মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪০

আগের সংবাদ

মাঠের লড়াই জমবে এবার : আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু আজ থেকে > মোট প্রার্থী ১৮৯৬ > আ.লীগ ২৬৩, জাপা ২৮৩

পরের সংবাদ

অদ্ভুত উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

গিজগিজে মানুষের ভিড় প্রেস ক্লাবের সামনে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বিএনপির কর্মসূচিতে ওই গিজগিজে মানুষের ভিড়ে প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় বাতাসও ঢুকতে পারছে কিনা সন্দেহ। এরা কারা? বিএনপির নেতাকর্মী? না, তাদের অধিকাংশই জেলে। বাকিরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে পুলিশ-র‌্যাবের হাত থেকে বাঁচতে। তারা তো আর মানবাধিকার দিবসের সমাবেশে এসে ধরা খেতে রাজি না। তাই তারা আসেনি। তাহলে ওই বিপুল ব্যাসার্ধের মানুষ কারা? এর একটাই সহজ উত্তর- এরা জনগণ। বিএনপির আন্দোলনে তারা উজ্জীবিত। আর তারা সরকারের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষুব্ধ। দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষের সংখ্যা যে পরিমাণই হোক, তারাই তো রাজধানীর কাজের মানুষ। তারাই তো রোজগারে মানুষের সহায়। তারাই তো রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, মুঠে-দোকানি, ফুটপাতের পান-বিড়ি-সিগারেট বিক্রেতা, কাটা কাপড়ের দোকান হকার। এরাই সবচেয়ে ক্ষুব্ধ সরকারের ব্যর্থতায়। এরাই পুলিশের গুতো-নাতা খায়, আওয়ামী-ছাত্রলীগের ফুটপাত দোকানিদের কাছে থেকে চাঁদা তুলে নেয় রাতদিন।
তারাই মানবাধিকার পাওয়ার আন্দোলনে শরিক হয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, বিএনপির মানবাধিকার আন্দোলনে এসেছে প্রতিবাদ জানাতে। এদেরই ঢল সেখানে, সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ের পশ্চিম পাশের আগুন-সেøাগান দিচ্ছে।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, সেটা আওয়ামী সরকার ও দলীয় নেতারা বুঝতে পারছেন না। তারা অন্ধ হয়ে আছেন ক্ষমতার লোভে। আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে যাওয়ার জন্য আসন ভাগাভাগিতে। আওয়ামী লীগ যে একপেশে নির্বাচনের জন্য জাতীয় পার্টিকে কবজা করেছে। বিএনপি থেকে যারা এসেছেন (এ পর্যন্ত দুজন এসেছেন) তাদের দল গড়ে দিয়ে বিরোধী দল সাজানোর চেষ্টা করছে। বাইরে থেকে এটাকে জাঁকজমকপূর্ণ মনে হলেও আসলে ভেতরে তা শূন্য। কারণ আওয়ামী লীগের সমান বা এখন আওয়ামী লীগের চেয়েও বেগবান ও শক্তিশালী, বিপুল জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচনের বিরোধিতা করছে তত্ত্বাবদায়ক সরকার কায়েমের লক্ষ্যে এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগ চেয়ে। সেখান থেকে তারা একচুলও নির্বাচনের সাজানো নাটকের ভেতরে মাথা গলায়নি। বিএনপিকে ভেঙে দশ টুকরা করলেও যে আসল বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শচুৎ হবে না, এটা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হতে হয় না। জীবন মরণের প্রশ্নই কেবল নয়, দেশ ও জনগণের সাংবিধানিক অধিকার কায়েমের লক্ষ্যেই দেশের প্রান্তিক জীবনকে সঙ্গে নিয়ে উঠে এসেছে রাজধানী কেন্দ্রে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না এবং তারাই এসেছে, যারা উন্নয়নের জোয়ারে বিশ্বাস করে না। কারণ তারা কোনো রকম উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছে না। তাদের কৃষক-জীবনের দুঃখ-দুর্দশা ঘোচানোর মিথ্যা গীত শুনতে শুনতে আজ তারা ক্লান্ত।
