ওয়ারীতে আগুন : ৯৯৯-এ কল পেয়ে উদ্ধার ৮০ জন

আগের সংবাদ

নির্বাচন পরবর্তী বোঝাপড়া

পরের সংবাদ

কোথায় আছেন জনপ্রিয় নায়িকারা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তারা একসময় দ্যুতি ছড়িয়েছেন রূপালি পর্দায়। ছিলেন ঢালিউডের জ¦লজ¦লে তারকা। এখন কাউকেই আর সিনেমায়
দেখা যায় না। শুধু অভিনয় নয়, তারা ছেড়েছেন দেশের মাটিও। কেউ কেউ দেশে থাকলেও রয়েছেন
লোকচক্ষুর অন্তরালে। দর্শক-জনতা কৌতূহলী, কোথায় কেমন আছেন অভিনয়কে বিদায় জানানো প্রিয় মুখের দল।
এমন কয়েকজন তারকার সন্ধান দিচ্ছে ‘মেলা’

শাবানা থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে
ঢালিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন শাবানা। ষাট থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত সমান জনপ্রিয়তায় কাজ করেছেন তিনি। আজিজুর রহমানের হাত ধরে চিত্রজগতে অভিষেক শাবানার। চলচ্চিত্রকার এহতেশাম ১৯৬৭ সালে রতœা পাল্টে শাবানা নামে ‘চকোরী’ চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করালেন তাকে। পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় ও দুই ডজন চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন তিনি। ১১ বার জাতীয় চলচ্চিত্রসহ বাচসাস এবং অন্যান্য সংগঠনের অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে অভিনয় ছেড়ে সপরিবারে স্বেচ্ছায় ঠাঁই নিলেন আমেরিকায়। শাবানা অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র হচ্ছে ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’। দুই কন্যা ও এক ছেলে সন্তানের জননী শাবানা। গত বছর দেশে এসেছিলেন তিনি আজীবন সম্মাননা পুরস্কার নিতে।

সপরিবারে কলকাতায় অঞ্জু ঘোষ
চলচ্চিত্র নির্মাতা এফ কবির চৌধুরী ১৯৮২ সালে অঞ্জু ঘোষকে চলচ্চিত্রে আনেন। প্রথম ছবি ‘সওদাগর’ হিট হওয়ার পর এফ কবির চৌধুরী অঞ্জুকে নিয়ে আরো বানালেন নরম গরম, আবেহায়াত, পদ্মাবতীর মতো চলচ্চিত্র। এরপর অঞ্জু অভিনয় করেন বড় ভালো লোক ছিল, আশীর্বাদ, রাই বিনোদিনী, আয়না বিবির পালা, আশা নিরাশা, নবাব সিরাজউদ্দৌলা ইত্যাদি চলচ্চিত্রে। ১৯৮৯ সালে এল অঞ্জুর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র ‘বেদের মেয়ে জোছনা’। ঢালিউডের ইতিহাসে এর ব্যবসায়িক রেকর্ড এখনো কোনো চলচ্চিত্র অতিক্রম করতে পারেনি। ১৯৯৫ সালে ‘নেশা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছিলেন অঞ্জু। কিন্তু পড়ন্ত ক্যারিয়ারের এই সময়ে নানাভাবে হয়রানির শিকার হন তিনি। ১৯৯৬ সালে বাধ্য হয়ে সপরিবারে কলকাতা চলে যান অঞ্জু ঘোষ। ২২ বছর পর ২০১৮ সালে একবার ঢাকায় আসেন অঞ্জু।

