বিজিএমইএ নির্বাচন মার্চে

আগের সংবাদ

জাপার আসনে নৌকা প্রত্যাহার! ৩০ থেকে ৩৫ আসন প্রত্যাশা জাতীয় পার্টির > চলছে দেনদরবার

পরের সংবাদ

৯ বছরে শাহজাহান ভূঁইয়ার সম্পদ বেড়েছে ৮৮ গুণ : ৭৪ লাখ টাকা ঋণ গোপনের অভিযোগ

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : ২০১৪ সালে মো. শাহজাহান ভূঁইয়ার ২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের ৩ বিঘা জমি ও যৌথ মালিকানায় ১২ বিঘা জমি ছিল। বর্তমানে তার ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার ভবন ও ২৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা মূল্যের বাড়ি আছে। স্থাবর সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬৩০ টাকা। এই হিসাবে গত ৯ বছরে তার স্থাবর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৮৮ গুণ। যদিও এবার আর কোনো জমি থাকার কথা উল্লেখ করেননি তিনি।
শাহজাহান ভূঁইয়া এবার নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়েছেন। তবে দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। ২০১৪ ও ২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও এবারের সংসদ নির্বাচনে দেয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে তার আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির তথ্য পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্ব›দ্বী এক প্রার্থী।
হলফনামার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৪ সালে শাহজাহান ভূঁইয়ার বার্ষিক আয় ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ব্যবসার মুনাফা, বাড়ি, দোকানভাড়া, সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাত থেকে এখন তিনি বছরে আয় করছেন সাড়ে ৮১ লাখ টাকা, যা ২০১৪ সালের তুলনায় প্রায় ১৭ গুণ বেশি। তবে তার হাতে এখন নগদ টাকা নেই। ব্যাংকেও কোনো টাকা নেই তার।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে শাহজাহান ভূঁইয়ার কাছে ২৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা নগদ এবং ২৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা ব্যাংকে জমা ছিল। ২০১৯ সালে নগদ ১০ লাখ টাকা এবং ব্যাংক ও

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ ৫ হাজার টাকা ছিল। তবে এবারের হলফনামা অনুযায়ী, শাহজাহান ভূঁইয়ার বর্তমানে কোনো নগদ টাকা নেই। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও কোনো টাকা নেই।
৯ বছর আগে তার স্ত্রীর নামে ৪৫ ভরি স্বর্ণ ছিল। ২০১৯ সালেও সেই স্বর্ণের কথা হলফনামায় উল্লেখ করলেও এবার তিনি তা উল্লেখ করেননি। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় তার দুই লাখ টাকা মূল্যের আসবাব ছিল। চার বছর পর এসে মাত্র ৩৫ হাজার টাকার আসবাব আছে তার ঘরে। চার বছর আগে ব্যবহার করা দেড় লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রীর জায়গায় এখন ব্যবহার করেন ৩০ হাজার টাকার সামগ্রী। হলফনামা অনুযায়ী এসএসসি পাস শাহজাহান ভূঁইয়া তিনটি হত্যা ও একটি চুরির মামলার আসামি ছিলেন। সবগুলো মামলা থেকেই তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। তার নামে বর্তমানে ব্যাংকঋণ আছে সাত লাখ টাকা।
তথ্য গোপনের অভিযোগ : আওয়ামী লীগের নেতা শাহজাহান ভূঁইয়া হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা। গত সোমবার সকালে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহজাহান ভূঁইয়ার মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করেন। তার প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের অভিযোগ করেন, শাহজাহান ভূঁইয়া হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন। তিনি শাহজাহান ভূঁইয়ার নামে থাকা কয়েকটি ব্যাংক স্টেটমেন্টের কাগজ দেখান। হাবিবুর রহমান দাবি করেন, তার জানামতে একটি বেসরকারি ব্যাংকে শাহজাহান ও তার ছেলে সাইফুল ইসলামের বর্তমানে অন্তত ৭৪ লাখ টাকা ঋণ আছে, যা তার হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি। একটি সরকারি ব্যাংক হিসাবেই তার নামে সাড়ে ১৫ লাখ টাকা আছে। শাহজাহানের স্ত্রীর নামে ৪৫ ভরি গয়না আছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হাবিবুর তথ্য গোপনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে শাহজাহান ভূঁইয়া স্বীকার করেন তার নামে সাত লাখ নয়; বরং অন্তত ৭০ লাখ টাকা ব্যাংকঋণ আছে। এসব তথ্য হলফনামায় গোপন করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো কিছু গোপন করা হয়নি। সবই দেয়া হয়েছে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়