নাইকো দুর্নীতি মামলা : খালেদার বিরুদ্ধে ফের সাক্ষ্য দেবেন কানাডার দুই পুলিশ কর্মকর্তা

আগের সংবাদ

নৌকা এবার জিতবেই > যাকেই নমিনেশন দেব, ঐক্যবদ্ধভাবে তাকেই বিজয়ী করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

পরের সংবাদ

আলু পেঁয়াজও নিয়ন্ত্রণহীন : বাজার ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী হোক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নিত্যপণ্যের বাজারে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। কিছুতেই যেন বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষের কষ্টের টাকা অসাধু ব্যবসায়ীরা লুটে নিচ্ছে। দেখার কেউ নেই। সর্বশেষ আলু ও পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সরকার আলু ও পেঁয়াজসহ পাঁচ পণ্যের দাম বেঁধে দেয়। সে হিসেবে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হওয়ার কথা ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং পেঁয়াজের কেজি হওয়ার কথা ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। সরকার দাম বেঁধে দেয়ার পরে প্রায় দুই মাস হলেও এখনো বাজারে তার কোনো প্রতিফলন নেই। দিন দিন বাড়ছে দাম। স্বয়ং বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন- ডিম, আলু, পেঁয়াজের দাম বেঁধে দেয়া হলেও তা কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। তিনিও অসহায়। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলছে, ১১ টাকা ৫১ পয়সায় উৎপাদন করা প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। অন্যদিকে ৩৩ টাকা ৪ পয়সায় উৎপাদন করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। অর্থাৎ উৎপাদন খরচ থেকে প্রায় পাঁচগুণ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে আলু ও পেঁয়াজ। শুধু কি আলু-পেঁয়াজ। চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা, ময়দাসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। প্রতিটি ডিমের দাম বর্তমানে ১৪ থেকে ১৫ টাকা। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫-২০ টাকা। মাছ-মাংসে হাত দেয়ার উপায় নেই। আলু, পেঁয়াজ, ডিম, খোলা চিনি, সয়াবিন তেল ও রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার- এই ছয় পণ্যের দাম বেঁধে দিলেও তা কার্যকর করা যায়নি। পাঁচটি পণ্যই ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেশি দামে। কেন এমন পরিস্থিতি হলো, এর পেছনে সরকারের কোনো ভুল নীতি কিংবা সমন্বয়হীনতা ছিল কিনা, সেটাও দেখার বিষয়। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে বাজার নিয়ন্ত্রণের কাজে সমন্বয় আছে কিনা সেই প্রশ্ন সামনে আসছে। এদিকে উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে বিক্রি হলেও কৃষকরা মুনাফা করতে পারছেন না। মধ্যস্বত্বভোগীরা নানা অজুহাত দেখিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করছে। কৃষকরা যদি সরাসরি বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে পারতেন তাহলে এসব সমস্যার সমাধান হতো বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সাধারণত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথাবার্তা উঠলে পাইকারি ব্যবসায়ী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পরস্পরের ওপর দোষারোপ করে থাকেন। এভাবে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করলেও এটি যে মূলত ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ব্যবসায়ীরা নিশ্চয়ই মুনাফা করবেন, কিন্তু সেই মুনাফা লাগামছাড়া হতে পারে না। কিছু নিয়মকানুনের মধ্যেই তাদের ব্যবসা করতে হবে। মূলত দেশের ভোগ্য ও নিত্যপণ্যের বাজার জিম্মি হয়ে পড়েছে কয়েকটি শক্তিশালী, ক্ষমতাধর কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে। তাদের কাছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকারও যেন অসহায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের যে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে, তা ভাঙতে কঠোর হওয়া প্রয়োজন। এটি না করে শুধু অভিযান পরিচালনা করে ব্যবসায়ীদের জরিমানা করলে কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যাবে না। বাজার ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী ও কৌশলী হওয়া জরুরি মনে করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়