পুলিশ হত্যা মামলা : রিজভী-সোহেলসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

আগের সংবাদ

নির্বাচন পর্যন্ত সংস্কারে ছাড় : আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিশ্চিত, ঋণ চুক্তির ছয়টি শর্তের মধ্যে চারটি পূরণ হয়েছে

পরের সংবাদ

কারখানার বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে ধলেশ্বরী, বিলুপ্ত দেশীয় মাছ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তোফাজ্জল হোসেন শিহাব, মুন্সীগঞ্জ (সদর) থেকে : মুন্সীগঞ্জে ধলেশ্বরী নদীর তীরে অবাধে গড়ে উঠছে বিভিন্ন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান। আর এসব প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের জন্য নেই ড্রেনেজব্যবস্থা। যার কারণে প্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত বর্জ্য সরাসরি ধলেশ্বরী নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে দূষিত হচ্ছে নদী। মারাত্মক হুমকিতে পড়ছে জলজ প্রাণী।
নদী তীরসংলগ্ন এলাকায় অসংখ্য ছোট বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। রাইস মিল, অস্থায়ী নির্মিত বালুমহাল, প্লাস্টিক কারখানা, জুট কারখানা, হোটেলসহ বিভিন্ন ধরনের কলকারখানার পরিশোধিত/ অপরিশোধিত বর্জ্য সরাসরি নদীতে পড়ে দূষিত হচ্ছে নদীর পানি।
জেলা সদরের মিরকাদিম নদী বন্দর/লঞ্চঘাট, স্টিমার ঘাট, ফিরিঙ্গীবাজার, মুক্তারপুর ফেরিঘাট ও সদর লঞ্চঘাটে অসংখ্য ছোটবড় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অপরিশোধিত বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ধলেশ্বরী নদীতে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠান মালিকরাও হয়ে উঠছেন বেপোরোয়া। নদী দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে শাস্তির আওতায় আনা গেলে দূষণের মাত্রা কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।
তাছাড়া নদী দূষণ রোধে জেলা প্রশাসনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ারও জোর দাবি সচেতনমহলের। একদিকে নদীতে বর্জ্য ফেলার কারণে দেশীয় মাছ এমনিতেই বিলুপ্তির পথে অন্যদিকে পানি দূষণে বাড়ছে পানিবাহিত রোগ। জেলেরা বলছেন, আমরা একসময় ধলেশ্বরী নদীতে প্রচুর পরিমাণ দেশীয় মাছ ধরতাম। এর চাহিদাও ছিল অত্যাধিক। এখন সারাদিন জাল নিয়েও নদীতে তেমন মাছ ধরা পড়ে না। কারখানাগুলোর বিষাক্ত বর্জ্যে পানির রং পরিবতন হয়ে যায়। তাছাড়া দূষিত পানিতে মাছ থাকতে পারে না। আমরাও আগের মতো মাছ পাই না।
সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, মুক্তারপুর ফেরিঘাট ও বাজার এলাকা থেকে শুরু করে স্টিমারঘাট থেকে রিকাবিবাজার পর্যন্ত অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে মিরকাদিম ও স্টিমারঘাট এলাকার মাতৃভাণ্ডার রাইস এজেন্সিসহ অন্যান্য রাইস মিলের বজ্য সরাসরি ধলেশ্বরীর সঙ্গে মিশে পানি দূষিত হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠান মালিকদের প্রতি প্রশাসনের কঠোর নজরদারি আর সতর্কতা অব্যাহত থাকলে নদী দূষণ রোধ অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন ২০২০ এর খসড়া তৈরি করেছে কমিশন। খসড়ায় বলা হয়, নদীর দখল, দূষণের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান জানান, যেসব প্রতিষ্ঠান নদী দূষণের সঙ্গে জড়িত সেসব প্রতিষ্ঠানের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে এসব বিষয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই বিষয়টির সমাধান হবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিফা খান ভোরের কাগজকে জানান, তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়