পুলিশ হত্যা মামলা : রিজভী-সোহেলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

আগের সংবাদ

নির্বাচন পর্যন্ত সংস্কারে ছাড় : আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিশ্চিত, ঋণ চুক্তির ছয়টি শর্তের মধ্যে চারটি পূরণ হয়েছে

পরের সংবাদ

রাজস্ব আয় বাড়াতে উদ্যোগ নিন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২৩ , ১২:১৭ পূর্বাহ্ণ

গতকাল ভোরের কাগজের খবরে প্রকাশ, জমি রেজিস্ট্রেশনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় সারাদেশে সাফ-কবলা জমি রেজিস্ট্রেশন এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। কমেছে ফ্ল্যাট বিক্রিও। টানা দুই সপ্তাহ ধরে এ অবস্থা চলায় সরকার শত শত কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনিতেই রাজস্ব আয়ে দিন দিন ঘাটতির পরিমাণ বাড়ছে। অর্থবছরের শুরুতেই রাজস্ব আদায়ে পিছিয়ে পড়ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অভ্যন্তরীণ খাত থেকে সম্পদ জোগানের চাপ, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপ- এসব চাপ সামলে এনবিআর যেন কিছুতেই শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য অর্জন করতে পারছে না। এনবিআরের সাময়িক হিসাবে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় ঘাটতি হয়েছে। জুলাই-আগস্ট মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা। এই সময়ে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৫০ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এনবিআরের জন্য সব মিলিয়ে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। করোনার লকডাউনের পর থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট আদায়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে- এটা এখনো চলমান। মাঝে কয়েক মাস আমদানি-রপ্তানি বেড়েছিল, স্থানীয় উৎপাদন ও সরবরাহ শৃঙ্খলেও গতি আসে। ফলে রাজস্ব আদায়ও বেড়েছিল। বৈশ্বিক মন্দা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে যেন। দারুণভাবে প্রভাব পড়ছে অর্থনৈতিক খাতে। এটা খুবই শঙ্কার বিষয়। অপরদিকে সব ধরনের পণ্যের দাম চড়া। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি তথা মূল্যস্ফীতির কারণে ভ্যাট খাত থেকে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে এনবিআরের। যদিও মূল্যস্ফীতিসহ অন্যান্য কারণে করপোরেট ব্যবসাগুলোকে গত অর্থবছরে বেশ কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। বিষয়টি এনবিআরের আয়কর ও ভ্রমণ কর খাত থেকে রাজস্ব আহরণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে এনবিআরের আয়কর ও ভ্রমণ করে রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকার বেশি। এ খাতে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। আয় হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এছাড়া মানুষের আয়-উপার্জন কম। ব্যবসা-বাণিজ্য কমে গেছে। তাহলে ট্যাক্স আসবে কোত্থেকে? দোকানপাটে বিক্রি নেই, ফলে ভ্যাট আদায়ও কম। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতি ব্যাপক বৃদ্ধি পেলেও ২০১১ সালের পর রাজস্ব প্রশাসনে আর কোনো সংস্কার হয়নি। জনবল ও অফিস সংখ্যা বৃদ্ধি তথা প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য কয়েক বছর আগে প্রস্তাব প্রণীত হলেও এ প্রস্তাব সরকারের অনুমোদনের জন্য এখনো অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ থেকে পাঠানো সম্ভব হয়নি। ফলে কাক্সিক্ষত সংস্কার বিলম্বিত হচ্ছে। এমনি পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড করের আওতা বাড়ানোসহ নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তবে এসব পরিকল্পনা খুবই শ্লথ গতির। বিনিয়োগ বাড়াতে পারলেই কেবল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব। রাজস্ব আয় বাড়ানো এর শর্ত। এ ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে দরকার করবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি। সেখানে রাজস্ব প্রদানে সেবা নিশ্চিত, অনুকূল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আইন-কানুন সময়োপযোগী করা গুরুত্ব পাবে। পরিকল্পনাজনিত সমস্যা তো রয়েছেই, সঙ্গে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক নানা জটিলতা। আছে দুর্নীতির অভিযোগও। এসব বিষয়ে সরকারকে আরো জোরালো ভূমিকা নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়