জাবিতে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত

আগের সংবাদ

বাজারের পারদ চড়ছেই : নির্ধারিত দামের ধারেকাছেও নেই তিন পণ্য, আমদানির ডিম দেশে আসেনি এখনো

পরের সংবাদ

ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হতে সাবধান!

প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস আসার পরে লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়েছে এবং এরই সঙ্গে রাশিয়ার-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে চাকরি হারা মানুষসহ সর্বস্তরের মানুষ দিশাহারা অবস্থায় পড়েছে। মানুষের জীবন-সংসার চালাতে দরকার একটা চাকরির। তাই প্রতিটি চাকরিপ্রত্যাশী ব্যক্তি ছুটছে চাকরির পেছনে; কোথায় পাওয়া যায় না ভালো বেতনের চাকরি। তাই এরই সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু অনলাইন চক্র মানুষকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে যাচ্ছে। ফলে একজন চাকরিপ্রত্যাশী ব্যক্তি এই প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে তাদের সর্বস্ব হারাচ্ছেন।
প্রথমে এই প্রতারক চক্রের দল বিভিন্ন নামি-দামি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ভুয়া সার্কুলার দিয়ে থাকে এবং নিজেদের ব্যক্তিগত নাম্বার দিয়ে চাকরির আবেদন করার টাকা পে করতে বলে। পরবর্তী পোস্টিংয়ের নাম করে বিভিন্ন মেয়াদে ধাপে ধাপে ভিকটিমের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতারক চক্র নিজেদের অফিস হিসেবে ভুয়া ফ্ল্যাট বাসার ঠিকানা ব্যবহার করে। যদি ঠিকানা অনুযায়ী যাওয়া হয় দেখা যায় সেখানে কোনো অফিস নেই বা প্রথমে চাকরির আবেদন ফরম জমা দিতে গিয়ে অস্থায়ীভাবে সাজানো অফিস দেখতে পেলেও পরবর্তীতে পোস্টিংয়ের নাম করে টাকা হাতানোর পর ভিকটিম অফিসে গিয়ে অভিযোগ করতে গেলে দেখে অফিস সেখানে নেই। প্রতারক চক্র সবকিছু গুটিয়ে এবং সমস্ত কন্ট্রাক্ট নাম্বার বন্ধ করে হাওয়া হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় প্রতারণায় শিকার হওয়া ব্যক্তি নির্বাক হয়ে যান।
তাই এ ধরনের প্রতারণার শিকার যেন না হতে হয় এজন্য আমাদের সচেতন হতে হবে। মূলত এ ধরনের প্রতারণার বেশি শিকার হয় গ্রাম থেকে উঠে আসা সহজ-সরল নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র ঘরের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এসব শিক্ষার্থী অনেক স্বপ্ন নিয়ে শহরের বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজে ভর্তি হয়। দরিদ্র পরিবার তার পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খাবে- এ কথা জেনেও শহরে এসে পড়াশোনা করার মতো চ্যালেঞ্জ হাতে নেয়। তারা মনে করে পড়াশোনা করার পাশাপাশি পার্টটাইম জব বা টিউশনি করিয়ে নিজের খরচ নিজে চালিয়ে নেবে, কিন্তু শহরে এসে দেখে সবকিছু উল্টো। তারা বাস্তবে পরিলক্ষিত হয়ে দেখে পার্টটাইম জব বা টিউশনি- দুটির হাটই মহার্ঘ্য। তারা বুঝতে পারে শহরে পার্টটাইম জব বলতে কিছুই নেই; যা আছে যৎসামান্য, সব ফুলটাইম জব পার্টটাইম বলে চালিয়ে দেয়।
একদিকে পরিবার থেকে পড়াশোনার খরচ দিতে পারছে না, অপরদিকে নিজেও নিজের খরচের টাকা আয় করতে না পেরে একজন শিক্ষার্থী হতাশার চরম পর্যায়ে চলে যায়। ফলে এমতাবস্থায় একজন শিক্ষার্থী এসব প্রলোভন দেখানো চাকরিতে পা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে থাকে। তাই মফস্বল থেকে উঠে আসা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে সাত কলেজসহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ক্লাস। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ঢাকামুখী হচ্ছে। এসব নবীন শিক্ষার্থীকে সতর্ক হতে হবে এবং সতর্ক করতেও হবে। পরিবার থেকে এসব বিষয়ে অবগত করতে হবে।
শ্রেণি-শিক্ষকদেরও একজন শিক্ষার্থীকে এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। শুধু শিক্ষার্থী নয়, আগেই আলোচনা করা হয়েছে এ ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছে সব চাকরিপ্রত্যাশী মানুষ। তাই প্রতিটি চাকরিপ্রত্যাশী মানুষকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে। চাকরির সার্কুলার সত্যতা যাচাই করে আবেদন করতে হবে। যদি কোনো ব্যক্তি প্রতারিত হন তা হলে বিলম্ব না করে আইনের সহায়তা নিতে হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ক্রিমিনাল ইনভেস্টমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) এসব প্রতারকের বিরুদ্ধে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তাই আমরা দুর্ভাগ্যবশত প্রতারণার শিকার হলে অবশ্যই আইনের শরণাপন্ন হব।

শেখ আব্দুল্লাহ : শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়