উখিয়ায় ঘর থেকে বের করে রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা

আগের সংবাদ

বিভাজন রুখতে তৎপর কেন্দ্র : আওয়ামী লীগ

পরের সংবাদ

মন্ত্রী না পেয়ে হতাশ হাওরবাসী

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ১৪, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্, ছায়াদ হোসেন সবুজ, সুনামগঞ্জ ও শান্তিগঞ্জ থেকে : হাওর-বাওড়, খাল-বিল ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি সুনামগঞ্জের মানুষজনের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় হতাশ সুনামগঞ্জবাসী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহুর্ত পর্যন্ত সুনামগঞ্জে একজন পূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন। নির্বাচনের আগে সুনামগঞ্জের মানুষের মুখে মুখে কথা উঠেছিল পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ও নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব কবি ড. মোহাম্মদ সাদিক দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হলে প্রধানমন্ত্রী তাকে মন্ত্রী বানাবেন।
কিন্তু নির্বাচনের পর মন্ত্রিপরিষদ ঘোষণা করা হলেই সুনামগঞ্জবাসীর সেই আশায় গুড়েবালি। অনেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ ঘোষণা করার পর সুনামগঞ্জবাসীর আশার আলোর বদলে হতে হয়েছে হতাশ। নতুন মন্ত্রী পাওয়া তো দূরের কথা পুরাতন মন্ত্রীকেও মন্ত্রী পরিষদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
দেশব্যাপী সজ্জন রাজনীতিবিদ খ্যাত এবং দক্ষ ও সৎ মন্ত্রী হিসেবে পরিচিত পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ায় এবং ড. সাদিক মন্ত্রী পরিষদের তালিকায় না থাকায় হতাশ সুনামগঞ্জবাসী। সরকারের টানা দুই মেয়াদে তিনি প্রতিমন্ত্রী ও পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সুনামগঞ্জকে জাতীয় উন্নয়ন সমতায় পৌঁছে দিতে কাজ করেছেন। স্বাধীনতার পর তার দায়িত্ব পালনকালে সুনামগঞ্জে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে বলে মনে করেন জেলাবাসী।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন এম এ মান্নান এমপি। তার কাছে পাত্তাই পাননি তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী ও সাবেক এমপি মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীসহ অন্যরা। সবাইকে মন্ত্রী মান্নানের সঙ্গে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করতে গিয়ে হারাতে হয়েছে জামানত।
এবার বিজয়ের পরেই জেলার সুধীজন ও তার নির্বাচনী এলাকার মানুষ আবারো আশাবাদী হয়ে ওঠেছিলেন এম এ মান্নান আবারো মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে কোনো স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ ছিল না। ক্ষমতায় থাকার সময় তার আত্মীয়স্বজনরাও দূরে ছিলেন। ফলে কোনো অভিযোগই ছিল না তার বিরুদ্ধে। বরং মানুষের কল্যাণে তিনি নিজের বাড়িঘর পর্যন্ত লিখে দিয়েছেন সরকারের নামে। গড়ে তুলেছেন মা ও বাবার নামে বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেও তিনি সবার মন জয় করতে পেরেছিলেন। নিজ এলাকায় প্রশাসনের দায়িত্ব পালনে প্রভাব বিস্তার করেননি তিনি।
এসব কারণে তিনি আবারো মন্ত্রী হচ্ছেন এ নিয়ে আশাবাদী ছিলেন সবাই। তবে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রীত্ব না পাওয়ায় তার কোনো হতাশা না থাকলেও নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ আশাহত হয়েছেন। তার মতো একজন সৎ, দক্ষ মানুষ মন্ত্রী হলে অবহেলিত এ হাওরাঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হতো বলে মনে করেন সুধীজন।
জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিজু বলেন, আমরা আশাবাদী ছিলাম দক্ষ ও সৎ মন্ত্রী আমাদের পরিকল্পনামন্ত্রী আবারো মন্ত্রিত্ব পাবেন। কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা থেকে ছিটকে পড়ায় আমরা হতাশ। তবে তাকে নেত্রী মূল্যায়ন করবেন বলে আমরা এখনো আশাবাদী।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে যার মাধ্যমে জেলায় সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে সেই নেতা এম এ মান্নান। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কৃষি, কর্মসংস্থানসহ নানা উন্নয়ন অবকাঠামো হয়েছে তার কল্যাণে। যা জেলাবাসী শ্রদ্ধার সঙ্গে আজীবন স্মরণ করবেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার শেষ কার্যদিবসে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এম এ মান্নান। বিদায় বেলায় কোনো আক্ষেপ বা কষ্ট আছে কিনা জানতে চান সাংবাদিকরা। তখন তিনি বলেন, ‘নো নো আমি এনজয় করেছি। আমার কোনো কষ্ট নেই। আমি মন্ত্রী না থাকলেও সংসদে আছি।
সংসদ সরকারের ওপরে। আমি দলের একজনকর্মী। আমি শেখ হাসিনার একজনকর্মী। দল যেখানেই আমাকে কাজে লাগাবে আমি সেখানেই কাজ করব।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, আমরা ড. সাদিককে নিয়ে অনেক আশাবাদী ছিলাম। তিনি এ এলাকা থেকে নির্বাচিত হলে প্রধানমন্ত্রী তাকে মন্ত্রী বানাবেন। কিন্তু আমাদের সেই আশায় গুড়েবালি সেই সঙ্গে আমাদের সজ্জন মন্ত্রী এম এ মান্নানও মন্ত্রিসভায় নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়