ভোটের মাঠে ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের জয়জয়কার

আগের সংবাদ

কেমন হবে ‘স্মার্ট’ মন্ত্রিসভা

পরের সংবাদ

নিরঙ্কুশ বিজয় সংহতকরণে শক্তিশালী সরকার ও আদর্শিক রাজনীতির আবশ্যকতা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৯, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অবধারিত থাকা সত্ত্বেও নানা আশঙ্কা নির্বাচনের আগে সব মহলেই ছিল। নির্বাচনবিরোধীরা দুই মাস দেশে হরতাল, অবরোধ, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা, মানুষ পুড়িয়ে প্রচণ্ড ভীতি সৃষ্টি করেছিল। তারা শুধু নির্বাচন বর্জনই করেনি, প্রতিহত করতে রেললাইনে নাশকতা, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং নির্বাচনী কেন্দ্রে চোরাগোপ্তা হামলা করেছিল। তাদের উদ্দেশ্য ছিল যে কোনো মূল্যে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধ করা, নিদেনপক্ষে ভোটারদের উপস্থিতি রোধ করা। তাদের কোনো কোনো নেতা দাবি করেছিল যে নির্বাচনে ৫-৬ শতাংশের বেশি ভোটার উপস্থিত হবে না। ২০১৩-১৪ সালের মতো এবারো তারা ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়ার মিশন নিয়ে নেমেছিল। কিন্তু এবার যে ২০১৩-১৪ সাল নয় কিংবা এবার যে আগের নির্বাচন কমিশন নয়, নতুন কমিশন এবং শেখ হাসিনার সরকার সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ ছিল এটি নির্বাচন বর্জনকারীদের হিসাবে গোলমেলে ছিল। নির্বাচন কমিশন এবার ভোটকেন্দ্র রক্ষা এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সর্বত্র সমানভাবে ছড়িয়ে দিয়েছিল। ফলে তাদের নির্বাচন কেন্দ্র পুড়িয়ে ফেলার মিশন সফল করা সম্ভব হয়নি। তবে নির্বাচন বর্জনকারীরা মনে করেছিল যে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ করে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটিয়ে ব্যাপক ত্রাস সৃষ্টি করা গেলে ভোটারগণ ভোট দিতে যাবেন না। কিন্তু বিরোধীদের এমন হিসাব-নিকাশেও ভুল ছিল। মানুষ বেশি বেশি ভোট দেয়ার জন্য ভোটকেন্দ্রে হাজির হন। প্রায় ৪০ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছে। ফলে নির্বাচনে ভোটার কম ছিল এমন অভিযোগ এনে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে বিতর্কিত করা যাবে না। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ভোটদানের ফলে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেছে। বিরোধী দলের সব হিসাব-নিকাশই বাস্তবে রূপ পেল না। বিদেশি পর্যবেক্ষকরাও ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ এবং মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে এমন অভিমত প্রকাশ করেছেন। বিদেশি গণমাধ্যমগুলোতে এই নির্বাচনের আগে যেসব তাণ্ডব, অগ্নিসংযোগ মানুষ পুড়িয়ে মারার অপকর্ম বিরোধীরা ঘটিয়েছিল সেসবেরও প্রচার হয়েছে। ৭ তারিখের নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেছে, সরকার কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করেছে, এমন খবরাখবরও বিদেশি গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। ফলে আগে যে আশঙ্কা এই নির্বাচন সম্পর্কে কারো কারো মধ্যে ছিল সেটি ঘটেনি। নির্বাচন প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক এবং জনগণের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে এটি কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।
এমন অবস্থায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে- এমন সংবাদ বিদেশি গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরে নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দল এবং সরকারের মধ্যে কয়েক মাস ধরে যে উত্তপ্ত অবস্থা বিরাজ করছিল, সেটি এখন নিরসন হতে যাচ্ছে। বিরোধীদের পক্ষে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোটারের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী ফলকে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। বিচ্ছিন্ন বিক্ষিপ্তভাবে কিছু বিচ্যুতি ঘটলেও অতীতের অনেক নির্বাচনের চেয়ে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব অনেক বেশি। ফলে