বীমা ব্যক্তিত্ব সামাদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আগের সংবাদ

নানা আয়োজনে শেখ রাসেলের জন্মদিন পালন

পরের সংবাদ

বিশ্ব নেতৃত্ব নিশ্চুপ কেন

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১৮, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সাম্প্রতিক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা যুগের পর যুগ বাধাগ্রস্ত করা এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর অহরহ আক্রমণ চালানো ইসরায়েলের ওপর ফিলিস্তিনের হামাস নামের সংগঠনটি হামলা চালিয়েছে। আর এরই সূত্র ধরে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় স্থল, আকাশ এবং জলপথে হামলা জোরদার করেছে এবং একের পর এক ফসফরাস বোমাসহ মারাত্মক সব অস্ত্র ব্যবহার করে চলেছে। ইতোমধ্যে গাজা উপত্যকা থেকে লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়ি ছেড়েছে। এতে ফিলিস্তিনের গাজায় মানবিক সংকট ঘনীভূত বলে অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞই আশঙ্কা করছেন। প্রকৃতপক্ষে ফিলিস্তিনিরা ওই ভূখণ্ডের প্রকৃত মালিক হলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশরা ওই জায়গা ছেড়ে যাওয়ার আগে একটি স্বাধীন ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার ইহুদিরা কোমর বেঁধে নামে। একসময় তারা পুরো ফিলিস্তিনের কিছু জায়গায় বসবাস করলেও পরবর্তী সময়ে তারা পুরো ফিলিস্তিনের ৭৮ শতাংশ জায়গা দখল করে নেয়। ফলে শুরু হয় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলের মতভেদ, যা পরে ফিলিস্তিনিদের ভূমি উদ্ধার এবং মুক্তির আন্দোলনে রূপ নেয়। বর্তমানে ফিলিস্তিনির মুক্তিকামি জনগণ তাদেরকে তাদের নিজভূমে স্বাধীনভাবে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের জন্য অধিকারের যুদ্ধে লিপ্ত থাকলেও ইসরায়েল কোনো অবস্থাতেই মেনে নিতে চাইছে না। ফলে এ আন্দোলন সশস্ত্র আন্দোলনে রূপ নেয় আর এতে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্রভাবেই দমনপীড়ন চালাতে থাকে। ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের দশকের পর দশক এমন দমনপীড়ন চালাচ্ছে যে, ফিলিস্তিনির মানুষ তাদের ঘৃণা করতে শুরু করে এবং এ ঘৃণা বর্তমানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম বহমান। বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ চলছে তা শুধু তাদের স্বাধীনতার জন্য।
যখন কোনো জাতি দশকের পর দশক তাদের যৌক্তিক দাবি স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয় তখন তারা সশস্ত্র পথে পা বাড়াবে, সেটাই স্বাভাবিক। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা বেশ বিরল নয়, বরং স্বাভাবিকই বলা চলে। ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার প্রশ্নে পৃথিবীর ব্যাপকসংখ্যক দেশ ফিলিস্তিনিদের পক্ষে থাকলেও পৃথিবীর পরাশক্তি হিসেবে খ্যাত আমেরিকা একেবারে সরাসরি ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমেরিকার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপের কিছু দেশও ইসরায়েলের পক্ষে। ফলে বর্তমান ফিলিস্তিনির গাজায় ইসরায়েল যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে বিশ্ব নেতৃত্ব একেবারেই মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে। সাম্প্রতিক গাজায় ইসরায়েলের হামলাকে বেগবান আর ইসরায়েলিদের পক্ষে থাকার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেখানে দুই হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গাজায় যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন। এতে করে ইসরায়েল তাদের শক্তি আরো বৃদ্ধি করে ফিলিস্তিনিদের ওপর আক্রমণ চালাবে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন। ফিলিস্তিনির গাজাসহ অন্যান্য অঞ্চলে ইসরায়েলের আক্রমণে শিশুরাসহ অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হলেও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মন কাঁদছে না। ইসরায়েলের এক কথা, তারা ফিলিস্তিন থেকে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু তারা এ কথা চিন্তা করছে না যে, হামাস ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার জন্যই যুদ্ধ করছে। ফলে তাদের ওপর সাধারণ ফিলিস্তিনিদের সমর্থন রয়েছে। আর এভাবে ইসরায়েল যদি গাজায় হামলা চালাতে থাকে তাহলে সেখানে মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়। ফিলিস্তিনিরা যেহেতু দশকের পর দশক তাদের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে চলেছে, তাদের অবশ্যই স্বাধীনতা দেয়া দরকার। এ বিষয়ে আরব বিশ্বের দেশগুলোও এক হওয়া দরকার, কারণ অতীতে আমরা লক্ষ্য করেছি আরব বিশ্বের দেশগুলোও ফিলিস্তিনির বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ ছিল না। স্বয়ং সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক করার জন্য চুক্তি করেছিল। বর্তমানে আশার কথা হচ্ছে, সৌদি আরব ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আক্রমণ দেখে সে চুক্তি বাতিল করেছে। এভাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এক হলে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা আরো ত্বরান্বিত হতো। আমরা গাজায় ইসরায়েলের হামলা থামানোর জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

রতন কুমার তুরী : লেখক এবং শিক্ষক।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়