সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে শরীফার গল্প বাদ দিতে নোটিস

আগের সংবাদ

লাল-সবুজ পতাকা হাতে সমাবেশ করবে আ.লীগ

পরের সংবাদ

পরিবেশমন্ত্রীর কর্মপরিকল্পনা : বাস্তবায়নে সবাই আন্তরিক হোন

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়কমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়ে ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বায়ুদূষণ, প্লাস্টিক দূষণ, পাহাড় কর্তন ও জলাধার ভরাট রোধসহ পরিবেশ সুশাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগের কথা জানান তিনি। এমন উদ্যোগ সময়োপযোগী। প্রকৃতি-পরিবেশের প্রতি উদাসীনতা, সত্যই পীড়াদায়ক। পরিবেশ সুন্দর রাখার দায়িত্ব আমাদের। কাজকর্মে পরিবেশ দিন দিন বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে। নির্বিচারে গাছ নিধন ও বন ধ্বংস করা হচ্ছে। নদ-নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের কাজকর্মে। নির্মল বায়ু হচ্ছে দূষিত। প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ- কতশত দূষণে জর্জরিত। ইটভাটা ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির ধোঁয়ার পাশাপাশি কলকারখানার বর্জ্য বাতাসে মিশে দূষণ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাজধানীতে বায়ুদূষণের মাত্রা কত গভীর তা অনুমান করা যায় বায়ুদূষণে ঢাকা প্রায় সময় বিশ্বের প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে থাকার খবর থেকে। বায়ুদূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, খোদ উচ্চ আদালতকে এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিতে হয়েছে। এমতাবস্থায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০২৪-এ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও পরিবেশ সুরক্ষাকে বিশেষ গুরুত্বের অংশ অগ্রাধিকার নির্ধারণ ও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণকল্পে ১০০ কর্মদিবসের কর্মপরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যেসব দেশ সবচেয়ে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে প্রকৃতিতে যে ঋতুবৈচিত্র্য তা লোপ পাচ্ছে। এক ঋতুর সঙ্গে আরেক ঋতুর যে পার্থক্য তা মুছে যাচ্ছে। আর্দ্রতা কমে আসার পাশাপাশি তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশে অসময়ে অনাবৃষ্টি, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়সহ অতি গরম আবহাওয়া তৈরি হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের অনেক এলাকা প্লাবিত হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আমাদের উপকূলীয় এলাকা এবং সবচেয়ে বড় সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারসহ অন্যান্য এলাকা। গত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষের পরিবেশবিরোধী নানারকম ক্রিয়াকলাপের ব্যাপক বৃদ্ধি এবং কয়লা, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি জীবাশ্ম জ্বালানির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড, ক্লোরোফ্লুরো কার্বন, মিথেন, ওজোন, নাইট্রাস অক্সাইড ইত্যাদি ‘গ্রিন হাউস’ গ্যাসগুলোর উপস্থিতি বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে বায়ুমণ্ডলের নিচের স্তরে উষ্ণতা বেড়ে গিয়ে তা প্রভাবিত করছে পৃথিবীর জলবায়ুকে। বিশেষ করে তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের এই পরিবর্তনগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে নানা রকমের স্বাস্থ্য সমস্যা ডেকে আনছে। সংকট সমাধানে দীর্ঘমেয়াদি ও সুপরিকল্পিত কৌশল প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশের কী করা উচিত, বিশ্বের কী করা উচিত? এ বাস্তবতায় জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নকে সহায়তার জন্য প্রণীত হয়েছে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০। এটি অত্যন্ত তথ্যবহুল ও বিজ্ঞানভিত্তিক একটি পরিকল্পনা, যা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর উচিত এ ব্যাপারে সম্মিলিতভাবে কাজ করা। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি মোকাবিলার মতো বড় কাজে সাফল্য অর্জন করা সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া সম্ভব হবে না। সঙ্গে আমাদের চারপাশের পরিবেশ সুরক্ষার জন্যও সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ, পানিদূষণ থেকে আমাদের পরিবেশকে সুরক্ষার জন্যও উদ্যোগ প্রয়োজন। পরিবেশ সুরক্ষার সরকারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। ১০০ দিনের পরিকল্পনা মাঠ পর্যায়ে কার্যকর প্রভাব ফেলবে বলে আশা রাখছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়