সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনকে তিন নির্দেশনা

আগের সংবাদ

নতুন রক্ত সঞ্চালনে গুরুত্ব : তিনশ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত, আজ ঘোষণা > আসছেন শতাধিক নতুন মুখ

পরের সংবাদ

আবুল মাল আবদুল মুহিতের আমলাজীবন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

১৯৫৬ সালের ১০ জন বাঙালি সিএসপির সাতজনই কোনো না কোনো সময় মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। কারো পদবি মন্ত্রী, কারো উপদেষ্টা। সাতজনের একজন আবুল মাল আবদুল মুহিতের বর্ণাঢ্য আমলাজীবন। শেয়ারবাজার ধসসহ অর্থনীতির বিভিন্ন ধাক্কা সয়ে তিনি ২০০৯-১৯ পর্যন্ত অবিচ্ছিন্ন ১১ বার বাজেট পেশ করার দুর্লভ কৃতিত্বের দাবিদার। তার চেয়ে একবার এগিয়ে আছেন সাইফুর রহমান- বিচ্ছিন্ন তিন দফায় তিনি ১২ বার বাজেট ঘোষণা করেছেন। আবুল মাল আবদুল মুহিতকে (জন্ম ২৫ জানুয়ারি ১৯৩৪, মৃত্যু ৩০ এপ্রিল ২০২২) ছাড়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আর ছয়জন হচ্ছেন : কাজী ফজলুর রহমান, এ বি এম গোলাম মোস্তফা, এ এইচ এস কে সাদিক, এম কে আনোয়ার, মোহাম্মদ সাইদুজ্জামান এবং এ এম আনিসুজ্জামান। কাজী ফজলুর রহমান এবং এ এম আনিসুজ্জামান ছিলেন উপদেষ্টা। ১৯৫৬ ব্যাচের যে তিনজন মন্ত্রী হননি তারা হচ্ছেন : সালাহউদ্দিন আহমেদ, ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এবং কে জি এম লতিফুল বারী।
১৯৫৬-এর সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারী কাজী ফজলুর রহমান প্রশিক্ষণোত্তর সব পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত পর্যায়ে সবার মধ্যে প্রথম স্থানটি ধরে রাখেন, দ্বিতীয় স্থানে সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং কিছুটা নিচ থেকে উঠে এসে তৃতীয় স্থানে অধিষ্ঠিত হন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
১৯৫৬ সালের মোট ২১ জন সিএসপির ১১ জন তখনকার পশ্চিম পাকিস্তানের। তারা হচ্ছেন : সাফদার হোসেন, সাজ্জাদ-উল হাসান, মোহাম্মদ রফিক, আহমেদ রশিদ সিদ্দিকী, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আসাদ, সাঈদ আহমেদ, সৈয়দ শাহেদ হোসেন এবং মুজিবুর রহমান খান। তুলনামূলকভাবে পূর্বাংশের ১০ জন আমলাজীবনে এবং তাদের ৭০ শতাংশ মন্ত্রী জীবনে যেভাবে জাঁকিয়ে বসেছিলেন একই ব্যাচের পশ্চিমাংশের সিএসপিদের বেলায় তা ঘটেনি।
সুপিরিয়র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মুহিত ১৯৫৬-র শেষে যোগ দিলেন লাহোর সিভিল সার্ভিস একাডেমিতে। একাডেমির পরিচালক প্রাক্তন আইসিএস অফিসার জিওফ্রে বার্জেস। তিনি ঘোড়ায় চড়ে টহল দিতেন এবং ফাঁকিবাজ প্রতিক্ষণার্থীদের সাবধান করে দিতেন। তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের সারাদিন টাই পরে থাকতে বাধ্য করতেন আর প্রতি সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে ডিনার স্যুট বা কালো শেরওয়ানি তো বাধ্যতামূলক ছিলই। কাজী ফজলুর রহমান অবশ্য তার শিক্ষানবিস অধ্যায়ের ডায়েরিতে লিখেছেন, তিনি যোগ দিলেন বার্জেস সাহেবের গোয়ালে।
