নাশকতায় সংশ্লিষ্টতা : ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতিসহ ১১ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নৌকা প্রতীকে ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী : বরিশালে বিশাল নির্বাচনী জনসভা

পরের সংবাদ

ঘরোয়া ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্য ব্যর্থতার এক বছর

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিদায়ের দ্বার প্রান্তে ২০২৩। এ বছর ত্রীড়াঙ্গনে কেমন করল আমাদের দেশ তা নিয়েই থাকছে আজকের প্রতিবেদন। এ বছর উচ্ছ¡সিত হওয়ার মতো অনেক ঘটনা যেমন আছে তেমনি প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় মন খারাপ করার মতোও অনেক ঘটনা আছে। যেখানে দেশের জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট ফুটবল ছাড়াও অন্যান্য খেলাগুলোও প্রাধান্য পাবে।
শুরুতেই আসা যাক ক্রিকেটে। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৪৮ ম্যাচের ২০টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ২টি-টোয়েন্টি বাদে)। ওয়ানডে ক্রিকেটে ২০২৩ সালটা খুব একটা ভালো যায়নি বাংলাদেশের। ২০২৩ সালে ৩২টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ১১টিতে জয় এসেছে বাংলাদেশের।
শেষ হতে যাওয়া বছরটাতে নিজেদের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ৩২টি ওয়ানডে ম্যাচে অংশ নিয়েছে সাকিব-শান্তরা। টি-টোয়েন্টিতে উন্নতির দৃশ্যটা স্পষ্ট নয়। পুরো বছরে চারটি সিরিজ মিলিয়ে মোট ১২ ম্যাচে মাত্র ৮টি জয় এসেছে বাংলাদেশের (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ২টি-টোয়েন্টি বাদে)।
বছরের শুরুতে টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ সিরিজ জয়টাই যেন বড় সফলতা। টেস্টে বছরের শুরুতেই দুর্বল প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয় এসেছে।
এছাড়া আফগানদের বিপক্ষে রেকর্ড গড়ে জয়। আর বছরের শেষে ঘরের মাঠে টেস্টে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডকে হারানো। ফলে ২০২৩ সালে ক্রিকেটের বড় পরিসরে টাইগারদের নেই কোনো সামগ্রিক রেকর্ড।
২০২৩ সালের এশিয়া কাপে ভালো করার আভাস নিয়ে তৃতীয় হয়ে ফিরেছে টাইগাররা। সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়া দূরের কথা, বিশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে ফল করে হতাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন ক্রিকেটাররা।
বিশ্বকাপে মোট ৯ ম্যাচ খেলে কেবল দুই জয় বাংলাদেশ। যা আগের কোনো বিশ্বকাপে এমন হয়নি লাল-সবুজদের। এর মধ্যে ভারত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয় চোখে পড়ার মতো।
২০২৩ সালে আচমকায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তামিম ইকবাল। তবে ২৮ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রধানন্ত্রীর তত্ত্বাবধায়নে অবসর ভেঙে ফেরেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো একজন যোগ্য ও রানে থাকা ক্রিকেটারকে সাইড করতে চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। পরে শেষ সময়ে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে নেয়া হলো রিয়াদকে। এবং যথারীতি বাংলাদেশের হয়ে ভারত বিশ্বকাপে ব্যর্থতার মিছিলে তিনিই এক সেঞ্চুরিসহ সর্বোচ্চ রান করেন।
বছরের শেষ সময়ে এসে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে আনন্দের স্মৃতি উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তুলেছে যুবারা। টাইগ্রেসরা দারুণ পারফর্ম্যান্স করে যাচ্ছেন। এ বছর ভারতের সঙ্গে ওয়ানডে সিরিজ ড্র করেছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। দক্ষিণ আফ্রিকাতে গিয়ে তাদের মাটিতে প্রথম ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে একটি করে ম্যাচ জিতেছে। নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট,ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়।
এবার আসা যাক ফুটবলে। দুর্নীতির অভিযোগে বাফুফের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে দুই বছর নিষিদ্ধ করে ফিফা।
এরপর বাফুফে আজীবন নিষিদ্ধ করে সোহাগকে। ২০২২ সালে প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়ন নারী ফুটবল দলকে ছয় মাস পরই মার্চে আর্থিক সংকটের কারণ দেখিয়ে অলিম্পিক বাছাই খেলতে মিয়ানমারে পাঠায়নি বাফুফে! যা নিয়ে দেশব্যাপী তীব্র সমালোচনা হয়।
দারুণ ফুটবল খেলে ১৪ বছর পর সাফের সেমিফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। এরপর ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইয়ের প্রথম রাউন্ড পেরোনোর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন জামাল ভূঁইয়ারা। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে নজর কাড়েন ১৮ বছরের তরুণ ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন।
বাংলাদেশ ফুটবলের তরুণ প্রতিভা মোরসালিন, জিকোরা ক্লাব ফুটবলে ন্যাক্কার কাণ্ডও ঘটিয়েছেন এ বছর।
সেপ্টেম্বরে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে এএফসি কাপের ম্যাচ খেলে মালে থেকে ফেরার পথে ঢাকার বিমানবন্দরে ৬৪ বোতল মদ পাওয়া যায় মোরছালিন, তপু বর্মণ, আনিসুর রহমানসহ পাঁচ ফুটবলারের কাছে। ওই পাঁচ ফুটবলারকে নিষিদ্ধ করে কিংস। ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফে নেপালকে ফাইনালে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
এবার আসা যাক ক্রিকেট-ফুটবলের বাইরে অন্যান্য ইভেন্টে।
অ্যাথলেটিকসে কখনো এশীয়ায় স্বর্ণ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে সেই অধরা স্বর্ণ এনে দিয়েছেন দেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালেও আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশের আর্চারি। মার্চে থাইল্যান্ডের ফুকেটে এশিয়ান আর্চারিতে রিকার্ভের মিশ্র দলগত ইভেন্টে হাকিম আহমেদের সঙ্গে জুটি বেঁধে স্বর্ণ জেতেন দিয়া সিদ্দিকী।
জাতীয় খেলা কাবাডির অবস্থাও খুব ভালো ছিল না এ বছর।
২০১০ সালের পর থেকে এশিয়ান গেমসে পদক নেই এই খেলায়। এবার হাংজুতেও একই ফল।
বছরজুড়ে শুটিংয়ের ব্যর্থতা চোখে লেগেছে। এশিয়ান গেমসে কোনো ইভেন্টেই ফাইনালের আশপাশেও যেতে পারেননি আবদুল্লাহ হেল বাকিরা। দাবায় বছরজুড়েই ছিল ফাহাদ রহমানকে নিয়ে হাহাকার।
২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়ার পর থেকেই গ্র্যান্ডমাস্টার নর্মের জন্য খেলে যাচ্ছেন একের পর এক টুর্নামেন্ট। এ বছর গোটা চারেক টুর্নামেন্ট নর্মের খুব কাছে গিয়েও স্নায়ুচাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত আর পারেননি। তীরে এসে তরি ডুবছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়