লন্ডনে থাকেন জয়শ্রী কবির
নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে অভিনয় ছেড়ে লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছিলেন সত্তরের দশকের অভিনেত্রী জয়শ্রী কবির, প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় অভিনয়ের বাইরে আছেন তিনি। ‘সূর্যকন্যা’, ‘সীমানা পেরিয়ে’-এর মতো দর্শকনন্দিত চলচ্চিত্রের এ অভিনেত্রী একমাত্র ছেলে লেনিন সৌরভ কবিরকে নিয়ে লন্ডনেই বসবাস করছেন। জয়শ্রী কবির নিজে যুক্ত আছেন শিক্ষকতা পেশায়। কলকাতার মেয়ে জয়শ্রী রায় অভিনয় করতে ঢাকায় এসে গুণী পরিচালক আলমগীর কবিরকে বিয়ে করে ঢাকায় থিতু হন। বিয়ের পর তিনি জয়শ্রী কবির নামে পরিচিতি পান। আলমগীর কবিরের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের পর তিনি কলকাতাতে ফিরে যান। নব্বই দশকের শুরুতে ছেলেকে নিয়ে লন্ডনে চলে যান জয়শ্রী। ১৯৬৮ সালে তিনি ‘মিস ক্যালকাটা’ উপাধি ও ১৯৭৫ সালে ‘সূর্য কন্যা’ ছবিতে অভিনয় করে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।

আড়ালে অলিভিয়া
সত্তরের দশকে চলচ্চিত্রে আসা জনপ্রিয় নায়িকা অলিভিয়া দীর্ঘদিন ধরে লোকচক্ষুর অন্তরালে আছেন। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় তার সর্বশেষ অভিনীত চলচ্চিত্র ‘দুশমনি’। প্রথম স্বামী চিত্রপরিচালক এস এম শফির মৃত্যুর পর চলচ্চিত্র ত্যাগ করেন অলিভিয়া। এরপর বিয়ে করেন ফতুল্লার মুনলাইট টেক্সটাইল মিলের কর্ণধার হাসানকে। বসবাস করছেন বনানীর ডিওএসএইচের বাড়িতে। ১৯৭২ সালে চিত্রনির্মাতা এস এম শফি তার ‘ছন্দ হারিয়ে গেল’ ছবিতে প্রথম ব্রেক দেন অলিভিয়াকে। প্রায় ৫৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এই বাণিজ্যিক ছবির ব্যস্ত অভিনেত্রী। তিনি নায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন।

লন্ডনে সংসার সামলাচ্ছেন সোনিয়া
ঢালিউডে নব্বই দশকের ব্যস্ত নায়িকাদের কাতারে ছিলেন সোনিয়া। পঞ্চাশেরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। সালমান শাহ, বাপ্পারাজ, রিয়াজসহ প্রথম সারির নায়কদের নায়িকা হয়েও অভিনয় করেছেন সোনিয়া। কিন্তু প্রায় ১০ বছর ধরে সব ধরনের অভিনয়ের বাইরে তিনি এখন লন্ডন প্রবাসী। সংসার ধর্মেই নিয়োজিত হয়েছেন। কয়েক বছর আগে বিয়ে করে প্রবাসী স্বামীর হাত ধরে লন্ডনে পাড়ি দিয়েছিলেন। সোনিয়া তিন সন্তানের জননী। ১৯৯১ সালে ‘মাস্তান রাজা’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সোনিয়ার চলচ্চিত্র অভিনয় শুরু। সোনিয়া সর্বশেষ অভিনয় করেন ‘শুভ বিবাহ’ ছবিতে।