মুহিত অশ্বারোহণে ভালোই করলেন। দুষ্ট হিসেবে পরিচিতিও এতটাই প্রতিষ্ঠিত হলো যে অন্যের দুষ্কর্মের ভারও তার ওপর চাপতে শুরু করে। ১০ জানুয়ারি ১৯৫৭-এর একটি কৌতূহলোদ্দীপক ঘটনার কথা লিখেছেন কাজী ফজলুর রহমান। ‘একটু আগে একটা অত্যন্ত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেল। জিনিসটার জন্য অনেকাংশে আমিই দায়ী। ইউসুফ, মুজিব, রফিক (পশ্চিম পাকিস্তানি প্রবেশনার) তাসের জুয়া খেলছিল। আমি মেইন সুইচ বন্ধ করে দিলাম। এরা ভেবেছিল এটা মুহিতের কাজ। ইউসুফ ভুল বুঝে মুহিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করল। তারপর ইউসুফের সঙ্গে মুহিতের কথা কাটাকাটি। পিএমসি (প্রেসিডেন্ট মেস কমিটি) হিসেবে আমি সারা দলের নেতা। আমার উচিত ছিল তাদের ঝগড়া মিটিয়ে দেয়া। পরদিন একাডেমির বাইরে থাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির কাজ পরিদর্শনে এলে ডিনারের সময় মুহিত আর ইউসুফের বিবাদের অবসান ঘটে।
প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৫৭-এর ১৬ মে মুহিত ফিরে এলেন পদায়নের আদেশ নিয়ে। প্রবেশনার হিসেবে যোগ দিলেন কুমিল্লা কালেক্টরেটে। সঙ্গে আরো দুজন সিএসপি, বাঙালি সাইদুজ্জামান এবং পেশোয়ারের সাজ্জাদুল হাসান। জেলা প্রশাসক কেরামত আলী সিএসপি এবং চট্টগ্রাম বিভাগের কমিশনার ১৯৩৭ ব্যাচের আইসিএস পাঞ্জাবের হাসান তোরাব আলী (হাসান তোরাব বাংলার সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন, মুহিত মনে করেন তিনি বাঙালি হিসেবেই এ দেশে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও লেখক নিয়াজ জামান তারই কন্যা।)
শিক্ষানবিস পর্ব ভালোই কাটল। নিয়মিত পদায়ন হলো ফরিদপুর কালেক্টরেটে। যোগ দিয়ে বিদেশে প্রশিক্ষণ সেরে ৭ অক্টোবর ১৯৫৮ কর্মস্থলে ফিরে এলেন। জেলা প্রশাসক অবাঙালি আরেফ সিদ্দিকী সিএসপি। সেদিনই পাকিস্তানের ইতিহাসে দীর্ঘকালের জন্য প্রভাব সৃষ্টি করা একটি ঘটনা ঘটে গেল। প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দর মির্জা ফিরোজ খান নুন মন্ত্রিসভা বাতিল করে দিলেন। প্রথম পাকিস্তানি সেনাপ্রধান জেনারেল আইয়ুব খানকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করে সামরিক আইন জারি করলেন। সামরিক উপপ্রধানের সঙ্গে একজন সিভিলিয়ান সরকারের জনপ্রশাসনের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক আইসিএস আজিজ আহমেদও হলেন উপপ্রধান সামরিক আইন প্রশাসক। মুহিত লিখলেন, ‘বোঝা গেল যে পাঞ্জাবি স্বার্থান্বেষী একটি দুষ্টচক্র সারাদেশে তাদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা প্রয়োগ করার উদ্দেশ্যে সামরিক শাসন জারি করেছে। এটাও পরিষ্কার হয়ে গেল যে, সামরিক শাসনে পূর্ব পাকিস্তানের কোনোই অংশগ্রহণ থাকবে না।

