ভোটের মাঠে ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের জয়জয়কার

আগের সংবাদ

কেমন হবে ‘স্মার্ট’ মন্ত্রিসভা

পরের সংবাদ

পুড়িয়ে মানুষ হত্যা এ কেমন আন্দোলন?

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একদিন আগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিল দুর্বৃত্তরা। তাতে প্রাণ গেল চারজন নিরীহ মানুষের। দগ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছেন আরো বেশ কয়েকজন ট্রেনযাত্রী। মূলত বিগত এক দশক ধরে আগুনসন্ত্রাসীরা নির্বাচন এলেই বাস, ট্রাক, ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করার মতো জঘন্য অপরাধে লিপ্ত রয়েছে। নিরীহ মানুষ হত্যা করে তারা দেশে কী চায়- এমন প্রশ্ন দেশের সব মানুষের। তারা বারবার সরকার হটানোর কথা বললেও সরকার হটানোর মতো তাদের পর্যাপ্ত জনসমর্থন আছে কিনা- তারা কখনো তা তৃণমূল পর্যায়ে গিয়ে তলিয়ে দেখেনি এবং সেখানে গিয়ে কাজও করেনি। বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলকে। দলটির প্রধান নেত্রী দণ্ডিত হয়ে কারাগারে আছেন বেশ ক’বছর ধরে। প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায় ওই নেত্রী এখন জেলের পরিবর্তে বাড়িতেই অন্তরীণ রয়েছেন। এর বাইরে দলটির আরেকজন নেতা দেশের বাইরে রয়েছেন, তিনিও বিভিন্ন মামলার দণ্ডিত আসামি।
ফলে দলটির নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার নেতা রয়েছেন গুটিকয়েক মাত্র। এমতাবস্থায় বেশ কিছুদিন ধরে দলটির গুটিকয়েক নেতা ঢাকাভিত্তিক টুকটাক আন্দোলন করে গেলেও কখনো বড় কোনো আন্দোলন আমাদের চোখে পড়েনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার আগে দেখা গেল দলটি নির্বাচনে অংশ গ্রহণের কোনো প্রচেষ্টা না করে বিভিন্ন অসাংবিধানিক দাবিতে কখনো অবরোধ আবার কখনো হরতালের ডাক দিয়েই চলছে। এসব অবরোধ-হরতালে মানুষের সাড়া না পেয়ে তারা বেশকিছু নাশকতাও করেছে। তবে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ থাকায় তেমন কোনো ক্ষতি তারা করতে পারেনি। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন বর্জনকারী দলটি নির্বাচনের আগে কিংবা নির্বাচনের দিন দেশজুড়ে নাশকতার ছক কষেছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এসব বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কঠোর অবস্থানে আছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ভারত থেকে যাত্রী নিয়ে আসা বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিয়ে আবারো প্রমাণ করল তারা দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল নয়। দেশের নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা, দেশের সম্পদ পুড়িয়ে অঙ্গার করে দেয়া- এটি কখনো একজন দেশপ্রেমিক মানুষের কাজ হতে পারে না। বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে এমন সময় আগুন দেয়া হলো, যখন দেশের বড় একটি রাজনৈতিক দল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঠেকানোর জন্য হরতাল ডেকেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এর দায় তাদের নিতে হবে।
আমরা দেশে কোনো দলের নাশকতা চাই না। আমরা চাই দলগুলোর গণতান্ত্রিক আন্দোলন। আর এমন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সরকার বাধা দিক তাও চাই না। তবে ট্রেন, বাস, ট্রাকে আগুন দেয়া; বিভিন্ন জায়গায় ককটেল নিক্ষেপ করা এবং মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার মতো কোনো ধরনের নাশকতা আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে প্রত্যাশা করি না। এমন নাশকতা দলগুলোর মধ্যে শুধু দূরত্ব বাড়ায় না, বছর বছর শত্রæতা জিইয়ে রাখে। মাঝখানে কত নিরীহ মানুষের প্রাণ যায় অকালে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো কোনো কর্মসূচি কখনো প্রত্যাশা করি না। আমরা প্রত্যাশা করব, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগিয়ে মানুষ হত্যাকারীদের সরকার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করবে। আর এ ঘটনায় মৃত্যুবরণকারীদের যথাযথ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবে। এ ঘটনায় যারা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে তাদেরও সরকার দেখভাল করবে। আমরা দেশে আর কোনো নাশকতা চাই না, আমরা চাই ভোট বর্জনকারী দলগুলোর গণতান্ত্রিক আন্দোলন। যে আন্দোলন হবে অত্যন্ত অহিংস পন্থায়।

রতন কুমার তুরী : কলেজ শিক্ষক ও লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়