নোয়াখালী প্রতিনিধি : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী জেলার ৬টি সংসদীয় আসনে ৩৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছেন। তাদের মধ্যে ৬টি আসনে জয়ী নৌকার ৬ প্রার্থীসহ ১০ জন ছাড়া বাকি ২৩ জন জামানত হারিয়েছেন। মূলত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও তাদের দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়া সব প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো প্রার্থীকে জামানত রক্ষা করতে হলে মোট বৈধ ভোটের (কাস্টিং ভোট) আট ভাগের এক ভাগ থেকে অন্তত একটি ভোট বেশি পেতে হবে।
ফলাফলে দেখা গেছে, নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) আসনে মোট ৭ জন প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন। তার মধ্যে আওয়ামী লীগের এইচ এম ইব্রাহিম পেয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ২৯১ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু নাছের ওবায়েদ ফারুক (ডাব প্রতীক) পেয়েছেন ২ হাজার ৩৩৩ ভোট, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের এ কে এম সেলিম ভূঁইয়া (ফুলের মালা) ২৮১৯ ভোট, গণফ্রন্টের মো. খোরশেদ আলম (মাছ প্রতীক) পেয়েছেন ৯৭৭ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. মমিনুল ইসলাম (মোমবাতি) পেয়েছেন ১৮৮৯ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. শাহ আলম চেয়ার প্রতীকে পেয়েছেন ২০৯১ ভোট ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) মো. হারুন-অর-রশিদ (মশাল) পেয়েছেন ১৮১০ ভোট। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইব্রাহিম ছাড়া বাকি সবাই জামানত হারিয়েছেন। মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ২১০টি, বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৫৪টি, সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৪টি এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার হলো ৪৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী) আসনে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। তার মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোরশেদ আলম পেয়েছেন ৫৬ হাজার ১৮৬ ভোট, আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক (কাঁচি প্রতীক) ৫২ হাজার ৮৬৩ ভোট, জাসদের নাইমুল আহসান ৩৬৫ ভোট, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ২১৭ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রবিউল হোসাইন ১৫৯ ভোট, জাতীয় পার্টির তালেবুজ্জামান ৭৫২ ভোট ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির কাজী সরওয়ার আলম ১৬১ ভোট। এ আসনে আওয়ামী লীগের মোরশেদ আলম ও স্বতন্ত্র আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ছাড়া বাকি সবাই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ছিল এক লাখ ১০ হাজার ৭০৩টি, বাতিল হওয়া ভোটের সংখ্যা তিন হাজার ৩২৬টি। সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা এক লাখ ১৪ হাজার ২৯টি এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার হলো ৩১ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে ৬ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরন পেয়েছেন ৫৬ হাজার ৪৩৭ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ আহমেদ জাবেদ পেয়েছেন ৫১ হাজার ৮৮৫ ভোট, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের মহি উদ্দিন ৫৩২ ভোট, জাতীয় পার্টির ফজলে এলাহী সোহাগ (লাঙ্গল) ৩৪৮ ভোট, জাসদের জয়নাল আবেদিন ১৪৭ ভোট ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক দলের মো. সুমন আল হোসাইন ভূঁইয়া পেয়েছেন ১১৮ ভোট।
এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ আহমেদ জাবেদ ছাড়া বাকি সবাই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৪৬৭টি, বাতিল হওয়া ভোটের সংখ্যা ২ হাজার ৩৩৩টি, সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা এক লাখ ১২ হাজার ১৩৩টি এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার হলো ২৩ দশমিক ৭১ শতাংশ।
নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। এর মধ্যে ১৯৬ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী পেয়েছেন ১ লাখ ২৮ হাজার ৭৬৪টি ভোট, মো. শিহাব উদ্দিন শাহিন (ট্রাক প্রতীক) ৪৭ হাজার ৫৭৩ ভোট, জাতীয় পার্টির মোবারক হোসেন আজাদ (লাঙ্গল) ৯২৩ ভোট ও ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ আবদুল আলিম (চেয়ার) পেয়েছেন ৯৬২ ভোট। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শিহাব উদ্দিন শাহিন ছাড়া বাকি সবাই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ছিল এক লাখ ৭৮ হাজার ২২২টি, বাতিল হওয়া ভোটের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৩৪টি, সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৮৫৬টি এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার হলো ২৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ১৩২ কেন্দ্রে পেয়েছেন ১ লাখ ৮১ হাজার ২৭৯ ভোট, খাজা তানভীর আহমেদ পেয়েছেন ৯ হাজার ৭০২ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা পেয়েছেন ১৪৯৩ ভোট, জাসদের মোহাম্মদ মকছুদের রহমান পেয়েছেন ২১৩২ ভোট ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের শাকিল মাহমুদ চৌধুরী পেয়েছেন ২১৩২ ভোট। এ আসনে ওবায়দুল কাদের ছাড়া বাকি সবাই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪০টি, বাতিল হওয়া ভোটের সংখ্যা ১ হাজার ৪৯৪টি, সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ১ হাজার ২৩৪টি এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার হলো ৪৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে ৩ জন প্রার্থীর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী পেয়েছেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৭১৫ ভোট, জাতীয় পার্টির মুশফিকুর রহমান ৫ হাজার ৯৩৩ ভোট ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৩৫ ভোট। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী ছাড়া বাকি সবাই জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৪ হাজার ৩৮৬টি, বাতিল হওয়া ভোটের সংখ্যা ৪ হাজার ১৮টি, সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ২ লাখ ৬ হাজার ৪০৪টি এবং প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার হলো ৬৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।