পুলিশ হত্যা মামলা : রিজভী-সোহেলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

আগের সংবাদ

নির্বাচন পর্যন্ত সংস্কারে ছাড় : আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিশ্চিত, ঋণ চুক্তির ছয়টি শর্তের মধ্যে চারটি পূরণ হয়েছে

পরের সংবাদ

তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি ও বিশ্ব গ্রামের সূচনা

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২৩ , ১২:১৭ পূর্বাহ্ণ

সভ্যতার যুগান্তকারী পরিবর্তন আনয়নে বিজ্ঞানের যেসব আবিষ্কার অপরিসীম ভূমিকা রেখেছে, তার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির আবিষ্কার একটি অনন্য মাইলফলক। চার্লস ব্যাবেজ যখন কম্পিউটার আবিষ্কার করেন তখন কম্পিউটারের আয়তন ছিল বর্তমানের চেয়ে অনেক গুণ বড়। বলা হতো একটি ঘর প্রয়োজন হতো একটি কম্পিউটার রাখার জন্য এবং ওই সময় কম্পিউটারের কার্যক্রম ছিল সীমিত, শুধু গণনার কাজে ব্যবহার করা হতো। পরবর্তীতে কম্পিউটারের আয়তন ছোট হতে থাকে। তাই কম্পিউটার আবিষ্কারের পরও বিশ্ব গ্রাম বলতে কিছু ছিল না। ধারণা করা হয়, পৃথিবী তথা সভ্যতার বিকাশ ঘটে চারটি শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে। প্রথম শিল্পবিপ্লবের সূচনা হয় ১৭৮৪ সালে বাষ্প ইঞ্জিন আবিষ্কারের পর। দ্বিতীয় শিল্পবিপ্লব হলো বৈদ্যুতিক বাতি ও বিদ্যুতের আবিষ্কার। তৃতীয় বিপ্লব হলো ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট প্রযুক্তির আবিষ্কার। এবং সর্বশেষ ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লব হলো স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহার (২০১৬ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত)। এসব শিল্পবিপ্লব নব নব প্রযুক্তি আবিষ্কারে সাহায্য করেছে। এর মাধ্যমে তৈরি হয়েছে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও পিসি ইত্যাদি। এছাড়া কম্পিউটারের গতি বৃদ্ধি পায়। এর ফলে পৃথিবীর এক প্রান্তের লোকজন অন্য প্রান্তের লোকজনের সঙ্গে কথোপকথন, চ্যাটিং, ডেটিং, ভিডিও কলে সরাসরি আলাপ করার সুবিধা পাচ্ছে। ১৯৬২ সালে যিনি প্রথম পৃথিবীকে একটা বৈশ্বিক গ্রামের মতো হওয়ার কল্পনা করেছেন, তিনি আর কেউ নয় জনপ্রিয় কানাডিয়ান সাহিত্যিক ও দার্শনিক মার্শাল ম্যাকলুহান। তিনি তার বিখ্যাত বই ‘দ্য গিউটেনবার্গ গ্যালাক্সি’ এবং ‘আন্ডারস্টানডিং মিডিয়া’তে বিশ্ব গ্রামের ধারণা দেন। তার এই বইয়ে তিনি ব্যক্ত করেন যে প্রযুক্তির বিকাশের মাধ্যমে পৃথিবীতে এমন একটি কানেক্টিভিটি তৈরি হবে, যাতে পৃথিবীকে একটি গেøাবাল ভিলেজের ন্যায় মনে হবে। এজন্য তাকে গেøাবাল ভিলেজ বা বিশ্ব গ্রামের জনক বলা হয়। তার ধারণা তখন অবাস্তব কল্পনা মনে করা হতো। পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে ইন্টারনেট আবিষ্কার হওয়ার পর এই ধারণার বাস্তবায়ন ঘটে। একই সঙ্গে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন হার্ডওয়্যার ডিভাইসের সঙ্গে ইন্টারনেট কানেকশনের ফলে এসব ভিভাইসের গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতিতে আর যে মাধ্যমটি অনন্য অবদান রেখেছে তা হলো তারহীন যোগাযোগ বা ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কিং। বর্তমানে ইন্টারনেট প্রযুক্তির বদৌলতে যে কোনো বিষয় সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন ইলেকট্রনিক বা ই-সেবার মাধ্যমে গ্রাহক সুবিধা লোকজনের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। বর্তমানে এমন কোনো সেক্টর নেই যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নেই। তাই ডিজিটাল প্রযুক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহার রয়েছে। যাই হোক বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্যের আদান-প্রদান ঘটছে এবং সোশ্যাল কনট্রাক দৃঢ় হচ্ছে যেন পৃথিবীর দূরত্ব কমে গেছে। এক প্রান্তের লোকজন অন্য প্রান্তের লোকজনের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে পারছে। আজ বৃহত্তর পরিসরে বিবেচনা করলে তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে সমগ্র বিশ্ব যেন একটি গ্রাম। এখন বিশ্বের এক প্রান্তের লোক সহজেই আরেকজন লোকের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারছে। এর ফলে বিশ্বের মানুষের মধ্যে এক ধরনের কানেক্টিভিটি তৈরি হচ্ছে। তাই বলা যায়, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে পৃথিবী আজ হাতের মুঠোয়। যা পৃথিবীকে গেøাবাল ভিলেজে পরিণত করেছে।

মুশফিকুর রহমান বায়জিদ : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়