আজ তারা জেগে উঠেছে। এই জাগ্রত জনতাকে নদীর তলদেশে তৈরি টানেলে ঢোকানো যাবে না। পদ্মা সেতু দিয়ে ১৭ কোটি মানুষ যাতায়াত করবে না, যা প্রবৃদ্ধি হবে ওই দুটি অবকাঠামোর মাধ্যমে, তা পরিমাণে যৎসামান্য। দেখার নেশা ও চোখের নেশা কেটে গেলে যখন ঋণের টাকা সুদে-মূলে ফেরত দিতে শুরু হবে, সেই ভাটার টান সহ্য করার মতো ক্ষমতা কি আছে সরকারের? যেসব উন্নয়ন অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে, সেগুলো দিয়ে যে পরিমাণ অর্থ জিডিপিতে যুক্ত হবে তাকে ‘মশা মারতে কামান দাগা’র মতো বিশাল অর্জনের মতোই মনে হবে। গ্রামের মানুষের মুখে ‘যত গর্জে তত বর্ষে না’ বলে যে প্রবাদ চালু আছে, বর্তমান সরকারের বিতর্কিত কাজ, বিশেষ করে মানবাধিকার দমন ও হরণে, বিরোধী দলকে রাজনৈতিক অধিকার চূর্ণ করে দিয়ে যে নির্বাচনের আয়োজন করেছে, তাকে টাইরান্ট সরকারের টাইরান্ট নির্বাচন বলে তকমা দেয়া যায়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর যারা ক্ষমতায় গিয়েছিল, তারা বিবেকবর্জিত বলেই ক্ষমতার আসনগুলোকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পদের মতো ভেবেছিলেন। তাদের লাল্লু-পানজুরা লুটের একটি নহর খুলে দিয়ে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিয়েছে। সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে সরকারের চামচারা যখন বলেন যে বিএনপির আমলে ৭ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিল আর তারা ৪৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে গিয়েছিলেন রিজার্ভ। কিন্তু তারা একবারও বলেন না যে প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিব, প্রেসিডেন্ট জিয়া এবং প্রেসিডেন্ট এরশাদের আমলের পর খালেদা ও হাসিনার শাসনামলসহ মোট ৩৫ বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা। আর গত ১৫ বছরে সেই ঋণ খেলাপির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকায়। এই যে ‘ঋণখেলাপি উন্নয়ন’ যে ঘটিয়েছেন স্বয়ং সরকার ও তার বশংবদ সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তারা, সেই লুটের কোনো জবাব দেন না তারা। দুর্নীতির রাঘববোয়াল ছেড়ে দিয়ে যারা দেশ চালান, তারা না জনগণের প্রতিনিধি না ভোটদাতাদের। তারা তো বিনা ভোট ১৫৩ জন নির্বাচিত ঘোষণা করে ক্ষমতায় আর দিনের ভোট রাতে সম্পন্ন করে ক্ষমতার মসনদের বসে প্রমাণ করেছেন তারা ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন। এবারো আরেকটি ভোটারবিহীন ও বিরোধী দল বিহীন নির্বাচন করার জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। কিসের বিনিময়ে জাতীয় পার্টিকে পুনরায় প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় বসাতে চাইছে সরকার, যা জাতীয় জীবনে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলারই জন্ম দেবে? দেশের অধিকাংশ মানুষ এটা চায় না, এটা কি বোঝার মতো লোক আছে সরকারের মসনদে?

