ভারতীয় হানি ট্র্যাপ চক্রের ২ এজেন্ট গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

রংপুরে তিনটি নির্বাচনী জনসভায় নৌকায় পক্ষে গণজোয়ার তুললেন শেখ হাসিনা : বাহে, হামাক একখান ভোট দিবা

পরের সংবাদ

নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশকে ডিজিটালাইজড, টেকসই ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তর করার জন্য ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটি সুদূরপ্রসারী ও কৌশলগত পরিকল্পনা। এটি এমন একটি জাতীয় পরিকল্পনা, যার লক্ষ্য প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে শক্তিশালী করা, সরকারি পরিষেবার দক্ষতা বৃদ্ধি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করা। ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ধারণাটি স্মার্ট শহর নির্মাণ, ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি, ই-কমার্সের প্রচার, নবায়নযোগ্য শক্তি, ই-গভর্নেন্স এবং টেকসই উন্নয়ন অনুশীলনসহ বিস্তৃত উদ্যোগ এবং পরিকল্পনাকে অন্তর্ভুক্ত করে।
১৯৭৫ সালের ১৪ জুন রাঙ্গামাটি জেলার বেতবুনিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন স্থাপনের মাধ্যমে দেশে প্রথম তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালের ১২ মে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে দেশের সম্প্রচার ও টেলিযোগাযোগ খাতে আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা করেছেন, যা ডিজিটাল বাংলাদেশের পর দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং দূরদর্শী সিদ্ধান্ত। আদতে স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটিই হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার মূল ভিত্তি।
আগামীর স্মার্ট এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়তে নবীন ও প্রবীণদের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ জন্য প্রয়োজন নবীন ও প্রবীণ উভয় নাগরিকদের মধ্যে ইতিবাচক ও আন্তঃপ্রজন্মগত সম্পর্ক গড়ে তোলা। দেশের সমাজ ব্যবস্থায় প্রবীণরা নবীনদের তুলনায় উচ্চ মর্যাদা ও কর্তৃত্বের অধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশীয় সংস্কৃতিতে প্রবীণদের সম্মান করার এবং তাদের নির্দেশনা ও পরামর্শকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এর মানে হলো নবীনরা প্রবীণদের ভক্তি, শ্রদ্ধা ও নম্রতা প্রদর্শন করবে এবং তাদের চাহিদা ও মতামতকে অগ্রাধিকার দেবে। ফলশ্রæতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সামাজিক যোগাযোগ রক্ষায় নবীনরা কিছুটা হলেও পিছিয়ে পড়ছে। নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জনের পাশাপাশি নবীনদের যেমন প্রবীণদের জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতাকে এড়িয়ে চলা উচিত নয়, প্রবীণদেরও তেমন নবীন যুবকদের অনভিজ্ঞ বা স্বল্প জ্ঞানের অধিকারী হিসেবে দেখা উচিত নয়। উভয় প্রজন্মেরই অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং শক্তি রয়েছে, যা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ। একটি সাধারণ লক্ষ্য অর্জনের জন্য নবীন ও প্রবীণ উভয় প্রজন্মেরই একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে একে অপরের শক্তিকে কাজে লাগাতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে নতুন নতুন প্রযুক্তিকে আলিঙ্গন করার প্রবণতা অনেক বেড়েছে, বিশেষ করে নবীনদের মাঝে। প্রবীণরা নতুন এই ভাবধারার সঙ্গে কম স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন, যা ডিজিটাল বিভাজন তৈরি করছে। ডিজিটাল এই বিভাজন দূর করার পাশাপাশি ডিজিটাল সাক্ষরতা এবং উদ্ভাবনী প্রচার এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করতে নবীন ও প্রবীণদের একসঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে অসঙ্গতি, দুর্নীতি, অসমতা এবং উগ্রবাদের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রবীণ ও নবীনদের যোগসূত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে জ্ঞান, সম্পদ এবং দক্ষতা ভাগাভাগির পাশাপাশি একটি সাধারণ লক্ষ্য অর্জন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর এটি সরকারি উদ্যোগ এবং নীতিমালা বাস্তবায়নের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং কমিউনিটি সংস্থাগুলোর মধ্যে অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব।
কাজেই সবার জন্য টেকসই, ন্যায়সঙ্গত এবং সমৃদ্ধ একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সম্মিলিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে নবীন ও প্রবীণদের একসঙ্গে কাজ করা, একে অপরের কাছ থেকে শেখা এবং একে অপরের শক্তিকে কাজে লাগানো অপরিহার্য। এতে আন্তঃপ্রজন্মীয় সংলাপ এবং সহযোগিতার পাশাপাশি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। আর তাতেই কেবল বাংলাদেশ একটি স্মার্ট ও প্রগতিশীল জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে পারবে।

ইশতিয়াক আহমেদ মজুমদার : অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক পিএলসি
Email: [email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়