ডোন্ট আস্ক স্মার্ট কোয়েশ্চেন
কুমিল্লা কালেক্টরেটে যোগ দেয়ার ঠিক পরদিন ৮ অক্টোবর সকালে জেলা প্রশাসক আরেফ সিদ্দিকী অফিসারদের ডাকলেন। স্যুট কোট পরে গম্ভীরভাবে সামরিক শাসনের কথা বললেন, জানালেন যে সংবিধান বাতিল হয়েছে। যশোর ক্যাপ্টনমেন্ট থেকে তাকে জানানো হয়েছে একজন সেনা কর্মকর্তা শিগগির ফরিদপুর পৌঁছবেই এবং তিনিই হবেন জেলার প্রকৃত শাসক- অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। তার অধীনে জেলা প্রশাসক হবে ডিএএসএ- ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর। জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হবে। যে কেউ তার অভিযোগ বাক্সে লিখিতভাবে ফেলবেন। সামরিক অফিসার এসে এসব খুলবেন এবং সুরাহা করবেন।
মুহিত তার বস জেলা প্রশাসককে প্রশ্ন করলেন, ‘সংবিধান যখন বাতিল হয়েছে তাহলে আমরা কীভাবে কাজ করব? আদালতই বা কীভাবে বসবে?’ জেলা প্রশাসকের দায় সদ্য চাকরিতে আসা তরুণ কর্মকর্তা মুহিতের বোঝার কথা নয়। উষ্মা নিয়ে আরেফ সিদ্দিকী বললেন, উড়হ’ঃ ধংশ ংসধৎঃ য়ঁবংঃরড়হ. অল্প সময়ের মধ্যে বৈঠক শেষ হয়ে গেল। মুহিত বইপত্র ঘেঁটে জানলেন বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তার জন্য সামরিক বাহিনীকে আমন্ত্রণ জানাবার আইনসম্মত পদ্ধতি রয়েছে। তবে এটাও সত্যি সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণ উদ্দেশ্য হয়ে থাকলে আমন্ত্রিত হওয়ার অপেক্ষায় থাকবে না। অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে ১৯৫৮ থেকে এ পর্যন্ত সব সামরিক সরকারের কর্মকাণ্ডের বৈধতা (স্বাধীনতা আন্দোলনকালীন ইয়াহিয়া সরকার বাদে) বড় বড় গণতান্ত্রিক বুলি আওড়ানোর পরও বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরাই দিয়ে থাকেন।
আইয়ুব খানের পরিকল্পনায় ইস্কান্দার মির্জাকে ক্ষমতাচ্যুত করে কিছুদিন গৃহবন্দি রেখে চিরদিনের জন্য পাকিস্তান ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। তিনি লন্ডনে আশ্রয় নেন। মুহিত লিখেছেন : তার থাকা-খাওয়ার জন্য তাকে বার্ষিক সম্ভবত ১২০০০ পাউন্ড পেনশন দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। জেনারেল মির্জার কাছে এই বেতনটি সন্তোষজনক মনে হয়নি। তিনি তখনকার দিনে লন্ডনের বিখ্যাত প্রথম ভারতীয় উন্নতমানের রেস্তোরাঁ ভিরোশ্রামীতে জনসংযোগ কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।…ভালো পেনশন নিয়ে একটি দেশের রাষ্ট্রপতির পদ থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর একটি রেস্তোরাঁর জনসংযোগ কর্মকর্তার দায়িত্ব নিতেও তার কোনো অনীহা ছিল না।’
১৯৫৯ সালের ১১ জুলাই তখনকার বাগেরহাট মহকুমার এসডিওর দায়িত্ব নেন। সংস্কৃতিমনা প্রশাসকের পক্ষে দলাদলির বাইরে থেকে পুরো মহকুমাকে মাতিয়ে রাখা সম্ভব ছিল। মুহিত তা-ই করেছেন। ১৯৫৯ সালে যে পুরনো দ্বিতল ভবনে এসডিওর অফিস ও এজলাস ছিল, ১৮৬০ সালের দিকে বাগেরহাটের ম্যাজিস্ট্রেট ও বাংলা উপন্যাসের প্রথম দিকপাল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সেখানেই বসবাস করতেন। এ বাড়িতেই ছিল তার এজলাস। ১৯৪৭-এর দেশভাগ যে মর্মান্তিক ক্ষত সৃষ্টি করে তার তীব্র দহন ছিল হিন্দু বসতিপূর্ণ বাগেরহাটে। জমিজমা দখল ও মামলা-মোকদ্দমা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়- ‘দুর্ভাগ্যবশত প্রফুল্লচন্দ্র কলেজের কতিপয় শিক্ষকও এই খেলায় মেতে পড়েন। তারা সমবায় সমিতি গঠন করে হিন্দু জমিদারদের জমি বন্দোবস্ত নেয়ার পাঁয়তারা করেন।’ তার বাগেরহাট অবস্থানকালে পুরো মহকুমার কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। তবে তিনি বাগেরহাট ছাড়ার কয়েক দিন আগে টেলিফোন সংযোগ স্থাপিত হয়। মহকুমায় একটি টেলিফোনই ছিল, সেটি ছিল পোস্ট অফিসে। সেখানে গিয়ে ফোন করতে হতো।
