৫ মাস পর ডেঙ্গুতে মৃত্যুশূন্য, নতুন রোগী ১৭৯

আগের সংবাদ

প্রতীক পেয়েই প্রচারযুদ্ধ

পরের সংবাদ

দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩ , ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ

১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে প্রাণপণে যুদ্ধ করে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি পৃথিবীর ভূখণ্ডে ‘বাংলাদেশ’ নামের একটি নতুন দেশের সৃষ্টি করে। এই যুদ্ধে সর্বাত্মক নেতৃত্ব দেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ দেশের সব মানুষের প্রিয়নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বন্দি করে পশ্চিম পাকিস্তানের এক অন্ধকার কারাগারে নিয়ে যায়। ফলে প্রিয়নেতাকে গ্রেপ্তার করায় পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত করার জন্য মুক্তির সংগ্রামকে আরো বেগবান করে। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সেøাগানের পাশাপাশি ওই সময় অত্র ভূখণ্ডের মানুষের আরো একটি সেøাগান বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তাহল- ‘শেখ মুজিবুর, শেখ মুজিবুর- মুক্তি চাই, মুক্তি চাই’
পূর্ব পাকিস্তানের লাখ লাখ মানুষ তৎকালীন সময়ে এই সেøাগান ধ্বনি দিয়ে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করত। প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হানাদার বাহিনীরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বন্দি করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে গেলেও তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই তার ৭ মার্চের ভাষণে পূর্ব পাকিস্তানকে কীভাবে মুক্ত করা যায় তার সমস্ত দিকনির্দেশনা দিয়ে গিয়েছিলেন। ফলে মুক্তিযুদ্ধ চলেছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপন গতিতেই। বাংলাদেশের যে মুক্তির সংগ্রাম শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে। অনেক রক্তগঙ্গা পেরিয়ে লাখ লাখ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তা শেষ হয় অর্থাৎ ওই দিন বাঙালি জাতি তাদের বিজয়ের সোপানে পৌঁছে যায়, আর বিশ্ব মানচিত্রে যুক্ত হয় ‘বাংলাদেশ’ নামের একটি নতুন দেশের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাভ করে বিশ্বনেতার মর্যাদা।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, যে নেতা একটি জাতিকে একটি দেশ এনে দিয়েছে সে নেতাকে বাংলাদেশের কিছু অকৃতজ্ঞ এবং জঘন্য মানুষ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে সপরিবারে হত্যা করে। ঠিক এই কারণেই যে অসাম্প্রদায়িকতার মূলমন্ত্র দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, তা মাঝপথে হোঁচট খায়। প্রতিক্রিয়াশীলরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আর স্বাধীন বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেয় সা¤প্রদায়িকতার বিষবাষ্প এবং অত্যাচারিত হতে থাকে ভিন্ন ধর্মের মানুষ। একসময় এ দেশকে প্রতিক্রিয়াশীলদের এতই আস্ফালন বেড়ে গিয়েছিল যে তারা একেবারে সুস্পষ্টভাবেই রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রের সংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এদেশে তাদের সরব অবস্থানের কথা জানান দিতে থাকে। এরা ভুলে যেতে থাকে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবারই রক্তে এদেশ স্বাধীন হয়েছে ফলে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। অবশেষে বিভিন্ন প্রগতিশীলদের আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ আরো কিছু দলের আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেও সাম্প্রদায়িক শক্তি বারবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিনষ্ট করতে বিভিন্ন ঘটনা ঘটাতে থাকে এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের অবস্থান স্পষ্ট থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ের কিছু মধ্যম সারির নেতা এবং কর্মীরা দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজে জড়িয়ে পড়ে এর এ কারণে কিছু নেতাকর্মীদের দল থেকে বহিষ্কার এবং রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার হলেও তারপরও অন্যদল থেকে হুট করে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নেতা বনে যাওয়ারা এসব কাজে জড়িত থেকে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করার কাজে লিপ্ত থাকে।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিষয়ে বেশ কঠোর অবস্থানে থাকলেও তবুও দেশে দুর্নীতি চলছে। বলতে গেলে দেশের প্রতিটি সেক্টরে এখন দুর্নীতি। প্রকৃতপক্ষে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে শুধু প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না, দেশে রাজনৈতিক দল, প্রশাসন এবং দেশের সাধারণ মানুষ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তা না হলে দেশকে সহজে দুর্নীতিমুক্ত করা যাবে না। অসাম্প্রদায়িক এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে হলে সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে এ দেশের তরুণ প্রজন্মকে। কারণ তারাই দেশের ভবিষ্যতের কর্ণধার। তরুণদের মেধা আর মননশীলতাই পারে কোনো সমাজকে আলোর পথে নিয়ে যেতে। সব কূপমণ্ডূকতা থেকে বের হয়ে এসে তরুণদের দেশ অগ্রগতির কাজে এগিয়ে যেতে হবে।

রতন কুমার তুরী : কলেজ শিক্ষক ও লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়