সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার

আগের সংবাদ

নেতৃত্বে শীর্ষে সংখ্যায় কম

পরের সংবাদ

ওষুধ বাণিজ্যের সিন্ডিকেট আর কতকাল?

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সম্প্রতি বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের এক রিপোর্ট সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দেশে ওষুধের বাজারে গত ৬ মাসের মধ্যে ৩ দফায় মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে। কোনো কোনো মেডিসিনের মূল্য দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। আবার দেখা যাচ্ছে, কোনো কোনো মেডিসিনের মূল্য দ্বিগুণ হারকেও ছাড়িয়ে গেছে। যেভাবে খাদ্যপণ্যের দামও বাড়েনি। এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় খাবারের চেয়ে আসলে চিকিৎসা ব্যয় দ্বিগুণ ছাড়িয়ে কয়েকগুণ হারে বেড়ে গেছে। এভাবে ওষুধ-বাণিজ্যেও অদৃশ্য সিন্ডিকেটের তৎপরতা যথেষ্ট বেড়েছে। গত ১-২ মাসের মধ্যে ওষুধের দাম কী পরিমাণ বেড়েছে? আপনি যদি ১ বছর আগের ওষুধের দামের সঙ্গে বর্তমানে একই ওষুধের দামের পার্থক্য হিসাব করেন, তাহলে বিশাল একটা ব্যবধান খুঁজে পাবেন। বাংলাদেশে মূলত ৬টি প্রতিষ্ঠান আছে, যারা সবচেয়ে বেশি ওষুধ উৎপাদন করে। গত ২০২৩ সালে দেখা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠান ওষুধের দামে ১০ শতাংশ থেকে শুরু করে ৫০ শতাংশ এবং ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি করেছে।
ওষুধের দামের এই উল্লম্ফন গতিতে দিশাহারা দেশের সাধারণ মানুষ। যার প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ মানুষ বলছে- আমাদের দেশে আইন আছে কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই। বর্তমানে কিছু মানুষের কাছে অহরহ টাকা মজুত আছে এবং মানুষের কাছে টাকার অভাব নেই। এর মধ্যে আমরা যাদের কাছে টাকা নেই, তারা কিন্তু আসলে মানুষ না, কারণ আমরা ওষুধই খেতে পারব না। আমাদের ভাতই খেতে হবে। নিয়ম করে হয়তো ডাল-ভাত খেতে হবে, নয়তো পান্তা ভাত খেতে হবে। ধরেন, আপনি কাপড় কিনতে গেলেন। আপনার টাকা আছে, তাই আপনি আড়ং থেকে কিনলেন। আরেকজনের হয়তো অঢেল টাকা আছে, তাই সে হয়তো আরো একটু দামি কাপড় কিনল। আর আমরা যাদের টাকা নেই, তারা কোনোরকমে নরমাল একটা কাপড় কিনে নিলাম। কাপড় কেনার ক্ষেত্রে সেই সুযোগটা অন্তত দেখা যায়। কিন্তু ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে ও-রকম কোনো সুযোগ আদৌ আছে কি? মানুষের রোগ হয়েছে, ওষুধ দিচ্ছে। হয়তো ওষুধের কোম্পানিটা এদিক-ওদিক হতে পারে। কিন্তু ওষুধ তো খেতে হবে। মাফ নেই। যার ফলে দেশের ৯০ শতাংশ গরিব মানুষের প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনতে রীতিমতো নাভিশ্বাস বেড়েছে। এসব কথা সবাই শুনেন এবং জানেন। কিন্তু কেউই এই ওষুধ-বাণিজ্যের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষকে মুক্তি করতে প্রস্তুত নন। এদিকে আসলে দেশে ওষুধ কোম্পানিগুলো উচ্চ হারে ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। যা রীতিমতো এ দেশের সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তারপরও দেশের সাধারণ মানুষ ওষুধ-বাণিজ্যের সিন্ডিকেটের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে কোনোরকম বাঁচার তাগিদে ধারদেনা করে হলেও প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে বাঁচা-মরার জীবন পার করছে। বর্তমানে ওষুধ এখন প্রতিটা পরিবারের জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে।
দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম এতই বেড়েছে, যেখানে সর্বস্তরের মানুষ প্রায়ই হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশের বাজার পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, ওষুধ চালালে সংসার চালানো হয় না। সংসার চালালে ওষুধ চালানো হয় না। অর্থাৎ টানাপড়েন ও অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে দিন কাটছে সাধারণ মানুষের। কেউ কেউ আবার বলছে- মানুষ ওষুধ খাবে, অমানুষরা ভাত খাবে। সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে ওষুধ-বাণিজ্যের সিন্ডিকেট দমনে সর্বোচ্চ নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। প্রত্যাশা, দেশের ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণ সময়ের দাবি। ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণ হলেই কেবল দেশের সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় ওষুধের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে এবং সুস্থভাবে বেঁচে থাকার আহ্লাদ পূরণ হবে।

এস এম রাহমান জিকু : শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম কলেজ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়