন ধুলার রাজ্য

পরের সংবাদ

ঢাকায় আবার মার্কিনিদের চাঁদের হাট : সম্পর্কে এবার নতুন আলো ছড়াবে তো?

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গত শনিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০ সদস্যের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধি দল ৩ দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন। এই প্রতিনিধি দলে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশেষ সহকারী ও দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জ্যেষ্ঠ পরিচালক এইলিন লাউবাখের, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার, স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অফ সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স ও পারমাণবিক নিরাপত্তা ও অপ্রসারণের উপপরিচালক হেইলি বেকার, ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) এশিয়ার জন্য ব্যুরোর সহকারী প্রশাসক আল্লা কামিনস সহো মোট ১০ জন এই সফরে এসেছেন। তাদের সঙ্গে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের প্রধান পিটার ডি হাস এবং দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হেলেন লাফেভ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিভিন্ন সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দল বেশ কর্মব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মিশন এক রকম ছিল না। প্রত্যেকে নিজের মিশন অনুযায়ী সাক্ষাৎ দিয়েছেন, করেছেনও। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসার ক’দিন আগেই বাংলাদেশ মার্কিন যৌথ সামরিক বিমান মহড়া অনুষ্ঠিত হয়ে গেল সে খবর অবশ্য আমাদের মিডিয়াতে তেমন আসেনি। তবে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে নিয়ে বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থের এবং নীতি-কৌশলের টানাটানি চলছিল, এখনো সমাপ্ত হয়নি। তবে শুনতে কিছুটা বেখাপ্পা তো লাগবেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ও নীতি-কৌশলের টানাটানি হতে পারে এটি তো কয়েক যুগ আগে এ দেশের মানুষ কেন, দুনিয়ার কোনো দেশের মানুষই বিশ্বাস করার কথা ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের সৌভাগ্য যে বাংলাদেশ এখন ভূ-রাজনৈতিক এবং ভূ-অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় এখন বিশ্ব দরবারে পরম শক্তিশালী সব দেশের কাছেই একটি বিশেষ মর্যাদা লাভ করতে পেরেছে। ফলে সব দেশই বাংলাদেশকে নিয়ে বিশেষ বিশেষ নীতি-কৌশলে বাংলাদেশকে পাশে নিয়ে অগ্রসর হতে চাচ্ছে। বাংলাদেশ সবার সঙ্গে চলতে কোনো আপত্তি নেই তবে একক কোনো শক্তিধর রাষ্ট্রের অধীনে থেকে অন্যদের সঙ্গে বৈরিতা দেখানোর ইচ্ছে বাংলাদেশের নেই। বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা নিয়ে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয় নীতিতে থাকতে চায়, বঙ্গবন্ধুর প্রবর্তিত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে অবিচল থাকতে চায়। তবে কোনো কোনো রাষ্ট্রের এটি খুব বেশি পছন্দের নয়। তারা তাদের সঙ্গে জোট বাধতে আমাদের চায়। আমরা তাদের জোট নয় বন্ধুত্ব চাই, উন্নয়নের অংশীদারিত্ব চাই, কিন্তু বড় বড় দেশগুলো তাতে সন্তুষ্ট নয়। ঠিক সেকারণেই তাদের সঙ্গে আমাদের কিছুটা মন কষাকষি চলে। আমাদের তাতে কিছুটা সমস্যা হয় তারপরও আমরা আমাদের নীতিতে অবিচল থাকতে চাই। কিন্তু বিপত্তিটা হলো আমাদের দেশেই কেউ কেউ আছেন যারা ক্ষমতার লোভে বিশেষ কোনো পরাশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করতে দ্বিধাবোধ করেন না।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনের বেশ আগে থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একের পর এক বহু প্রতিনিধি দল ঢাকায় তসরিফ এনেছিলেন। তখনো ঢাকায় যেন মার্কিনিদের চাঁদের হাট বসেছিল। এদল, ওদল, সরকার এবং তথাকথিত নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠকে তারা বসেছিলেন। নাগরিক সমাজের অনেকেই মার্কিন কোনো কোনো প্রতিনিধি দলের কাছে দেশের নির্বাচন নিয়ে ভাইভা পরীক্ষা দিয়েছিলেন। মানবাধিকার, ভোটাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ইত্যাদি নিয়েও তাদের নানা জনের নানা কথা শোনানো হয়েছে। মার্কিন