দুই.
লাইবেরিয়ার রাজধানী শহরের মেয়রকে তুলে নিয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। তার অপরাধ, তিনি আপদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত, বিরোধীদের দমনে অমানবিক ও দলনে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। হিউম্যান রাইটস হরণের অভিযোগ পাহাড় সমান তার বিরুদ্ধে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বহুবার তাকে সতর্ক করেছিল। বন্ধ করতে অনুরোধ করেছিল ওই সব দমন-দলন আর মানবাধিকার হরণ না করতে। কিন্তু তিনি ড্যাম কেয়ার করেছেন। তিনি তখনকার ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় প্রধান ছিলেন। নির্বাচনে তার দল হেরে গেলে, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র তাকে তুলে নিয়ে যায়।
খবরটা পড়ে চমকে উঠলাম। মনে পড়ল লাতিন আমেরিকার পানামার সেনাপ্রধান নরিয়েগার কথা। নরিয়েগা মাদক চোরাচালনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তাকে বারবার সতর্ক করার পরও নরিয়েগা সংশোধনের পথে আসেননি। শেষে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে কুড়ি বছরের জন্য জেলে পোরে দেয়। কুড়ি বছর পর সে বেরিয়ে নিজ দেশে ফেরে। যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রকাশ্যে মাস্তানি তাদের রাজনৈতিক সরকারের কূটনৈতিক বিধিবিধান ও চর্চার অধীন। তারা প্রকাশ্যেই অন্য রাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ব্যাপারে নাক গলায়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বাধা হিসেবে যা মনে হবে যুক্তরাষ্ট্রের, তাকে কিংবা সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এবং ব্যক্তির ওপর ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দিন কয়েক আগে ১৩টি দেশের ৩৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেই তালিকায় অবশ্য বাংলাদেশ নেই। যদিও বিরোধী দল ও তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দমনে হাসিনা সরকারের জিরো টলারেন্স আমরা দেখে চলছি। গত ছয় কি আট মাসে এবং ২৮ অক্টোবরের পর থেকে ব্যাপকভাবে বিরোধী দলকে মিটিং-মিছিলে পুলিশি হামলা, ছাত্রলীগের হামলা, ভাঙচুর, আগুন জ¦ালিয়ে বিরোধীদের নামে মামলা দিয়ে জেলে পুরে, আইনি ব্যবস্থায় জেলে ঢুকিয়ে মামলা ও আটকের মাধ্যমে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে রাজনৈতিক অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যাদের নামে গায়েবি মামলা দিয়েছে, তারা যাতে কোনোভাবেই আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, এটাই মূল উদ্দেশ্য। বিএনপি যদি নির্বাচনে আসেও তারপরও যাতে তাদের অবস্থা ভাঙাচোরা থাকে, সেটাই আওয়ামী রাজনীতির রাজনৈতিক দর্শনও। অন্যকে ভাঙা, গুঁড়িয়ে দিয়ে নিজেরা ক্ষমতায় থাকা, এই নীতিতে অবিচল লীগ রাজনীতির স্বৈরচারিতা আমরা দেখছি। নির্বাচনের একপেশে দৃশ্য দেখে যে দেশের জনগণ হতাশ, এটা শোনা ও বোঝারও কোনো বিবেক তাদের চেতনায় আছে বা কাজ করে না- এটা প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। আওয়ামী নেতৃত্ব পরিণাম না ভেবেই নিজেদের ক্ষমতার শীর্ষে নিয়ে গেছে। জনগণের উপকারে আসুক বা না আসুক, তাদের দেখানোর জন্য ঢাকা মহানগরকে উন্নয়নের জ্যামে পরিণত করেছে। উন্নয়নের জ্যাম কি রকম তা দেখার জন্য বিদেশিদের আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে।
গিয়েছিলাম একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যশোহর বা যশোর শহরে। পদ্মা সেতু পেরিয়ে শেখ মুজিবুব রহমান মহাসড়ক ধরে বেশ আনন্দেই গেলাম গোপালগঞ্জের সাম্পান রেস্তোরাঁ পর্যন্ত। এর পরের সড়কগুলোর অবস্থা তেমন ভালো নয়, আবার খারাপ হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়নি। ট্রাক ও বাসচালকদের অনৈতিক ড্রাইভিং সড়ক-মহাসড়কের দশা কাবু করে দেয়। ট্রাফিক আইন ও রীতিনীতি মেনে কোনো যানবাহনের চালকই মানে না। এমনকি ট্রাফিকের নিয়ন্ত্রকরাও ওই দায়িত্বে তৎপর নয়। তারা কেবল অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের ব্যাপার যথেষ্ট স্মার্ট।
ফেরার সময়টি সন্ধ্যা পেরিয়ে গেল। আমাদের গাড়িগুলো বেশ ভালোভাবেই ফিরে এলো সাম্পান রেস্তোরাঁয়। সেখান থেকে বড়জোর ১ ঘণ্টায় মহানগর ঢাকার পাদদেশ হানিফ ফ্লাইওভার পর্যন্ত। এসেই পড়লাম মহাজ্যামে। সেখান থেকে রামপুরার বনশ্রীর বাসা পর্যন্ত আমাদের পৌঁছাতে সময় লাগলো সোয়া দুই ঘণ্টা।
আরেক দিনের বর্ণনা দিই। বিআরটির এক্সপ্রেস ফ্লাইওভারে ওঠে ১৫ মিনিটে পৌঁছালাম ফার্মগেটে। সেখান থেকে আফতাব নগরে পৌঁছাতে লাগল দেড় ঘণ্টা। যারা শুনলেন তারা বললেন, আপনাদের কপাল ভালো যে মাত্র দেড় ঘণ্টায় বাসায় যেতে পেরেছেন সেদিন। আমরা প্রতিদিনই বাসে, মিনিবাসে, এয়ারকন্ডিশনড বাসে যাতায়াত করি। তারা আরো বেশি সময় ব্যয় করে। শুক্রবারের মধ্যরাতেও দেখেছি সন্ধ্যা থেকে রাত ১২টার পরও গুলশানের বিভিন্ন সড়কে জ্যাম। সাধারণ মানুষ যেসব সড়কের যাত্রী, তাদের দশা আরো খারাপ।
এ কারণেই বলেছি সরকারের উন্নয়নের সব স্থাপনা আমাদের তেমন কোনো সুযোগ দিতে পারেনি। তবে সরকার আশা জাগিয়ে দিয়েছে, চাইলে সামগ্রিক পরিকল্পনার অধীনে কাজগুলো সম্পন্ন করা গেলে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

