মতবিনিময় সভায় বক্তারা : পলিসি তৈরিতে যুবদের সম্পৃক্ত করতে হবে

আগের সংবাদ

তিন কারণে দলীয় প্রতীক রাখছে না আওয়ামী লীগ

পরের সংবাদ

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি : সরকারের সিদ্ধান্ত কার্যকর হোক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নিত্যপণ্যের কোনো সংকট নেই, এলসি মীমাংসায়ও নেই কোনো জটিলতা। কাজেই বাজারে কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টি বা অস্থির বাজার ব্যবস্থাপনা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গত রবিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন ও আমদানি পরিস্থিতির সঙ্গে চাহিদা বিশ্লেষণ করে ঘাটতি চিহ্নিত করা এবং রমজানের আগে ঘাটতি মেটাতে পণ্য আমদানি সহজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সময়োপযোগী উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন নয়। গত ২ বছরে সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে চাল, ডাল ও তেল থেকে শুরু করে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। এতে রাজধানীর প্রায় প্রতিটি এলাকায় টিসিবি ট্রাক সেলে দিন দিন মানুষের ভিড় বাড়ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ ও স্বল্প আয়ের মানুষকে যে কতটা বিপর্যস্ত করেছে, তা টিসিবি গাড়ির সামনে দীর্ঘ লাইন দেখেই ধারণা করা যায়। মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেয়া হলেও জনসাধারণ কিন্তু ব্যবস্থাপনাগত ব্যর্থতাকেই দুষছে। অতিসম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কিছুটা কৃত্রিমভাবে করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন হলো, তাহলে এই কৃত্রিম সংকটের সিন্ডিকেট কেন ভাঙা যাচ্ছে না? নতুন করে দেখা যাচ্ছে, রমজানকে সামনে রেখে অতি মুনাফালোভী পাইকারি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তাদের জিম্মি করে পণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। চলমান পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের নিত্যদিনের চাহিদায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম মেটাতে ভোক্তার হাঁসফাঁস অবস্থা। আয়ের সিংহভাগ চলে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের পেছনে। চাহিদার সঙ্গে দাম যাতে না বাড়ে, সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো রমজানের আগে দৃশ্যত কিছু বিশেষ ব্যবস্থাও নিয়ে থাকে। তবে আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, এসব ব্যবস্থা বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক তেমন প্রভাব পড়ে না। আসলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া এখন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা। বাস্তব সত্য হচ্ছে, বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পরিপূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘœ রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের। এর বাইরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রাখতে হবে। কাজেই সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাব, ক্রমাগত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ করে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় কীভাবে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা যায়, সেদিকে নজর রাখুন। সর্বোপরি, বর্তমান ত্রাহি পরিস্থিতি অনুকূলে না এলে এর প্রভাব অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক উভয় দিক থেকেই সমানভাবে সামনে আসার শঙ্কার কথা উড়িয়ে দেয়া যায় না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়