পীরেরবাগে ভাঙারির দোকানে বিস্ফোরণে দগ্ধ এক

আগের সংবাদ

কী বার্তা পেল জাতীয় পার্টি : গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জি এম কাদেরের বৈঠক, আসন সমঝোতার আলোচনা

পরের সংবাদ

ফুটবল মাঠে অনাকাক্সিক্ষত যত ঘটনা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

২০২৬ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে লাতিন অঞ্চলে বাছাই পর্বে বাংলাদেশ সময় গত ২২ নভেম্বর সকালে মুখোমুখি হয় বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। মারাকানায় সেদিন ম্যাচ শুরুর আগে গ্যালারির দক্ষিণ অংশে দুই দলের সমর্থকরা বিবাদে জড়ান। পরে পুলিশ এসে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের ওপর লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে, যা থামাতে দুই দলের খেলোয়াড়ই গ্যালারির দিকে ছুটে যান। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত হন। তবে এমন ঘটনা ইতিহাসে এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় এমন কলঙ্কময় পরিস্থিতির শিকার হয়েছে ফুটবলবিশ্ব। তেমনই কিছু ঘটনা নিয়ে তৈরি করা আজকের এই প্রতিবেদন।
ইন্দোনেশিয়া : ২০২২
ইন্দোনেশিয়ার একটি ফুটবল স্টেডিয়ামে গত বছরের ১ অক্টোবর উগ্র সমর্থকদের লক্ষ্য করে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপের পর পদদলিত হয়ে অন্তত ১২৫ জন মারা গেছেন। নিহতের সংখ্যা শুরুতে ১৭৪ জন বলা হলেও পরবর্তী সময়ে কর্তৃপক্ষ তা সংশোধন করে ও জানায়, এই ঘটনায় ১২৫ জন মারা গেছেন। ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ লিগের ম্যাচে আরেমা এফসি ও পারসেবায়া সুরাবায়ারের সে ম্যাচের শেষে পুলিশের সঙ্গে সমর্থকদের এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পূর্ব জাভার মালাং অঞ্চলের কানজুরুহান স্টেডিয়ামে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে। ম্যাচের সময় স্টেডিয়ামে ৪২ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিলেন, যা স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার ৪ হাজার বেশি। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপের পর দ্রুত স্টেডিয়াম থেকে বের হওয়ার সময় হতাহতের ঘটনা ঘটে।
মিসর : ২০১২
মিসরের পোর্ট সাইদ স্টেডিয়ামের ট্র্যাজেডিতে ওই বছরের ১ ফেব্রুয়ারিতে মারা গিয়েছিলেন ৭৪ জন ফুটবল ভক্ত। আহত হন পাঁচ শতাধিক। বিপর্যয় শুরু হয়, যখন স্থানীয় ক্লাব আল মাসরির সমর্থকদের সঙ্গে কায়রোর আল আহলি ক্লাবের সমর্থকদের মারামারি শুরু হয়। আল মাসরি ৩-১ গোলে জিতে গেলে তাদের হাজার হাজার সমর্থক মাঠের ভেতর ঢুকে পড়ে এবং এক পর্যায়ে আল আহলি ক্লাবের জন্য নির্ধারিত স্ট্যান্ডে লাঠিসোটা, পাথর নিয়ে হামলা চালান। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, পরিস্থিতি বুঝেও তারা স্টেডিয়ামের দরজা খোলেনি। ফলে মাঠের ভেতর বসে মার খেয়ে মরতে হয়েছে আল আহলির বহু ফ্যানকে।
দক্ষিণ আফ্রিকা : ২০০১
দক্ষিণ আফ্রিকার স্পোর্টস ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটেছিল ২০০১ সালের ১১ এপ্রিল জোহানেসবার্গ শহরের এলিস পার্ক স্টেডিয়ামে। পদদলিত হয়ে সেদিন মারা গিয়েছিলেন ৪৩ জন দর্শক, আহত হন আরো বহু লোক। স্থানীয় এক টুর্নামেন্টে সেদিন খেলা চলছিল দুই প্রতিদ্ব›দ্বী ক্লাব কাইজার চিফস এবং অরলান্ডো পাইরেটসের। মাঠের ভেতর ৬০ হাজার আসনের সব ছিল ভর্তি। কিন্তু বাইরে আরো ৩০ হাজার দর্শক ঢোকার চেষ্টা করছিল। এতে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে হতাহতের ঘটনাটি ঘটে।
যুক্তরাজ্য : ১৯৮৯
ওই বছরের ১৫ এপ্রিল ইংল্যান্ডের উত্তরে শেফিল্ড শহরের হিলসবারা স্টেডিয়ামে একটি ম্যাচ শুরুর আগেই ভিড়ের চাপে ৯৭ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৭৬৬ জন। পুলিশের ব্যর্থতাকেই ওই ট্র্যাজেডির জন্য দায়ী করা হয়। এফএ কাপের সেমিফাইনাল ম্যাচে সেদিন খেলা ছিল লিভারপুল এবং নটিংহাম ফরেস্ট ক্লাবের। গ্যালারিতে দুটো স্ট্যান্ড কানায় কানায় ভরে গিয়েছিল সেদিন। তারপরও কয়েক হাজার লিভারপুল ফ্যান মাঠের বাইরে ভিড় করেছিলেন। এক পর্যায়ে ভিড়ের চাপ থেকে বাঁচতে মাঠ থেকে কিছু দর্শক যাতে বের হয়ে যেতে পারেন, সে জন্য পুলিশ একটি গেট খুলে দেয়। কিন্তু তাতে হিতে বিপরীত হয়। বাইরে অপেক্ষমাণ শত শত সমর্থক সেই গেট দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে ঢুকে পড়লে পদদলিত হতে থাকেন লিভারপুল ক্লাবের বহু ফ্যান।
পেরু : ১৯৬৪
প্রাণহানির বিবেচনায় ফুটবল মাঠে সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি হয়েছিল পেরুতে ১৯৬৪ সালে। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে সে বছর টোকিও অলিম্পিকে কোন দেশ যাবে, তা নির্ধারণে ২৪ মে রাজধানী লিমার স্টেডিয়ামে খেলা হচ্ছিল স্বাগতিক পেরু এবং আর্জেন্টিনার কোয়ালিফাইং ম্যাচ। আর্জেন্টিনা এক গোল করার কিছুক্ষণ পর পেরু সেটি শোধ করলে উরুগুয়ের রেফারি তা নাকচ করে দেন। ক্রোধে ফেটে পড়েন স্বাগতিক দলের ফ্যানরা। এক পর্যায়ে দুজন সমর্থক মাঠে ঢুকে পড়লে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা শুরু করে। শত শত ক্ষুব্ধ দর্শক বেড়া টপকে মাঠের ভেতর ঢুকে পড়লে পরিস্থিতি বেসামাল হয়ে পড়ে। স্টেডিয়াম থেকে পালাতে গিয়ে পদদলিত হয়ে, ভিড়ের চাপে শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যান ৩২০ জন। আহত হন হাজারের বেশি মানুষ।

:: নাজমুস সাকিব আদিব

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়