সুইডেনে স্থায়ী তামান্না
১৯৯৫ সালে আফজাল হোসেনের নির্দেশনায় স্টারশিপের একটি বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করার মধ্য দিয়ে মিডিয়াতে অভিষেক ঘটে চিত্রনায়িকা তামান্নার। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সাইফুল আজম কাশেম পরিচালিত ‘ত্যাজ্যপুত্র’। এতে তার নায়ক ছিলেন বাপ্পারাজ। ‘ত্যাজ্যপুত্র’ ছবির শুটিং চলাকালেই তিনি কাজ করেন শহিদুল ইসলাম খোকন পরিচালিত ‘ভণ্ড’ ছবিতে। কুংফু হিরো রুবেলের বিপরীতে এ ছবিটি ছিল সুপার-ডুপার হিট। এতে আলো ছড়ান তামান্না। তার অভিনীত শেষ ছবি মঈন বিশ্বাসের ‘পাগল তোর জন্য রে’। ২০১৩ সালে মুক্তি পায় এটি। কিন্তু হঠাৎই দেশ ছেড়ে, অভিনয় ছেড়ে সুইডেনে পাড়ি জমান নায়িকা। স্বামী নিয়ে স্থায়ীভাবে সেখানেই বসবাস করছেন।
কলকাতায় সুনেত্রা
ঢালিউডের ইতিহাসে তার নাম থেকে যাবে কিছু হিট ছবির নায়িকা হিসেবে। ১৯৯০ সালে মুক্তি পাওয়া দেলোয়ার ঝাহান ঝন্টু পরিচালিত ‘পালকী’ ছবিতে তার উপস্থিতি ছিল ব্যতিক্রম। ফারুক, সোহেল রানা, আলমগীর, ওয়াসিম, ইলিয়াস কাঞ্চন, জাফর ইকবাল, নাদিম (পাকিস্তান), মান্নাদের বিপরীতে অভিনয় করেছেন সুনেত্রা। একসময় পাকিস্তানে থাকলেও বর্তমানে বাবার ভিটা ভারতের কলকাতাতেই রয়েছেন সুনেত্রা। নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে ঢাকাই ছবি থেকে আড়ালে চলে যান সুনেত্রা। জাফর ইকবালের বিপরীতে ‘ঘর ভাঙা ঘর’ ছবিটিকেই সুনেত্রা অভিনীত সর্বশেষ বাংলাদেশি ছবি বলে ধরা হয়। এটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৯২ সালে। এরপর কিছুদিন কাজ করেন কলকাতার ছবিতে। ১৯৯৯ সালে সেখানে সর্বশেষ সুনেত্রা অভিনীত ‘দানব’ ছবিটি মুক্তি পায়। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠা পেলেও সুনেত্রা ছিলেন কলকাতার মেয়ে।

প্রবাসে ইরিন জামান
ইরিন জামান অভিনয় জগতে আসেন সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘অনন্ত ভালোবাসা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ওই ছবিতে অভিনয় করে আলোচিত হয়েছিলেন তিনি। এরপর বেশ কয়েকটি ছবিতে তাকে দেখা গেলেও নজর কাড়তে পারেননি। ‘অনন্ত ভালোবাসা’ ছবির মাধ্যমে অভিষেক হয়েছিল সুপারস্টার শাকিব খানেরও। শাকিব রয়ে গেলেও হারিয়ে গেছেন ইরিন। ইরিনের অন্য একটি পরিচয় হলো তিনি চিত্রনায়িকা মৌসুমীর ছোট বোন। অভিনয়ের পাশাপাশি গায়িকা হিসেবে পরিচিতি আছে ইরিন জামানের। ২০১৪ সালের এপ্রিলে ‘মধুরাত’ এবং ‘তোমায় দেখব ছুঁয়ে’ নামের দুটি অ্যালবাম মুক্তি পায় তার। এরপর থেকে খবরে নেই এই নায়িকা-গায়িকার। স্বামী-সন্তান নিয়ে থিতু হয়েছেন প্রবাসে।

আমেরিকায় রুমানা
পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন করতে একবার দেশে এসেছিলেন রুমানা খান। তারপর অনেকেই তাকে ঈদ নাটকে অভিনয়ের কথাও বলেন। কিন্তু রুমানার অভিনয়ে আর ফেরার কোনোই আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছিলেন। রুমানা সর্বশেষ ২০১৪ সালে ‘যত দূরে যাবে বন্ধু’ নাটকে অভিনয় করেন। এরপর তাকে আর চলচ্চিত্রে কিংবা নাটকে অভিনয় করতে দেখা যায়নি। চলচ্চিত্রে রুমানার যাত্রা শুরু হয় তৌকীর আহমেদের ‘জয়যাত্রা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর ২০০৮ সালে পুরোদমে শুরু করেন পিএ কাজলের ‘এক টাকার বউ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। বর্তমানে আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়