শেখ হাসিনা এই নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়েই সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। নতুন সংসদে আওয়ামী লীগ ২২৪টি আসন পেয়েছে। স্বতন্ত্র ৬২ জনের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগেরই নেতা। ফলে সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ অবস্থান থাকছে। গত ৩টি সংসদেও আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। এবার তার চাইতেও বেশি আসন আওয়ামী লীগ এবং স্বতন্ত্র সদস্যদের মিলিতভাবে রয়েছে। রাজনীতি সচেতন সবাই আশা করছে এবার শেখ হাসিনা সরকার গঠন, পরিচালনা, সংসদ কার্যকর করা এবং আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আদর্শিকভাবে নতুন উচ্চতায় তুলে আনার ক্ষেত্রে কার্যকর নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে অগ্রসর হবেন। কারণ বিগত ১৫ বছরে তিনি দেশের অর্থনৈতিকসহ পিছিয়ে পড়া প্রায় সব খাতেই ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করতে সক্ষম হয়েছেন। বাংলাদেশ ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিকভাবে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ২০২৩ সালে সেই প্রতিযোগিতা সবাই লক্ষ করেছে। শেখ হাসিনা বিশ্ব মোড়লদের প্রতিযোগিতায় গা ভাসিয়ে দেননি। তিনি পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর সূচিত ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ নীতি অনুসরণ ও অর্থনৈতিকভাবেও বাংলাদেশের স্বার্থকেও প্রাধান্য দিয়েছেন। ফলে বাংলাদেশ ভীষণভাবে সম্ভাবনার একটি দেশ হিসেবে গত ১৫ বছরে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদাও লাভ করেছে। সরকারের সম্মুখে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে যেগুলোকে অতিক্রম করতে পারলে বাংলাদেশে ২০৪১ এর লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবে। লক্ষ্য অর্জনের এই ছকটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারই নির্ধারিত বিষয়। তিনি ২০০৮ সালে যেমন ২০২১-এর রূপকল্প এবং দিনবদলের সনদ উপস্থাপন করে দেশে এতসব পরিবর্তন এনেছেন, যার ওপর ভিত্তি করে ২০৪১ এবং ২১০০ ব-দ্বীপ রূপকল্প জাতির সম্মুখে অর্জনযোগ্য লক্ষ্য হিসেবে স্থির করা হয়েছে। তবে ২০২০ সালে করোনা, ’২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্ব অর্থনীতির সংকট, ’২৩ সালে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ মিলিয়ে বিশ্বে যে সংকট তৈরি হয়েছে তাতে বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রের ওপর অর্থনৈতিক, ব্যবসা-বাণিজ্যিক প্রভাব বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে। বিষয়গুলো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও কমবেশি উপলব্ধি করতে পেরেছে। তাদেরই উপলব্ধির প্রতিফলন ঘটেছে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে। জনগণ শেখ হাসিনাকেই আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য যোগ্য এবং একমাত্র নির্ভরযোগ্য সরকারপ্রধান হিসেবে মনে করছে। সামনে সংকটগুলো অতিক্রম করার জন্য তার ভিশনারি-মিশনারি নেতৃত্বকেই বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন বলে মনে করছে। কারণ গত দেড়-দুই বছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের অভিঘাতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে, যেগুলো মোকাবিলা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশেষত আমাদের অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংস্কার জরুরি আনায়ন করতেই হবে। ব্যাংক, বিমা, শিল্প, আমদানি, রপ্তানি, দেশীয় উৎপাদিত পণ্যসামগ্র বেকার সমস্যা দূরীকরণসহ অনেক ক্ষেত্রেই দৃঢ় নেতৃত্ব আবশ্যক হয়ে পড়েছে। দুর্নীতি রোধ করা, সমাজে সুশাসন শিক্ষায় দক্ষ জ্ঞানসমৃদ্ধ জনগোষ্ঠী তৈরি করা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করার পরিকল্পনা যেমন থাকতে হবে, এর বাস্তবায়নও ঘটাতে হবে। এই বিষয়গুলোর জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন যেই নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হবে, সেটি