মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪০

আগের সংবাদ

মাঠের লড়াই জমবে এবার : আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু আজ থেকে > মোট প্রার্থী ১৮৯৬ > আ.লীগ ২৬৩, জাপা ২৮৩

পরের সংবাদ

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা আর ঝুলে থাকা নয়

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগ সরকার টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা না হওয়া দুঃখজনক। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় দুই পর্বে ৩৩৪ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম প্রকাশ করেছে। তৃতীয় পর্বের কাজ চলছে ঢিমেতালে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গত বছর ১৪ ডিসেম্বর বলেছিলেন, ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের আগেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে। এখনো সেই তালিকা প্রকাশ না হওয়া দুঃখজনক। প্রতি বছর ঘটা করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে দালিলিক কাজ কিছুই হয়নি। জানা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নে গঠিত যাচাই-বাছাই কমিটি গঠন করা হয় ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর। ১১ সদস্যের কমিটির সভাপতি মন্ত্রণালয়ের সচিব। সচিব বারবার বদলি হওয়াতে কাজটি এগুচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। দেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানি শাসকচক্রের অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে দিকনির্দেশক এবং সোচ্চার কণ্ঠ। অসাম্প্রদায়িক চেতনা, মানবিক মূল্যবোধ, সর্বোপরি একটি সুখী-সমৃদ্ধ প্রগতিশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষা তারা লালন করতেন। পাকিস্তানি কুচক্রী ও এ দেশে তাদের দোসর ধর্মান্ধ গোষ্ঠী যখন আঁচ করতে পারল বাঙালির স্বাধীনতা সমাসন্ন, তখন তারা জাতির দিকপালদের হত্যা করল যেন বাঙালি জাতি প্রতিরোধ শক্তি হারিয়ে ফেলে; যেন সদ্য স্বাধীন দেশটি সুস্থ চেতনা ও বিচার-বুদ্ধির পথভ্রষ্ট হয়ে নিঃস্ব, দুর্বল ও নির্দেশনাহীন হয়ে পড়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব নয়, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে অঙ্কুরেই দুর্বল করে দিতে এক হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের তাদের বাসা থেকে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। সারাদেশে কতজন বুদ্ধিজীবী এমন বর্বর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই কারো কাছে। বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্নভাবে তালিকা করার চেষ্টা করছে। বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময় ১৯৭২ সালে প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৭০ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর একটি তালিকা হয়েছিল। বর্তমান সরকার ২০২১ সালের ২৫ মার্চ প্রথম পর্বে ১৯১ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম প্রকাশ করা হয়। গত বছরের ২০ জুন ১৪৩ জনের দ্বিতীয় পর্বের তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এখন তৃতীয় পর্বের কাজ চলছে। আরো কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তালিকা হয়েছে। কিছু বেসরকারি উদ্যোগেও গবেষণা হয়েছে, সে তালিকাও সহায়ক হতে পারে। বাংলাপিডিয়ার হিসাব বলছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় ১ হাজার ১১১ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল ঢাকায়, ১৪৯ জন। সংখ্যার দিক থেকে বিবেচনা না করে যদি জনসংখ্যা আর মৃত্যুর হার হিসেবে হিসাব করা হয়, তাহলে ঢাকার বাইরে জেলাতে আরো বেশিসংখ্যক বুদ্ধিজীবী হত্যার তথ্য বেরিয়ে আসবে। শুধু ১৪ ডিসেম্বর নয়, বরং ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে বাঙালিদের ওপর গণহত্যার পর থেকে শুরু করে পরবর্তী ৯ মাস ধরে চলা মুক্তিযুদ্ধ- পুরোটা সময়েই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছে। ওই সময়কার নিহতদের তালিকাও প্রণয়ন জরুরি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়