পাঠ্যবই থেকে বিতর্কিত দুই লাইন প্রত্যাহারের আহ্বান চুন্নুর

আগের সংবাদ

চাঁদাবাজির লাইসেন্স ‘ইজারা’

পরের সংবাদ

বিশ্বজয়ী দাবাড়ুর গল্প

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৪ , ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ

বাবার স্বপ্ন ছেলেকে দাবাড়ু বানানো। স্বপ্ন পূরণে ছেলেকে দাবার সরঞ্জাম কিনে দিলেন বাবা। তবে গোড়াতেই হোঁচট খান তিনি। ছেলের দাবা খেলায় আগ্রহ নেই বিন্দুমাত্র। সব সরঞ্জাম ছুড়ে ফেলে দেয় ছেলে। সেই ছেলেটিই বর্তমানে বিশ্বদাবায় চ্যাম্পিয়ন। বলা হচ্ছিল বিশ্বে দাবায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনের কথা। দাবার সরঞ্জাম ছুড়ে দেয়া ছেলেটা কীভাবে দুনিয়ার সেরা দাবাড়ু হয়ে উঠল? দাবার প্রতি অনীহা দেখে একদিন তার বাবা তাকে বলেছিল, ‘দেখি তুমি তোমার বোনকে হারাতে পার কিনা’। কার্লসেনের মাথায় ঠিক তখনই প্রতিযোগিতার ঝড় খেলে যায়। শুরু হয় তার দাবার ঘুঁটি নিয়ে দুনিয়াজোড়া প্রতিযোগিতা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০০৪ সালে কোরাস দাবা টুর্নামেন্টে জয়ী হয়ে মাত্র ১৩ বছর বয়সেই গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব পেয়ে সংবাদের শিরোনাম হন কার্লসেন। ২০১৩ সালে ২২ বছর বয়সে প্রথম বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন নরওয়ের এই দাবাড়ু। তারপর থেকে এই খেতাব তারই দখলে রয়েছে। বাল্য বয়সে বোনের বিপক্ষে প্রতিযোগিতা দিয়ে যার দাবায় অভিষেক। সে একের পর এক ভেঙে চলেছেন দাবার সব রেকর্ড। ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘতম অপ্রতিরোধ্য ম্যাচ খেলেন নরওয়েজিয়ান এই ‘মোজার্ট অব চেস’। ২০২১ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে নেপমনিসির বিপক্ষে ইতিহাসের দীর্ঘতম ম্যাচটি খেলেন কার্লসেন। এছাড়াও তিনি ২০১৪ সালে দাবার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৮৮২ রেটিং অর্জন করেন। ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ দাবাড়– হিসেবে ২৮০০ রেটিংয়ের রেকর্ডটিও তার ঝুলিতে। এসব সঙ্গে অন্যরকম একটি রেকর্ডও যুক্ত আছে তার সঙ্গে। ২০১৮ সালে দাবার বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে রেকর্ড ৮টি ম্যাচ ড্র করেছেন তিনি। দাবার ইতিহাসে এমন কোনো শিরোপা আছে যেটি কার্লসেন নিজের করে নিতে পারেননি? এ পর্যন্ত পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার সঙ্গে কার্লসেনের মাথায় পাঁচবার উঠেছে ওয়ার্ল্ড র‌্যাপিড চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট এবং সাতবার ওয়ার্ল্ড ব্লিটজ চ্যাম্পিয়নশিপের মুকুট।
তবে ইতিহাসের এই কিংবদন্তিকে দাবার মাঠে দেখা নিয়ে সংশয় জেগেছিল। ২০২২ বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের পর হঠাৎ একদিন কার্লসেন ঘোষণা দেন, তিনি আর দাবা খেলবেন না। তিনি জানান, খেলার জন্য এখন আর সেই অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন না ‘এই ম্যাচ খেলার জন্য এখন আর সেই অনুপ্রেরণা পাচ্ছি না। মনে হয় না বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ থেকে আর কিছু পাওয়ার আছে। ঐতিহাসিক কারণে নিশ্চিতভাবেই এই ম্যাচের গুরুত্ব আছে। কিন্তু খেলার আর বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নেই।’ ছেলেবেলায় দাবার ঘুঁটি ছুড়ে ফেলে দেয়া মানুষটি আবার কেন বিরক্ত দাবার প্রতি- প্রশ্ন ছিল অনেকের। তবে সে প্রশ্নের উত্তর একটু ভিন্নভাবে দিয়েছেলেন কার্লসেন। গত বছর ভারতের প্রজ্ঞানন্দকে হারিয়ে শিরোপা নিজের করে নেন। নীরবে জানিয়ে দেন তিনি আছেন দাবার সঙ্গেই।

:: রিয়াজ উল্লাহ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়