সম্রাট আকবরের সমর অধিনায়ক খান জাহান আলী তার স্বাভাবিক জীবন পশ্চাতে ফেলে বাগেরহাটে চলে আসেন, ধর্মে মনোনিবেশ করেন, ষাট গম্বুজ মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন, ইসলাম প্রচারের কাজে নিয়োজিত থাকেন। তার মৃত্যুর পর ভক্তকুল তাকে বাগেরহাটেই সমাহিত করেন।
বিজ্ঞানী পিসি রায় প্রতিষ্ঠিত প্রফুল্লচন্দ্র কলেজটি ছিল মুহিতের কর্মকালীন অন্যতম প্রিয় প্রতিষ্ঠান। তিনি প্রতি সপ্তাহে কলেজে নিয়মিত ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের দুটি ক্লাস নিতেন, একটি উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের অন্যটি স্নাতক পর্বের। কলেজ সম্প্রসারণ, খেলার মাঠের উন্নয়ন ও বিজ্ঞানাগার প্রতিষ্ঠা সরকারি অনুদান না নিয়ে এসডিওর উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত অর্থে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়। বাগেরহাটে চাকরিকালে তিনি একজন বড় বসকে অতিথি হিসেবে পান, তিনি রাজশাহী বিভাগের কমিশনার জে এস ট্রেনার- ‘তার মতো আলসে আইসিএস অফিসার আমি আর দেখিনি। মনে হয় জেলা প্রশাসন সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই ছিল না।’ ট্রেনারের আগের বিভাগীয় কমিশনার সৈয়দ মর্তুজা আলী, (সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাই, তিনি নিজেও সুলেখক)। তিনি নিখুঁত ও পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিদর্শন করতেন এবং প্রতিবেদন পাঠাতেন। তাতে অধীন কর্মকর্তাদের শিক্ষা যেমন হতো তেমনি দপ্তরের বিভিন্ন ত্রæটি সহজে সংশোধন করা যেত। ট্রেনার সাহেব কোনোটাতেই গা না লাগিয়ে এদিক ওদিক ঘুরতে গেলেন, খান জাহান আলীর মসজিদ ও ষাট গম্বুজ মসজিদ দেখলেন, পুকুরের সিঁড়ির প্রশংসা করলেন। প্রথমবার কুমির দেখতে পাননি বলে আবার এলেন। ষাট গম্বুজের চূড়ায় উঠলেন এবং এসডিওকে তার ছবি তুলতে বললেন। বাগেরহাট মহকুমায় কোনো মোটরযান নেই জেনে অবাক হলেন। মুহিত তাকে রিকশায় নিয়ে কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়ালেন। নদীপথে এসেছিলেন, সরকারি লঞ্চেই ফিরে গেলেন। অল্পকাল পরে ইস্কান্দার মির্জাকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করা জেনারেল আইয়ুব খানের অবসর দেয়া একদল কর্মকর্তার মধ্যে তিনিও ছিলেন।
সে সময় এসডিওর হরেকরকম পরিদর্শন কাজে সহায়ক ছিল তার একজোড়া পা, একটি সাইকেল এবং একটি ডিঙ্গি নৌকা।
তার সময় সেধে একটি জমিদার বাড়ি রাষ্ট্রকে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। নাগ পরিবারের জমিদারমাতা এসডিও মুহিতকে তার বাড়িতে নিমন্ত্রণ জানালেন। তিনি অনুরোধ করলেন তার একটি সম্পত্তি সরকার অধিগ্রহণ করে সেখানে কোনো সরকারি দপ্তর স্থাপন করুক। তিনি হুকুম দখলের আয়োজন করেন এবং প্রতিশ্রæতিমতো সেখানে মহকুমা, রাজস্ব ও সেটেলমেন্ট অফিস স্থাপন করেন। রাজমাতা এসডিওকে রবি ভার্মার আঁকা শকুন্তলার একটি পেইন্টিং উপহার দেন। বলেন ছবিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তিনি চান ছবিটি মাউন্ট করে এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা হোক। সেই জমিদার বাড়িতে এসডিও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও স্থাপন করেন। সিএসপি, ইপিসিএস এবং প্রথম দিককার বিসিএসদের স্মৃতিময় কর্মজীবন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে মহকুমাতে। প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে সব মহকুমা বা সাবডিভিশন জেলায় উত্তীর্ণ হলো। থানার নামায়ন হলো উপজেলা। মাঠ প্রশাসনের তরুণ আমলার এসডিও হওয়ার স্বপ্ন হঠাৎ মিলিয়ে গেল।
মহকুমা সম্পর্কে একটি তথ্য এ কালের পাঠকের মনে বিস্ময় জাগাতে পারে- ১৮৫৪ সালে খুলনা যশোর জেলার একটি মহকুমা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। (আগামী সংখ্যায়)

ড. এম এ মোমেন : সাবেক সরকারি চাকুরে, নন-ফিকশন ও কলাম লেখক।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়