বিশেষজ্ঞরা সেসব কথা শুনেছেন কিন্তু মূল্যায়নের নম্বরটি কাউকে বলে যাননি। যাওয়ার আগে কিংবা পরে দেশে গিয়ে বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায়, যুক্তরাষ্ট্র কোনো বিশেষ দলের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেবে না’। আসলে যুক্তরাষ্ট্র এত প্রতিনিধি দল ঢাকায় প্রেরণের কারণ কি ছিল তা যুক্তরাষ্ট্র কাউকে বুঝতে দেয়নি, দেয়ার কথাও নয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল ঘন ঘন ঢাকায় তাদের আসা যাওয়ার মধ্য দিয়ে ঢাকার রাজনীতি, কূটনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতিতে তাদের কতটুকু প্রভাব বিস্তার করা প্রয়োজন, কীভাবে তা করা হবে সেসব বিষয়ে তাদের কিছু পর্যবেক্ষণ যেমন দরকার একইভাবে অন্য পরাশক্তিরা যেন ঢাকায় খুব বেশি আসা যাওয়া করতে না পারে সে ব্যাপারেও তাদের একটা কৌশল ছিল। কৌশল অনুযায়ী তাদের আসা যাওয়া, কথা বলা, সবাইকে ব্যস্ত রাখা, আবার কাউকে কাউকে আশাবাদী করা, রোহিঙ্গাদের কাছে ছুটে যাওয়ার মধ্যেও ছিল তাদের নিজস্ব কৌশল অনুযায়ী বাংলাদেশে নির্বাচন-পূর্ববর্তী অবস্থায় নানা আশ্বাস আর বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালানো। বাংলাদেশে সরকারবিরোধীরা তখন মার্কিনিদের সঙ্গ পেতে দারুণভাবে মুখিয়ে থাকত। সুযোগ পেলেই নানা বিষয়ে নালিশ করে আসত। কি কথা তাদের সঙ্গে হতো সেকথা কেবল তারাই জানে। তবে বোঝা গিয়েছিল যে বিরোধীরা ধরেই নিয়েছিল এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছেড়ে কথা বলেননি। তাতেই অনেকে ধরে নিয়েছিলেন যে জো বাইডেন অন্তত এবার শেখ হাসিনাকে নির্বাচনে জয় লাভ করে আসতে দিতে চান না। বাংলাদেশের রাজনীতির বাতাসে তখন একদিকে শঙ্কা অন্যদিকে উচ্ছ¡াস ও নমনীয়তা দেখা যাচ্ছিল। নির্বাচন নিয়ে তাই অনেকের মধ্যেই নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা পারদের মতো কেবলই ঊর্ধ্বমুখী উঠছিল। এরপর নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই ঢাকায় জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা পরিচয়ে মিয়ান আফরিনের আবির্ভাব ঘটেছিল। বিএনপির জনসভা থেকে জো বাইডেনের নামে স্যাংশন জারির ঘোষণা দিতেই তার হাজির হওয়া। ২৮ তারিখের মহাসমাবেশ থেকে সেই ঘোষণা কোনোভাবে দেয়া সক্ষম হলে কেল্লাফতে হতো এমনটিই উদ্যোক্তাদের হিসাব-নিকাশ এ ছিল। কিন্তু সেই মহাসমাবেশ শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত হতে পারল না। জো বাইডেনের ভুয়া উপদেষ্টা সেজে আসা মিয়ান ভুয়া স্যাংশন জারি করতে পারলেন না, যারা তাকে দিয়ে এই অপকর্মটি করাতে চেয়েছিল তাদের উদ্দেশ্যও সার্থক হলো না। মিয়ান এখন কি জেলের ভাত খাচ্ছেন নাকি বের হয়ে এসেছেন তা আর জানা গেল না তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি এবং যুগপৎ আন্দোলনকারীরা অংশ না নিয়ে বর্জন ও প্রতিহত করতে হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ, অগ্নিসংযোগ, বাস ও রেলে যাত্রীদের পুড়িয়ে মারার চেষ্টা কম করেনি। বর্জনকারীরা চেয়েছিল এই নির্বাচনটি ভণ্ডুল করতে, তাতে ব্যর্থ হলে নির্বাচনটি যেন বিতর্কিত হয় তাহলেই পশ্চিমারা হয়তো নির্বাচনটিকে মেনে নেবে না, সরকারকেও ক্ষমতায় বসতে দেবে না। কিন্তু বিরোধীদের এসব চিন্তা ভাবনা, পরিকল্পনা মোটেও তাদের কৌশল অনুযায়ী হয়নি। নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করল, সরকার গঠন করল। বিরোধীরা বর্জন প্রতিহত, অবরোধ, অসহযোগ করেও যখন নির্বাচন বানচাল করতে পারেনি তখন বলা হলো যে জনগণ তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নির্বাচনে ভোট দেয়নি, সরকার একতরফা নির্বাচন করেছে। এসব তারা নির্বাচনের পর থেকে ক্রমাগত প্রচার চালাতে থাকে। অন্যদিকে বিভিন্ন দেশ শেখ হাসিনা সরকারকে অভিনন্দন জানাতে থাকে। অন্যদিকে পিটার ডি হাস নবগঠিত শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাজ করার অভিপ্রায়ের কথা জানিয়ে এসেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও একই কথা কয়েকবার উচ্চারিত হলো। তারপরও বিরোধীরা জো বাইডেনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। কিন্তু ৪ ফেব্রুয়ারিতে জো বাইডেন শেখ হাসিনাকে পত্র লিখে দুদেশের মধ্যে যোগাযোগ, সম্পর্ক এবং সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইউরোপের দেশগুলোও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করার ইচ্ছা ব্যক্ত করে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে পত্র লেখেন। নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একের পর এক প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসে সব পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছেন, শুনেছেনও। কিন্তু কোনো পক্ষকেই তারা নির্বাচনে বিজয়ী করে আনার মিশন-ভিশন নিয়ে আসেননি, প্রতিশ্রæতিও দেননি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেখেছে তাদের স্বার্থ। বাংলাদেশে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, সামরিক অস্ত্র কেনা, বোয়িং বিমান, সমুদ্রে তেল গ্যাসের অনুসন্ধানের কাজ পাওয়া এবং এই অঞ্চলে চীন, রাশিয়ার মতো পরাশক্তি যেন প্রবেশ করতে না পারে, ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলেও যেন এদের প্রভাব বিস্তার লাভ না করে সেসবই নিশ্চিত করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। ৪ ফেব্রুয়ারির পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন সরকার এবং বিরোধী দলের সঙ্গে আবার কথা বলার উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই লক্ষেই তাদের আগমন। শনিবার গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে তিন সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার, বাকি দুই সদস্য হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ সহকারী আইলিন লাউবাকার, ইউএসএইড সহকারী প্রশাসক ও এশিয়া ব্যুরো মাইকেল শিফার। বৈঠকে পিটার হাসও ছিলেন। সংবাদ কর্মীরা বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে আমির খসরু বলেন তেমন কোনো কথাই হয়নি। শুধু সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়েছে। তবে তারা মার্কিন প্রতিনিধিদের হাতে একটি অভিযোগের ফাইল দিয়ে এসেছেন। প্রতিনিধি দল ঢাকায় সরকারবিরোধী কয়েকজন ডানঘরানার সুশীল ব্যক্তিকে সাক্ষাৎ দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি মিশন প্রধানের বাস ভবনে। রবিবার মার্কিন প্রতিনিধিরা ভাগ ভাগ হয়ে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী সঙ্গে প্রতিনিধি দলের পৃথক পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাবের হোসেন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ উৎপাদনে পর্যায়ক্রমে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে যাওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী নানা যুদ্ধ এবং বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নানা দিকগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনায় র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফেরানোর বিষয়টিও প্রাধান্য পেয়েছে’। তিনি আরো জানিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জো বাইডেনের দেওয়া পত্রের উত্তর দিয়েছেন। প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা বিষয় নিয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সরকারকে অবহিত করেন। এছাড়া দুদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরা হয়। মূলত মার্কিন প্রতিনিধি দল নতুন সরকারের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থে কাজ করার বিষয়টি তুলে ধরে। অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছে। তাদের উপস্থিতি বিরোধীদের হয়তো ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস জোগাতে পারে। আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং বিরোধী দল উভয়-পক্ষকেই সন্তুষ্ট ও হাতে রাখার অভিনয়টি করে গেছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর তাদের নজরদারিত্ব আগামী দিনগুলোতে কীভাবে বজায় রাখা যাবে সেসব ধারণা পাওয়ার জন্যই এই সফরটিকে তারা গুরুত্ব দিয়েছেন। নিকট ভবিষ্যতে আরো অনেকেই আসা যাওয়া করবেন। এ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে সুতরাং সে বিষয় টিকে মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার নীতি ও কৌশল নিয়েই অগ্রসর হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়