তিন.
চায়ের দোকানে আমরা প্রায়ই বসি। সেখানে নাগরিকের প্রকৃত সত্য উচ্চারণ শোনা যায়। নারায়ণগঞ্জের তৈমূর আলম খন্দকার তৃণমূল বিএনপি নামের একটি প্রায় ভূঁইফোঁড় রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। ওই দলটি গড়েছিলেন বিএনপির সাবেক নেতা ও মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তিনি গত হয়েছেন। তার কন্যা ওই দলটি পুনরুজ্জীবিত করে শমসের মবিন চৌধুরীকে নেতৃত্বে বসিয়েছেন। কূটনীতিক থেকে রাজনীতিক মবিন কতটা রাজনীতি বোঝেন, তা নিয়ে সন্দেহ করাই যায়। রাজনৈতিক মাঠে তার তেমন কোনো উপস্থিতি নেই বা ছিল না। এই দলটি রাতারাতি ৩০০ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। ছত্রছায়াটি যে আওয়ামী লীগের সেটা না বললেও চলে। এরা দুজনই দল থেকে বহিষ্কৃত পার্শ্বচরিত্রের নেতা। পার্শ্বচরিত্র কখনোই কেন্দ্রীয় নেতা হতে পারে না। তাদের সেই রকম ড্যাশিং রাজনৈতিক ইমেজ নেই, যেটা জেনারেল জিয়া ও এরশাদের ছিল।
চায়ের দোকানের আম পাবলিক বলে ওঠে। জিজ্ঞেস করে হেরা কত টাকায় বিক্রি হইল, সেটাই হলো আসল লাভ। আওয়ামী লীগের এখন নাম দরকার। জেনারেল ইবরাহিম ক্লিন ইমেজের রাজনীতিক। তিনিও যোগ দিয়েছেন নির্বাচন করবেন বলে। এর আগে জনগণের পক্ষে অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। কত টাকায় বিকাইলেন ভাই? ১৪ দলের অধিকাংশই কিংস পার্টির ইমেজের। মূল দল তিনটি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জাতীয় পার্টি। বাকিরা এক আসনে জেতার মতো দল নয়। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নেই। তাই ওই দলকে রাজনৈতিক দল হিসেবে গণ্য করা যায় না। চরমোনাই পীরের দলটিকে অনেক বড় বলেই মনে হয়। তাদের মুরিদভিত্তিক ভোটব্যাংকও আছে। সমাজে তাদের প্রভাবও অনেক। অন্যান্য ইসলামী নামের দলকে কাউন্ট করতে হয় এ কারণে যে তারা সমাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সেই প্রভাব অবশ্যই রাজনীতিতে যোগ হয়। অধিকাংশ ইসলামী দল বিএনপির সঙ্গে সহমত পোষণ করে। ফলে ভোটের রাজনীতিতে আওয়ামী ক্ষমতাসীনদের চেয়ে বিএনপির ভোট যেমন বেশি, তেমনি দ্রব্যমূল্য আকাশে উঠে যাওয়ায়, দরিদ্র মানুষের আওয়ামী প্রীতি নষ্ট হয়ে গেছে। যদি নির্বাচনের মূল স্টেকহোল্ডার জনগণকে ভোট প্রয়োগের সুযোগ দেয়া হয়, তাহলে বিএনপি জোট জিতে যাবেই। সেটা আওয়ামী লীগ ভালো করেই জানে। সেই জানা থেকেই কি ‘কী করে বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখা যায় এবং নির্বাচনে এলেও যাতে প্রার্থী দিতে না পারে, সে জন্য জেলা, উপজেলা, বিভাগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হাজারেরও বেশি নেতাকর্মীকে জেলে পুরে রেখেছে। কাউকে কাউকে কনভিক্টটেড করেছে, যাতে কয়েক বছর জেলে থাকতে হয়।

চার.
এই রাজনীতি অচলই কেবল নয়, রুটসলেস। এই শেকড়হীন রাজনীতির মূল শক্তি আমলা, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি এবং এদের দলীয় ক্যাডার করে তোলা। গত ১৫ বছরে এদের নানাভাবে ঘুষ দিয়ে দলের প্রতি লয়াল করেছে। আর কতকাল চলবে এই দুর্নীতির বানভাসি?

ড. মাহবুব হাসান : সাংবাদিক ও কলাম লেখক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়