পুলিশ হত্যা মামলা : রিজভী-সোহেলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

আগের সংবাদ

নির্বাচন পর্যন্ত সংস্কারে ছাড় : আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিশ্চিত, ঋণ চুক্তির ছয়টি শর্তের মধ্যে চারটি পূরণ হয়েছে

পরের সংবাদ

শিশুর মেধা বিকাশের খেলাধুলা

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২৩ , ১২:১৭ পূর্বাহ্ণ

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই আমাদের শিশুর মেধা বিকাশের কথা চিন্তা করে হতে হবে মনোযোগী। বেশির ভাগ বাবা-মা সন্তানের কথা শেখার পরপরই তাদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী হন। মেধা বিকাশের জন্য সন্তানকে বইমুখী করতে থাকেন। এমতাবস্থায় সন্তানকে বইমুখী করতে গিয়ে তারা ভুলে যান সন্তানের মেধা বিকাশের জন্য শুধু পড়াশোনা নয়, দরকার খেলাধুলারও।
শরীর ভালো থাকলে মন ভালো থাকে। মন ভালো থাকলে একটি শিশু সহজেই যে কোনো কাজে মনোযোগী হয়ে উঠতে পারে। তাই শিশুর মন ভালো রাখার পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখাও খুবই জরুরি। শরীর সুস্থ রাখার জন্য শিশুর দরকার শরীর চর্চা বা ব্যায়াম। আর এ শরীরচর্চার একটি মজাদার মাধ্যম হতে পারে খেলাধুলা। একটি শিশুর মেধা বিকাশের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা করা খুবই প্রয়োজন।
খেলাধুলা করলে একটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে। খেলাধুলা করলে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে ক্ষতিকর জীবাণু বের হয়ে যায়, ফলে শরীর, স্বাস্থ্য ও মন ভালো থাকে। খেলাধুলা একটি শিশুর শরীর ও মনকে শুধু ভালোই রাখে না বরং তারা পায় নেতৃত্ব, দায়িত্ববোধ ও নিয়ম-শৃঙ্খলার শিক্ষা। যেমন প্রতিটি মাঠ পর্যায়ে খেলায় প্রতিটি দলে একজন দলীয় প্রধান থাকে। দলীয় প্রধান তাদের দলকে পরিচালনা করে থাকে। আর এভাবে দলীয় প্রধান হিসেবে একটি শিশু নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে নিজের মেধাকে বিকশিত করতে পারে। তাছাড়া প্রতিটি খেলা বেশকিছু নিয়ম-কানুনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। খেলোয়াড়রা এসব নিয়মকানুন অনুযায়ী খেলাধুলা করে থাকে। আর এভাবে একটি শিশু নিয়মের ভেতরে খেলাধুলা করে, নিয়ম-শৃঙ্খলা সম্পর্কে অবগত থাকে। তাছাড়া খেলাধুলার মাধ্যমে মেধাবিকাশের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো দায়িত্ববোধ শিক্ষা। খেলার মধ্যে নিজের দলের প্রত্যেকটি সদস্য নিজের দলকে জয়ী করার জন্য প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে তৎপর হয়ে ওঠে। নিজের দলকে জয়ী করতে বিপক্ষ দলের সঙ্গে প্রাণপণ লড়াই করতে থাকে। এভাবে নিজ দলের জয়ের জন্য প্রতিটি শিশু তৎপর হয়ে ওঠে, ফলে তারা পায় প্রতিযোগিতা ও দায়িত্ববোধের শিক্ষা।
শিশুর খেলাধুলার জন্য গড়ে তুলতে হবে উপযুক্ত খেলাধুলাবান্ধব পরিবেশ। বর্তমানে স্মার্টফোনের যুগে বাবা-মারা সন্তানের অবসর কাটানোর জন্য হাতে তুলে দেন স্মার্টফোন। ফলে স্মার্টফোনে আসক্ত হয়ে বর্তমানের শিশুরা শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই একটি শিশু বাস্তব চিন্তা-ভাবনা থেকে দূরে সরে গিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। তাই প্রত্যেকটি বাবা-মার উচিত সন্তানের হাতে স্মার্টফোন তুলে না দিয়ে, শিশুটিকে নিকটস্থ খেলার মাঠে খেলাধুলা করার জন্য উৎসাহিত করা। আগামী বিশ্বে শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাদের উপযুক্ত পরিবেশবান্ধব খেলার মাঠ উপহার দিতে হবে। এখানে শুধু বাবা-মার দায়িত্ব নয় সর্বস্তরের মানুষের দায়িত্ব রয়েছে। শিশুদের খেলার জন্য বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এসব প্রতিবন্ধকতার মধ্যে প্রথম ও প্রধান হচ্ছে উপযুক্ত মাঠ না থাকা।
একটি গ্রামে যেমন একটি বিদ্যালয় থাকা প্রয়োজন, ঠিক তেমনি একটি গ্রামে একটি উপযুক্ত খেলার মাঠ থাকাও প্রয়োজন। কিন্তু খেলার মাঠকে কেন্দ্র করে অপরিকল্পিতভাবে দালান-কোঠা ও কারখানা তৈরির মাধ্যমে তাদের খেলার মাঠ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। তাই প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব খেলার মাঠকে কেন্দ্র করে দালান-কোঠা বা কারখানা গড়ে না ওঠে। এজন্য প্রত্যেকে সচেতন থাকতে হবে।
খেলাধুলার মাধ্যমে শিশুর মেধা বিকাশের জন্য একজন শ্রেণিশিক্ষকেরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান থাকতে পারে। একজন শ্রেণিশিক্ষক শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বুঝিয়ে দিয়ে, খেলাধুলা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। এভাবে যদি আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের জায়গা থেকে সচেতন হই তাহলে একজন শিশু শুধু পড়াশোনা করার মাধ্যমে নয়, খেলাধুলার মাধ্যমেও নিজের মেধাকে বিকশিত করতে পারে।

মিরজুল ইসলাম : শিক্ষার্থী, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ, জামালপুর।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়