যেন হয় দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং ভিশনারি-মিশনারি সম্পন্ন মন্ত্রিপরিষদ। অর্থনীতিসহ সব মন্ত্রণালয়কে দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করার মতো যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়েই তিনি যেন এবার একটি জননন্দিত মন্ত্রিসভা গঠন করেন। আমাদের বাজারব্যবস্থাকে দ্রুত নিয়ম কাঠামোতে আনতে হবে। ২০২৩ সালে গোটা বাজার ব্যবস্থাই মানুষের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছিল। এটিকে সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য করণীয় নির্ধারণ করতেই হবে। দুর্নীতি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষা খাতে অনেক অবকাঠামো হয়েছে। কিন্তু গবেষণা ও মানসম্মত দক্ষ শিক্ষিত মানবসম্পদ তৈরির কাজটিতে দ্রুত হাত দিতে হবে। বৃহত্তর সমাজে যেসব পশ্চাৎপদতা, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা, উগ্র মতাদর্শ বিরাজ করছে সেসবের নিরসন কীভাবে করা যাবে তা নিয়ে সরকারকে নীরব বিপ্লব সাধন করতে হবে।
দেশ চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। কিন্তু দেশকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য তৈরি করার অনেক কিছু বাকি রয়ে গেছে। সেটি করার জন্য সরকার এবং রাজনৈতিক দলকে যুগপৎভাবে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্রের ধারণা এবং চর্চা শিক্ষা-সংস্কৃতি এবং জীবনাচরণের মধ্য দিয়ে ঘটাতেই হবে। এসব কিছু করার জন্য আওয়ামী লীগকে আদর্শগতভাবে শক্তিশালী করতেই হবে। তৃণমূলে এখনো আওয়ামী লীগের অনেক কিছুতে হাত দিতে হবে। সমাজে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, অসাম্প্রদায়িকতা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, মানবতাবোধ, বিশ্বজনীন আবেদন, বিজ্ঞানবোধ এবং মানুষের ব্যাপক চাহিদা পূরণের বিষয়গুলো রাজনৈতিক দল এবং সরকারের মধ্যে ক্রিয়াশীল করতে হবে। শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতিসহ অনেক কিছুতেই যে পরিবর্তন এনেছেন সেগুলোর ভবিষ্যৎ ধারাবাহিকতা রাজনীতিতে কীভাবে বর্তমান থাকবে সেসব বিষয়েও দল এবং নেতৃত্বকে স্থির করতে হবে। সামনের দিনগুলোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার মতো রাজনৈতিক নেতৃত্ব আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে কীভাবে আরো বেশি স্থান করে নিতে পারে সেসবের প্রতি এখনই মনোযোগ দিতে হবে। আওয়ামী লীগ প্রায় ২৫ বছর দেশ শাসন করছে। কিন্তু এর চাইতেও বেশিদিন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রশাসন, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে ক্রিয়াশীল ছিল। সেকারণেই আওয়ামী লীগ এত বছর ক্ষমতায় থাকার পরও বাংলাদেশের সমাজ এবং রাজনীতিতে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির অবস্থান খুব একটা দুর্বল করা যায়নি। এরা কীভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি, প্রশাসন ও সমাজব্যবস্থার অভ্যন্তরে পাকিস্তানি ভাবাদর্শের বিস্তার ঘটিয়ে যাচ্ছে সেটি বিস্ময়কর হলেও একে অকার্যকর করার রাজনৈতিক শক্তি বাংলাদেশে যথাযথ ভূমিকা পালন করেনি। অথচ বাংলাদেশ একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করলেও ’৭৫-পরবর্তী সময় থেকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ভাবাদর্শ এতটাই সমাজ, রাষ্ট্র ও শিক্ষাব্যবস্থার গভীরে স্থান করে নিয়েছে যে তাদের ভাবাদর্শ, চিন্তার জগৎ, বিশ্ববীক্ষা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ দ্বারা গঠিত হয়নি। সে কাজটি রাজনৈতিকভাবে এ পর্যন্ত কেউ করেনি। ফলে এদের উপস্থিতি ও বিস্তার রোধ করা যায়নি। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ভাবাদর্শকে রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এখনই উদ্যোগ না নিলে একটি জনকল্যাণবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে না। সে কারণেই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন নতুন প্রজন্মের মধ্যে যথাযথভাবে ছড়িয়ে দেয়ার কোনো বিকল্প নেই।

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়