৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি : দুই রাজস্ব কর্মকর্তা ফের রিমান্ডে

আগের সংবাদ

নিরাপত্তার চাদরে পুরো দেশ : মাঠে সাড়ে ৯ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, মনিটরিং সেলে ৩ হাজার ম্যাজিস্ট্রেট

পরের সংবাদ

ইউনূসের কারাদণ্ড : আইনের ঊর্ধ্বে কেউই নয়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ৩, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শ্রম আইন লঙ্ঘনের দুটি ধারায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার শ্রম আদালত। এ ছাড়া এ মামলার অপর তিনজনকেও একই সাজা দেন আদালত। তাদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় গত সোমবার রায় দিয়েছেন ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক। এই রায়ের দ্বারা এটি প্রমাণিত হলো যে, ‘আইনের ঊর্ধ্বে কেউই নয়’। কেউ যেন জবাবদিহিতা বা আইনের শাসনের বাইরে না যায়, তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। তাই ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন, কর ফাঁকি, মানি লন্ডারিং এবং অন্য সব ধরনের অপরাধের নজরদারি আরো পুঙ্খানুপুঙ্খ হওয়া উচিত বলে মনে করছি। জানা গেছে, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ড. ইউনূস এবং গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে। গত ৬ জুন এই মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন ড. ইউনূস ও অন্যরা। আপিল বিভাগ গত ২০ আগস্ট সেই আবেদন চূড়ান্তভাবে খারিজ করে দেন। এরপর ২২ আগস্ট শ্রম আদালতে এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। যা শেষ হয় ৯ নভেম্বর। এতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের চারজন কর্মকর্তা সাক্ষ্য দেন। মামলায় অভিযোগ আনা হয়- শ্রম আইন, ২০০৬ এবং বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী, গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক বা কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল পার হলেও তাদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক বা কর্মচারীদের মজুরিসহ বার্ষিক ছুটি দেয়া, ছুটি নগদায়ন ও ছুটির বিপরীতে নগদ অর্থ দেয়া হয় না। মামলায় আরো অভিযোগ আনা হয়, গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি এবং লভ্যাংশের ৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন অনুযায়ী গঠিত তহবিলে জমা দেয়া হয় না। কোনো কোনো মহল থেকে বলা হয়ে থাকে এবং বলা হচ্ছে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে এই মামলা সরকার করেছে। তবে সত্য হলো, এই মামলা সরকার করেনি, করেছে তারই শ্রমিকরা। ২০০৭-০৮ সালে বাংলাদেশের সামরিক-সমর্থিত শাসনামলে ইউনূস প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা পালন করেছিলেন। গণতন্ত্রের বিপক্ষে ইউনূসের ভূমিকা জনপরিসরে তার ভাবমূর্তিকে অনেকটাই কলঙ্কিত করে। পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করতে ইউনূস তার প্রভাবশালী বন্ধুদের ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমতাবস্থায় গত বছরের আগস্টে বিশ্বের ১০০ নোবেল বিজয়ী এবং ৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিক ইউনূসকে হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেন। এর আগে মার্চে ৪০ ব্যক্তির নামে ওয়াশিংটন পোস্টে বিজ্ঞাপন আকারে একটি ‘খোলা চিঠি’ প্রকাশ করা হয়। মজার বিষয় হলো, চিঠিটি সচরাচর পদ্ধতির বাইরে গিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৫০ জন বিশিষ্ট সম্পাদক। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা ওই চিঠিকে বাংলাদেশের স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করেন। ইউনূসের মাধ্যমে কারো অধিকার ক্ষুণ্ন হলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির আইনের আশ্রয় নেয়ার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। শ্রমিকদের মামলা করার আগেই তাদের পাওনা দিয়ে দিলে এভাবে বিচারালয়ে তাকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে আসামি হতে হতো না। তার আমলে গ্রামীণ ব্যাংক ঋণ আদায়ে কি সার্টিফিকেট মামলা করেনি, মামলায় কি গরিব-নিঃস্ব ঋণগ্রহীতার কোমরে পুলিশ দড়ি বাঁধেনি? তাহলে ড. ইউনূস কেন আইনের বাইরে থাকবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়