আশুলিয়ায় ফার্নিচার গুদামে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৩

আগের সংবাদ

বাতাসে আগুনের হলকা!

পরের সংবাদ

‘মহানায়িকা’ সুচিত্রা সেন : কৌতূহলের রেশ কাটেনি এখনো

প্রকাশিত: এপ্রিল ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

‘মহানায়িকা’ মানেই বাঙালির চোখে যিনি ভেসে ওঠেন, তিনি সুচিত্রা সেন। বাংলা সিনেমায় সৌন্দর্য, হাসি, অভিনয় সব কিছুর নিরিখে অভিনেত্রী হিসেবে তিনিই এখনো মাপকাঠি। পর্দার বাইরে তার রহস্যময় জীবনও মানুষকে কৌতূহলী করেছিল। সেই কৌতূহলের রেশ কাটেনি এখনো। যার রূপে মোহিত আপামর বাঙালি। সেই ১৫ বছরে বিয়ে হয়ে গিয়েছিল আচমকাই। স্কুলে ভর্তির পর কৃষ্ণা হয়ে যান রমা। আর রমা পরবর্তীতে বিশ্বময় পরিচিতি পান সুচিত্রা সেন হিসেবে। এমন এক ব্যক্তিত্ব এত বছর পরও যাকে নিয়ে আগ্রহ কমেনি মানুষের মধ্যে। শেষ বয়সে যদিও নিজেকে অন্তরালে রাখাই পছন্দ ছিল তার। কেন তিনি নিজেকে অন্তরালে রাখতেন সে কারণ অজানা। লাইমলাইট পছন্দ ছিল না তার, পছন্দ ছিল না অহেতুক চর্চা। কে জানত পাবনায় বেড়ে ওঠা সেই রমা দাশগুপ্ত একদিন এই নামকে ছাড়িয়ে সুচিত্রা সেন নামে দুই বাংলায় দাপিয়ে বেড়াবেন। নিজের প্রতিভা দিয়ে জয় করে নেবেন সবার মন। বাংলা সিনেমার আইকনিক জুটি উত্তম-সুচিত্রা। এই জুটির প্রথম ছবি ‘সাড়ে চুয়াত্তর’; মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৩ সালে। তারা একসঙ্গে ৩১টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। আন্তর্জাতিক আঙিনায় পুরস্কার পাওয়া প্রথম বাঙালি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। ১৯৬৩ সালে ‘মস্কো চলচ্চিত্র উৎসব’-এ তিনি পুরস্কার পেয়েছিলেন ‘সাত পাকে বাঁধা’ ছবির জন্য। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি ‘দেবদাস’। এই উপন্যাস অবলম্বনে বলিউডে কয়েকটি ছবি হয়েছে। তবে প্রথমবার হিন্দি সিনেমায় ‘দেবদাস’র পার্বতী বা পারো হয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। এটি তার অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবিও বটে। সুচিত্রা সেনের নামের পাশে বিতর্কও রয়েছে। তার অভিনীত ‘আন্ধি’ ছবি মুক্তির পর গুজরাটে নিষিদ্ধ ছিল। এই ছবিতে সুচিত্রার সাজসজ্জা ইন্দিরা গান্ধীর মতো ছিল। ছবির কয়েকটি দৃশ্য নিয়ে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে স্বেচ্ছায় অন্তরালে চলে যান সুচিত্রা সেন। এরপর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মাত্র দুবার জনসমক্ষে এসেছিলেন তিনি। প্রথমবার ১৯৮০ সালে উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর, আর দ্বিতীয়বার ১৯৮৯ সালে তার আধ্যাত্মিক গুরু ভরত মহারাজের মৃত্যুর পর। ক্যারিয়ারে মাত্র একটি সিনেমায় দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা সেন। সেটার নাম ‘উত্তর ফাল্গুনী’। এতে যৌনকর্মী পান্নাবাই ও তার কন্যা আইনজীবী সুপর্ণার ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল অভিনেত্রীকে। অস্কারজয়ী পরিচালক সত্যজিৎ রায় ‘চৌধুরানী’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। ব্যস্ততার জন্য সময় দিতে না পারায় কাজ করতে পারেননি সুচিত্রা সেন। পরে চলচ্চিত্রটি নির্মাণই করেননি সত্যজিৎ। সুচিত্রা সেন অভিনীত বাংলা সিনেমার সংখ্যা ৫২, পাশাপাশি ৭টি হিন্দি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন। ২০০৫ সালে অভিনেত্রীকে ভারতের সিনেমায় সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার’-এ ভূষিত করা হয়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী দিল্লিতে গিয়ে জনসমক্ষে পুরস্কারটি নিতে হবে। কিন্তু তিনি জনসমক্ষে আসতে চাননি। সুচিত্রা সেনই একমাত্র ভারতীয় অভিনেত্রী, যিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার গ্রহণে অস্বীকার করেছিলেন। চলচ্চিত্র থেকে সরে দাঁড়ানোর পর স্বেচ্ছায় অন্তরালে চলে যান সুচিত্রা সেন। এরপর থেকে বেশির ভাগ সময় রামকৃষ্ণ মিশনে কেটেছে তার। নির্জন ও নিভৃত জীবনযাপন করায় হলিউড কিংবদন্তি গ্রেটা গার্বোর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তার মিল খুঁজেছেন অনেকে। সুচিত্রা সেন অভিনীত প্রথম বাংলা সিনেমা ‘শেষ কোথায়’ আজো মুক্তি পায়নি। ১৯৫২ সালে তৈরি হয়েছিল সিনেমাটি।

:: মেলা ডেস্ক

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়