তফসিল বাতিলের দাবি স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদের

আগের সংবাদ

জামায়াতের ভবিষ্যৎ কী? নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল খারিজ

পরের সংবাদ

চুলের সুস্বাস্থ্যে সাশ্রয়ী সমাধান

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ডা. আশরাফুন্নাহার চৈতী

ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গেই বাতাসে শীতলতা বাড়তে শুরু করেছে। যে কারণে ত্বক ও চুলও হয়ে উঠছে রুক্ষ। অনেকেই বেশ চিন্তিত থাকে বিষয়টি নিয়ে। তবে চুলের রুক্ষতাকে সহজেই বশে আনা সম্ভব। প্রয়োজন পর্যাপ্ত পুষ্টি ও আর্দ্রতা। আবহাওয়া অনুযায়ী চুল যদি সঠিক পুষ্টি পায়, তবে রুক্ষতার সমস্যা নিজে নিজেই দূর হয়। আমাদের হাতের কাছেই রয়েছে এমন প্রচুর উপাদান, যা রুক্ষতা নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর। শুধু মনে রাখতে হবে, প্রসাধনীর তুলনায় প্রাকৃতিক উপাদান কিছুটা ধীরগতিতে কাজ করে। তাই দুই একবার ব্যবহার করেই সম্পূর্ণ সমাধান আশা করা ঠিক হবে না। প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহারের সঙ্গে প্রয়োজন হয় বাড়তি নিয়ম ও যতœ। নিয়মিত যতœ নিলে চুল আরও কোমল ও নরম হয়ে উঠবে। তাই ত্বকের পাশাপাশি চুলেরও চাই আলাদা যতœ।

১. প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের ব্যবহার
চুলের রুক্ষতা দূর করতে প্রথমেই প্রয়োজন প্রাকৃতিক কন্ডিশনার। আর কলা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে দারুণ, যা নিমেষেই দূর করে রুক্ষতা। একটা পাকা কলার সঙ্গে দুই চা-চামচ মধু ও অর্ধেক কাপ নারকেল অথবা আমন্ড তেল মিশিয়ে চুলে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নিতে হবে।

২. আর্দ্রতা বাড়াতে হেয়ার মাস্কের ব্যবহার
শুষ্ক আবহাওয়ায় চুল খুব দ্রুত তার আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। ত্বকে প্রচুর পরিমাণে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলেও অনেকেই চুলে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনার কথা বেমালুম ভুলে যান। ফলে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। তাই শুষ্ক আবহাওয়ায় প্রতি এক-দুই সপ্তাহ অন্তর চুলে ডিপ কন্ডিশনিং মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। এ সময় বিভিন্ন লিভ-ইন কন্ডিশনার বা সিরাম ব্যবহার করলেও উপকার পাওয়া যাবে।

৩. নিয়মিত চুল ট্রিম করা
যেহেতু চুলের নিচের অংশই চুলের সবচেয়ে পুরোনো অংশ, তাই সিপ্লট এন্ডের মতো সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়। এতে চুল রুক্ষ ও ভঙ্গুর হয়ে যায়। তাই প্রতি তিন মাস অন্তর চুলের নিচের অংশ সামান্য ছেঁটে নেওয়া উচিত। এতে চুল ভেঙে পড়ে পাতলা হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যার ঝক্কি পোহাতে হবে না। একই সঙ্গে চুলকে দেখাবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।

৪. তেলে চুল সুন্দর
চুলের বাহ্যিক যতেœ তেলের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের হাতের কাছেই নারকেল তেল, বাদাম তেল ও অলিভ অয়েল পাওয়া যায়। চুলের রুক্ষতা দূর করতে এগুলোর তুলনা হয় না। প্রয়োজন অনুযায়ী একাধিক তেল মিশিয়ে সামান্য গরম করে মালিশ করে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, তেল খুব বেশি গরম করলে এর উপকারী উপাদান নষ্ট হতে পারে। তাই হালকা গরম তেল মাথার তালুতে ১০-১৫ মিনিট ধরে হালকাভাবে মালিশ করতে হবে। এরপর গরম পানিতে তোয়ালে ডুবিয়ে অতিরিক্ত পানি ফেলে দিয়ে চুলে বেঁধে রাখতে হবে। আধঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে ।

৫. গরম পানিতে না
গোসলের সময় ঈষদুষ্ণ পানি ও মাইক্রোফাইবার টাওয়েল ব্যবহার করা উচিত
বাইরে হালকা ঠান্ডা পড়লেই অনেকে গরম পানি দিয়ে গোসল করা শুরু করেন। চুল ধোয়ার সময়ও একই তাপমাত্রার গরম পানি ব্যবহার করেন। গরম পানি চুলকে রুক্ষ করে দেয়। চুলে গরম পানির পরিবর্তে ঈষদুষ্ণ পানি ব্যবহার করা উচিত। চুল ধোয়া হয়ে গেলে একবার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিলে ভালো। এতে চুল উজ্জ্বল দেখাবে। গোসলের পর খসখসে জমিনের তোয়ালে ব্যবহার না করে মাইক্রোফাইবার টাওয়েল দিয়ে চুল জড়িয়ে নেওয়া উচিত। মাইক্রোফাইবার টাওয়েল না থাকলে বাসায় থাকা যেকোনো টি-শার্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। চুল তোয়ালে বা টি-শার্টে ঘষে ঘষে না মুছে চেপে চেপে পানি মুছে নিতে হবে। এরপর চুলে তোয়ালে বা টি-শার্ট কিছু সময় পেঁচিয়ে রাখা ভালো।

৬. প্রোটিন ও ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার
বাইরে থেকে রুক্ষতা নিয়ন্ত্রণের জন্য যত পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি না জোগালে তার সবটাই বৃথা হয়ে যাবে। প্রোটিন ও ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড চুলের ফলিকলগুলোকে পুষ্টি জোগায়। ডিম, মুরগির মাংস, মাছ (বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ), পনির, টক দই ইত্যাদি খাবারে প্রোটিন ও ওমেগা-থ্রি থাকে। বিভিন্ন ধরনের ডালেও এই পুষ্টি উপাদানগুলো পাওয়া যায়। তবে উদ্ভিজ্জ খাবারের তুলনায় প্রাণিজ খাবারেই এই পুষ্টিগুলো বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। তাই প্রতিদিনের খাবারে একটি প্রাণিজ আমিষ যোগ করতে পারেন। এ ছাড়া চুলের রুক্ষতা এড়াতে বায়োটিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। বায়োটিনসমৃদ্ধ খাবার চুলের রুক্ষতা দূর করে।

৭. তোয়ালে দিয়ে চুল জড়িয়ে রাখুন
চুলের আদ্রতা ধরে রাখেতে, চুল ভেজানোর পর তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে রাখুন। বাতাসে চুল শুকানোর পর যদি আপনার মনে হয় চুল শুষ্ক হয়ে গেছে, তবে এই কাজটি করে দেখতে পারেন। অনেক সময় চুল ভেজা রাখবেন না। ভেঁজা চুল বেঁধে রাখবেন না।

৮. সূর্য এবং চুল
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আপনার চুলের ক্ষতি করে। তেমনি আপনার ত্বকের ক্ষতিও করতে পারে। আপনার যদি শুষ্ক চুল হয়, তবে রোদে কম বের হবেন। বের হতে হলে ওড়না দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। রোদের কারণে চুলের ক্ষতি যদি হয়েই যায়, তাহলে অ্যালোভেরা জেল লাগাতে পারেন। এতে চুল মসৃণ হবে।

মডেল : নাজনীন নাহার

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়