প্রতারণার মামলা : জামিন পেলেন দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হেলেনা জাহাঙ্গীর

আগের সংবাদ

আওয়ামী লীগে মনোনয়ন যুদ্ধ : দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু আজ, কার্যক্রমের সূচনা করবেন শেখ হাসিনা

পরের সংবাদ

সহিংসতার রাজনীতি বন্ধ হোক

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দলীয় রাজনীতির অংশ হিসেবে কিংবা নাগরিক দায়িত্ব হিসেবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সভা, সমাবেশ, আন্দোলন করার অধিকার সবার থাকলেও বাংলাদেশে আন্দোলনের যে চিত্র আমরা দেখি সবসময় তা জনবান্ধব নয়। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে অদ্যাবধি কোনো সময়েই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সঠিক আন্দোলন করেনি কোনো রাজনৈতিক দল। এ ক্ষেত্রে যারা বিরোধী দলে থাকে, তাদের জায়গা থেকেই ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও নীতিতে আন্দোলন হয়ে থাকে। এ ছাড়া যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে তাদের সময়ে বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের গুম করে লুকিয়ে রাখার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক থাকলেও এতে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই যে, সরকার কিংবা বিরোধী দলের লোকদের দ্বারাই জনগণের জানমালের ক্ষতি, খুন এবং গুমের মতো ঘটনাগুলো ঘটে।
জ্বালাও-পোড়াও ও ক্ষয়ক্ষতির রাজনীতি দেখা যায় জাতীয় নির্বাচন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের পূর্বে ও পরে। এ ছাড়া খুন-গুমের রাজনীতি দেখা যায় বছরজুড়ে। এ ধরনের নোংরা রাজনীতির বলি হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখেই ইতোমধ্যে গাড়ি পোড়ানো, পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা, নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করার জন্য বিভিন্ন ক্ষতিকর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও দোষারোপের রাজনীতি দেখতে পাই। বিরোধী দল সঠিক আন্দোলন করছে না মর্মে অভিযোগ এনে পদক্ষেপ নেয় প্রশাসন এবং প্রশাসন সরকারের পক্ষ হয়ে বাড়াবাড়ি করছে মর্মে অভিযোগ এনে আন্দোলনকারীরা আগ্রাসী আচরণ করে। এ ধরনের দোষারোপের রাজনীতির ফলে জনগণের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এ নিয়ে ভ্রƒক্ষেপ নেই কারো।
আন্দোলনের সময় গাড়ি ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দেয়া নিয়েও দোষারোপ দেখা যায়। গাড়ি পোড়ার ঘটনার পর সরকারে থাকা দল দোষারোপ করে বিরোধী দলকে এবং বিরোধী দল দোষারোপ করে সরকারি দলকে। তাদের অভিযোগ সরকার নিজেই ফিটনেসবিহীন গাড়ি ভাঙচুর করে কিংবা জ্বালিয়ে দিয়ে বিরোধী দলের আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চায়। তবে এসব পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ছাপিয়ে বহু নতুন গাড়িও ভাঙচুর এবং পোড়া রাজনীতির শিকার হয়। ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেক সময় দোষীদের শনাক্ত করা গেলেও এসব ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ কোনো প্রতিকার পায় না।
ক্ষমতাসীন দল গণতান্ত্রিক নিয়মে নির্বাচন করতে চায়। বিরোধী দল চায় নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। এ ক্ষেত্রে সরকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলের দাবি হলো, যেভাবে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে, তেমনিভাবে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশের প্রধান দুটি দল ও তাদের সহযোগীদের মধ্যকার এই ভিন্নমতের কারণে রাজনৈতিক ঐক্য সৃষ্টি না হওয়ার রাজনৈতিক সহিংসতার বলি হচ্ছে সাধারণ নাগরিকরা। বিরোধী দলের আন্দোলন এবং সরকারি দলের প্রতিরোধ মিলিয়ে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে থাকে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন না করায় মানুষের মাঝে নির্বাচনকালীন সময়ে যে আতঙ্ক থাকে, তা দূর করতে হবে। জনগণের জানমালের ক্ষতি না করে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে হবে এবং বিরোধী দলগুলো যদি শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে, সে ক্ষেত্রে সরকার এবং প্রশাসন কর্তৃক তাদের আন্দোলনে কোনো অবৈধ হস্তক্ষেপ করা যাবে না।

জুবায়ের আহমেদ : শিক্ষার্থী, বিজেম, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়