রুহুল কবির রিজভী : দলছুটদের দিয়ে নতুন দল বানাচ্ছে সরকার

আগের সংবাদ

তারুণ্য অভিজ্ঞতা স্বচ্ছতা : ২৯৮ আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন ঘোষণা করল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ

পরের সংবাদ

পাঠ্যবই ছাপা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে গুরুত্ব দিতে হবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষার্থীদের হাতে নির্দিষ্ট সময়ে নতুন বই তুলে দেয়া সরকারের একটি চ্যালেঞ্জ, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। বলা যায়, নববর্ষে শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি বাড়তি আনন্দের দিন। দেশের প্রতিটি জনপদে চলে এ উৎসব। যদিও তাতে ছেদ পড়া শুরু হয়েছে গত বছর থেকে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবারো যথাসময়ে নতুন বই তুলে দিতে পারবে কিনা, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। জানা গেছে, মোট ৩১ কোটি নতুন বইয়ের মধ্যে প্রাথমিক স্তরের সব শ্রেণির বই ছাপা প্রায় শেষ। ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির বই সময়মতো ছাপা নিয়ে বিপাকে এনসিটিবি। ষষ্ঠ-সপ্তমের দুটি বইয়ের পাণ্ডুলিপি এখনো ছাপাখানায় দেয়া হয়নি। মাত্র শুরু হয়েছে অষ্টমের বই ছাপা। নবম শ্রেণির কোনো বইয়ের পাণ্ডুলিপি এখনো ছাপাখানায় পাঠানোই সম্ভব হয়নি। পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বলছে, বই ছাপার কাজের চুক্তির জন্য অর্থছাড় মিলছে না। ফলে ছাপাখানার মালিকদের টাকা দেয়াও সম্ভব হয়নি। ছাপাখানা কর্তৃপক্ষ কাগজ কিনতে পারছে না। সব মিলিয়ে টাকার অভাবেই থমকে আছে নবম শ্রেণির বই ছাপা। বিভিন্ন শ্রেণির আরো কয়েকটি বই ছাপার কাজও একই কারণে বন্ধ। গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একাধিক ছাপাখানার মালিক বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী বই ছাপার পর প্রকাশকরা বিল পাঠালে এনসিটিবি সেই বিল মঞ্জুর করবে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে অলিখিত নিয়ম হয়ে গেছে, বই ছাপার আগেই প্রকাশকদের টাকা দিয়ে দিতে হবে। এবার ‘আইবাস’ পদ্ধতিতে টাকা ছাড়ের সিদ্ধান্ত হলে প্রকাশকরা বই ছাপার আগে টাকা পাচ্ছেন না। এতে অনেক প্রকাশক টাকা না পেয়ে বই ছাপছেন না। অতীতে আমরা দেখেছি, বই বিপণন নিয়ে নানা ঘটনা। বিনামূল্যে বিতরণের বই কালোবাজারে বিক্রি, বইয়ের সঙ্গে নোট বই কিনতে অভিভাবকদের বাধ্য করার মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শ্রেণির বই বছরের পর বছর সময়মতো শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রকাশকরা। অন্যদিকে পাঠ্যপুস্তকের মান নিয়েও সংশয় ছিল। অস্পষ্ট ছাপা, নি¤œমানের কাগজ ব্যবহার করা হতো এসব পাঠ্যপুস্তকে। কিন্তু বিগত ১০ বছর যে ঝকঝকে ছাপা রঙিন বইগুলো শিক্ষার্থীর হাতে দেয়া হয়েছে, তাতে শিক্ষার্থীদের বই পাঠের আনন্দ বহুগুণ বেড়ে যায়। সদিচ্ছা থাকলে এসব অন্তরায় দূর করা যায়, সেটা প্রমাণ করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী এর আগে একাধিকবার শিক্ষাকে দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে অভিহিত করেছেন। এটি যে দারিদ্র্য মুক্তির কার্যকর অস্ত্র, তা প্রমাণিত হয়েছে শিক্ষা বিস্তারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দারিদ্র্য মুক্তির ঘটনায়। বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণসহ শিক্ষা খাতে বাজেটের এক উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ যে জাতির জন্য সত্যিকার অর্থেই লাভজনক তা বাস্তবতার নিরিখেই প্রমাণিত হয়েছে। তবে দেশে পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ ও বিতরণকে ঘিরে যে কায়েমি চক্র গড়ে উঠেছিল, তারা এখনো সক্রিয়। এ ক্ষেত্রে সরকারের অনমনীয় মনোভাবই প্রত্যাশিত। শিক্ষার মান নিশ্চিত সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলেও সে চ্যালেঞ্জ দক্ষতার সঙ্গেই মোকাবিলা করতে হবে। নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই পৌঁছানো নিশ্চিত হবে, বইয়ের মান ঠিক থাকবে- এমন প্রত্যাশা রাখছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়