রাজধানীতে ৬ বছরের শিশুকে গণধর্ষণের অভিযোগ

আগের সংবাদ

সম্ভাবনার নবদিগন্তে বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

বৃষ্টিতে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ পরিত্যক্ত : টি-টোয়েন্টিতে টাইগারদের স্বপ্নের বছর

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিগত কয়েক বছরে টাইগারদের টি-টোয়েন্টি পারফরমেন্স ছিল হতাশাজনক। আর এই হতাশাজনক পারফরমেন্সের জন্য গত দুই বছরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হতাশাজনক পারফরমেন্স। চলমান নিউজিল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিটি বৃষ্টির করণে পরিত্যক্ত হয়। এদিন টসে জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই কিউই শিবিরে আঘাত হানেন বল হাতে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা শরিফুল ইসলাম। ২ রানেই ওপেনার ফিন অ্যালেনকে শিকার করেন তিনি। এরপর বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হন আরেক ওপেনার টিম শেফার্ড। ৪৩ রানে তাকে সাজঘরে ফেরান তানজিম হাসান সাকিব। রিশাদের মিতব্যয়ী বোলিংয়ে ১১ ওভারে কিউইদের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৭২। এরপরই হানা দেয় বৃষ্টি। আর এই বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। আগামীকাল ৩১ ডিসেম্বর কিউইদের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি দিয়ে। এ ম্যাচ হারলেও টাইগারদের হারানোর মতো কিছু থাকবে না সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে।
এক বছর আগেও যেখানে এই ফরম্যাটে সম্মানজনক স্কোর করাটাই বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল দলের জন্য সেখানে এ বছর ১০ ম্যাচ খেলে ৮টিতেই জয়। তার মধ্যে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের মতো পরাশক্তি দলকে ধবলধোলাইয়ের লজ্জা দেয়া। এর আগে ২০২১ এবং ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টানা হতাশাজনক পারফরমেন্সের পর এমন একটা বছর পার করা সত্যিই স্বপ্নের মতো। হয়তো কখনো কেউ কল্পনাও করতে পারেনি এত দ্রুত উন্নতি হবে। অন্তত ৫ ম্যাচ খেললে আগের ১৭ বছরে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে যেখানে কখনোই সাফল্যের হার ৫০ শতাংশের উপরে যায়নি, সেখানে চলতি বছর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পর্যন্ত ১০টি ম্যাচ খেলে ৮টিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। সাফল্যের হার ৮০ শতাংশ। মার্চে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ করে বসে বাংলাদেশ। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২-১, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতার সুখস্মৃতি আছে চলতি বছর। টি-টোয়েন্টিতে ২০২৩ সালের চেয়ে বেশি জয় আছে ২০২১ সালে। সেবার ১১ ম্যাচ জিততে খেলতে হয়েছিল ২৭ ম্যাচ, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি ওই বছরই খেলেছে বাংলাদেশ। তবে ২৭ ম্যাচে ১১ জয়ের বিপরীতে আছে যে ১৬ পরাজয়, সাফল্যের হার ৪০ শতাংশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতে হতে যাওয়া সিরিজের সব ম্যাচ হারলেও সাফল্যের হারে সেরা থাকবে চলতি বছর। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে যাত্রা শুরু বাংলাদেশের। সেই বছর ছিল একটাই ম্যাচ। এটা বাদ দিলে কমপক্ষে ৫ ম্যাচ খেললে বেশির ভাগ ম্যাচ হারতে হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। ১৫৫ টি টি-টোয়েন্টি খেলে তাই ৯৪ ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। সাফল্যের হার ৩৭ শতাংশ। টি-টোয়েন্টিতে নতুন দিন আনতে হলে এই পরিসংখ্যান করতে হবে ভদ্রস্থ। নিউজিল্যান্ডে কখনো সাদা বলের সংস্করণে জিততে না পারা নাজমুল হোসেন শান্তরা এবার ওয়ানডেতে পেয়েছেন জয়। আর এখন পর্যন্ত কিউই সফরে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের সাফল্য হাতছানি দিয়ে যাচ্ছে। শেষ ম্যাচ জিতলেই সিরিজ জয় নিশ্চিত হবে। আসছে ২০২৪ সাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বছর। বছরজুড়ে তাই ম্যাচ আছে অনেক। আর এমন পারফরমেন্সের পর আগামী জুনে যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে বড় কোনো কিছু আশা করাই যেতে পারে।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে। এদিন ম্যাচের শুরুতেই উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে দ্রুতই ম্যাচ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রানের চাকা গতিশীল করেন টিম শেফার্ট। তবে ফুলে-ফেঁপে উঠতে থাকা কিউইদের স্কোরবোর্ডের লাগাম টেনে ধরেন রিশাদ হোসেন। এই লেগ স্পিনার ৩ ওভার বোলিং করে মাত্র ১০ রান দেন। শেফার্টের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান উঠলেও রিশাদের কৃপণ বোলিংয়ে রানের চাকা থেমে যায়। বৃষ্টিতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি পরিত্যক্ত হওয়ার পর রিশাদের প্রশংসা ঝরছে শেফার্টের মুখে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় ও বেশ ভালো বোলিং করেছে। সে বাতাসের গতির দিকে বোলিং করছিল, বাতাস বেশ জোরেই ছিল। সোজা মারা কঠিন ছিল। বাউন্ডারির আকারও এখানে ভালোই বড়। সে ভালো করেছে।
ছেলেরা তাকে ভালোই খেলেছে। তবে তাকে কৃতিত্ব দিতেই হবে ভালো বোলিংয়ের জন্য।’
বে ওভালে গতকাল টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ১১ ওভারে ২ উইকেটে ৭২ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। এরপর নামে তুমুল বৃষ্টি। ম্যাচে মাত্র ২৩ বলে ৪৩ রান করেন শেফার্ট।
ড্যারেল মিচেল ১৮ ও গেøন ফিলিপস ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে এসে রিশাদ বলেন, ‘কোনো আফসোস না রাখাই ভালো। যা কিছু হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আমরা চেষ্টা করব পরের ম্যাচ জিতে সিরিজটা নিয়ে দেশে ফেরার জন্য। এত বড় একটি সুযোগ পেয়েছি, আমরা ইনশাআল্লাহ চেষ্টা করব কাজে লাগানোর। আমরা জেতার জন্যই নেমেছিলাম, কিন্তু বৃষ্টি নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই।’ তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে জিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। একই মাঠে বছরের শেষ দিন ৩১ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি। এই ম্যাচ জিততে পারলে যে কোনো সংস্করণে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়