জাবিতে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত

আগের সংবাদ

বাজারের পারদ চড়ছেই : নির্ধারিত দামের ধারেকাছেও নেই তিন পণ্য, আমদানির ডিম দেশে আসেনি এখনো

পরের সংবাদ

সর্বজনীন দুর্গোৎসব : অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাহক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

প্রতি বছর শারদীয় দুর্গোৎসবের অনাবিল আনন্দ উপভোগ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য নানা ধর্মের মানুষও। সম্প্রীতির শক্তির কারণেই পূজামণ্ডপে ভিড় জমে সব ধর্মের মানুষের, আনন্দ ভাগাভাগি করে সমাজের সবাই মিলে।
শারদীয় দুর্গোৎসব সম্প্রীতির বন্ধনকে শক্ত করে দেয়। শারদীয় এই উৎসবের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান অনেকটাই গৌণ হয়, মুখ্য হয়ে ওঠে মানুষের মিলন উৎসব। সম্প্রীতির এক বড় আনন্দোৎসব আমাদের শারদীয় দুর্গোৎসব।
নিরবধি বয়ে চলা নদীর স্রোতের মতো বয়ে চলেছে বাঙালির সংস্কৃতির সম্প্রীতির ধারা। বাঙালি সংস্কৃতির সেই চরিত্রটি নিয়ত ভালোবাসতে শেখায় করোনাকাল পেরিয়ে, যুদ্ধের ভয়াবহ পরিণতির সামনে দাঁড়িয়ে এবারের শারদীয় উৎসবে এটাই আমার প্রার্থনা যে, যুদ্ধ নয় শান্তি চাই, চাই সম্প্রীতির বন্ধন।
অশুভ অসুর শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শুভ দেবশক্তির চূড়ান্ত বিজয়ের দিন হিসেবেই দুর্গাপূজার দশমীর দিনটিকে বলা হয় ‘বিজয়া দশমী’। অসুরকুলের দম্ভ-দৌরাত্ম্য থেকে দেবকুলকে রক্ষায় মাতৃরূপী ও শক্তিরূপী দেবী দুর্গার আগমন। অসুরদের দলপতি মহিষাসুরকে বধ করে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা দেবকুলকে রক্ষা করেন। অন্যায় ও অশুভকে পরাস্ত করার মাধ্যমে ন্যায় ও শুভবোধের প্রতিষ্ঠা ঘটে। দেবী দুর্গা সত্য, শুভ ও ন্যায়ের পক্ষের সংগ্রামে মর্তের মানুষকেও সাহসী করে তোলেন। দূর করে দেন যত গøানি, হিংসা-দ্বেষ, মনের দৈন্য ও কলুষ। যাবতীয় মহৎ গুণাবলির প্রতি দেবী দুর্গা মানুষকে আকৃষ্ট করেন। ফলে সত্য, শুভ ও কল্যাণের এক গভীর প্রতীকী ব্যঞ্জনা নিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব হয়ে ওঠে সার্বজনীন। দুর্গাপূজা ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষ নানাভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যাবতীয় দুঃখ ভুলে গিয়ে হিংসা-বিদ্বেষের ঊর্ধ্বে উঠে প্রীতির মেলবন্ধন রচনার মাধ্যমে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। তাই দুর্গাপূজা হিন্দু সমাজে সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব হিসেবে বিবেচিত। দেবী দুর্গা বিভিন্নরূপে এই মর্তের পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়ে থাকেন এবং আমাদের সার্বিক মঙ্গল নিশ্চিত করেন বিধায় তিনি সর্বমঙ্গলা। আবার শিবের শক্তি বলেও তিনি শিবা। কারণ তিনি সব প্রার্থনা এবং আরাধনা মঞ্জুর করেন এবং অসাধ্যকে সাধন করেন। তাই তিনি শরণ্য, তিনি গৌরী। দুর্গা দশভুজা নামেও পূজিত এবং আরোধিত হয়ে থাকেন। অসুরের দলপতি মহিষাসুরকে বধ করে দেবকুলকে রক্ষা করেছিলেন দুর্গতিনাশিনী দুর্গা। সেই থেকে বিজয় ঘটে শুভশক্তির। দেবীর আগমন ঘটে অন্যায়ের বিনাশ ঘটিয়ে সজ্জনদের প্রতিপালনের অঙ্গীকার নিয়ে মানুষের মধ্যে নৈতিক আদর্শ জাগ্রত করার জন্য। মানুষের চিত্ত থেকে যাবতীয় দীনতা ও কলুষতা দূরীভূত করার জন্য। এজন্য দুর্গোৎসব ধর্মীয় উৎসব হলেও তা সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। সম্প্রদায়গত বিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষকে এক পরম আনন্দের সোপানে দাঁড় করাচ্ছে। শারদীয় দুর্গোৎসব সবার জন্য থাকে উন্মুক্ত। দেবী দুর্গার আগমনী আনন্দকে সবাই ভাগাভাগি করে নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। কারণ বাঙালি জাতি নিরন্তর উন্মুক্ত উৎসবমুখর পথে চলতে পছন্দ করে। দেশব্যাপী বইছে সম্প্রীতির উৎসবের আনন্দধারা। সাড়ম্বরে দুর্গোৎসব পালনের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতি, সৌহার্দ ও কল্যাণময় অবস্থানের বিকাশ আরো বিস্তৃত এবং বিকশিত হবে এবং অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভশক্তির প্রসার ঘটবে এই প্রত্যাশা।

লেখক : কবি, সুনামগঞ্জ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়