প্রতিবন্ধী তরুণদেরও রাজনীতিতে অংশ নেয়া প্রয়োজন : প্যানেল আলোচনায় ছাত্রনেতারা

আগের সংবাদ

অবস্থান স্পষ্ট করল আওয়ামী লীগ : বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করার কোনো সুযোগ নেই

পরের সংবাদ

এক জয়ে একধাপ এগোলো টাইগাররা

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিশ্বকাপে আফগানদের হারিয়ে ভারত বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে টাইগাররা। ব্যাটে বলে দারুণ পারফরমেন্স দেখিয়ে বাংলাদেশ দল প্রসংশায় ভাসছে সবার। দুর্দান্ত খেলার সুফলও পেয়েছে সাকিব আল হাসানরা। শ্রীলঙ্কাকে হটিয়ে আবারো আইসিসি ওডিয়াই র‌্যাঙ্কিংয়ে সাতে টাইগাররা। তবে, প্রথম ম্যাচের মতো বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচও ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে। এ মাঠের বাজে আউট ফিল্ডের কারণে টাইগারদের ইনজুরি পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপ ও নিউজিল্যান্ড সিরিজে বাজে খেলায় র‌্যাঙ্কিংয়ে অবনতি হয়েছিল বাংলাদেশের। সে সময় বাংলাদেশের পিছনে ফেলে সাতে ওঠা শ্রীলঙ্কার রেটিং পয়েন্ট ছিল ৯৩। অন্যদিকে, টাইগারদের পয়েন্ট ছিল ৯২। কিন্তু বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে আফগানদের সাকিবরা হারিয়ে দেয় ৬ উইকেটে। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কা ভারত বিশ্বকাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচটি ভুলে যেতে চাইবে। লঙ্কান বোলারদের তুলোধুনো করে তিন ব্যাটারের সেঞ্চুরিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫০ ওভারে ৪২৮ রান সংগ্রহ করে। এটি বিশ্বকাপে দলীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। ৪২৯ রানের পাহাড়ের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা সব উইকেট হারিয়ে সর্বসাকুল্যে ৩২৬ রান তুলতে পারে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচে এমন বিপর্যস্ত হওয়ায় শ্রীলঙ্কানদের ওয়ানডে রেটিং পয়েন্টের অবনতি হয়েছে। তাদের পয়েন্ট এখন ৯১। অন্যদিকে, বাংলাদেশের পয়েন্ট বেড়ে দাড়িয়েছে ৯৩ পয়েন্টে। ফলে এক ধাপ এগিয়ে টাইগারদের বর্তমান ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিং এখন সাত।
এদিকে ১১৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে ওয়ানডে র?্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে রয়েছে ভারত। তাদের চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী পাকিস্তান আছে দুইয়ে- রেটিং পয়েন্ট ১১৫। ১১২ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। ১০৮ পয়েন্ট নিয়ে চারে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাঁচে থাকা নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট ১০৪।
এদিকে গতকাল কোনো আনুষ্ঠানিক অনুশীলন ছিল না লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। এরপরও ঐচ্ছিক অনুশীলন সেরেছেন দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। এছাড়া ধর্মশালায় জিম করে সময় কাটিয়েছেন মুশফিকুর রহিম-তাসকিন আহমেদরা। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ভেন্যু ছিল ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ অক্টোবর এ মাঠেই খেলবে টাইগাররা।
আফগানদের সঙ্গে শনিবারের ম্যাচে দেখা যায়- বোলারের রানআপ কিংবা ফিল্ডাররা ডাইভ দিলেই ধুলো ও মাঠের মাটি উঠে যাচ্ছে। এ মাঠে কোথাও ঘাসের পরিমাণ বেশি, আবার কোথাও একেবারেই নেই। ম্যাচ চলাকালীন মজার ছলে স্কুলের মাঠের সঙ্গে ধর্মশালার আউটফিল্ডের তুলনা করেন ধারাভাষ্যকার ম্যাথু হেইডেন ও নাসের হুসেনরা। এদিন বড় ধরনের চোট পেতে পারতেন আফগানিস্তানের মুজিব-উর-রহমান ও নাভিন-উল হকরা। সাকিব আল হাসানের একটি সুইপ শট বাউন্ডারিতে বাঁচাতে গিয়েছিলেন মুজিব। তখনই তার হাঁটুর ঘষা খেয়ে মাঠের মাটি অনেকাংশ সরে গিয়ে গর্ত তৈরি হয়। এরপর একটি বাউন্ডারি বাঁচাতে আজমতউল্লাহ ওমরজাইও প্রায় একই পরিস্থিতিতে পড়েন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদেরও ফিল্ডিংয়ে সমস্যা হয়েছে। আবার মাঠে অসমান ঘাস-বালির কারণে বোলিংয়ে রানআপ ঠিক রাখতে বেগ পেতে হয় তাসকিন-শরীফুলদের। এদিন ম্যাচ শেষে নিজেদের হারের জন্য সরাসরি মাঠ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন আফগান কোচ জোনাথন ট্রট, ‘আপনি যদি ডাইভ দেয়ার ব্যাপারেই অনিশ্চিত থাকেন তাহলে খেলবেন কীভাবে? চোটের ভাবনা মাথায় নিয়ে খেলা যায় না। ভাগ্য ভালো মুজিব চোট পায়নি। আমি নিশ্চিত আগামী দিনে এ ব্যাপারে নজর দেয়া দরকার।’ তবে মাঠের এমন দশাকে ম্যাচ হারের জন্য অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাতে রাজি নন ট্রট। কিন্তু বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজন করার জন্যে ধর্মশালা আদৌ উপযুক্ত কিনা, এমন প্রশ্ন রেখেছেন আয়োজকদের প্রতি। অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে ম্যাচসেরা বাংলাদেশি অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ, ‘মাঠ দেখে খুব ভারি মনে হয়েছে। বল যাচ্ছিল না। কিন্তু আউটফিল্ডকে সব দোষ দিতে রাজি নই।’
ধর্মশালার আউটফিল্ড নিয়ে প্রশ্ন অবশ্য নতুন নয়। এই মাঠেই আগামীকাল ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
এদিকে আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচের পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছেন সাকিব-মিরাজরা।
নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘রমিজ স্পিকস’ এ সাকিব ও মিরাজের প্রশংসা করেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজা। এ জয়ে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসও অনেক বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। মিরাজকে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় এবং সাকিবকে তিনি অনুপ্রেরণাদায়ী অধিনায়ক বলে উল্লেখ করেন। আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের বড় জয় আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বলে মনে করেন রমিজ, ‘সামনে এই জয়টা নিয়ে বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসী বোধ করবে। পাশাপাশি এটাও অনুভব করবে যে বিশ্বকাপে তারাও আছে। সব মিলিয়ে খুবই দৃঢ় পারফরমেন্স। আর যে বড় ব্যবধানে তারা আফগানিস্তানকে হারিয়েছে, নেট রান রেটেও সুবিধা পাবে অনেক।’
অন্যদিকে, এবারের বিশ্বকাপে খালেদ মাহমুদ সুজন রয়েছেন বাংলাদেশ দলের ডিরেক্টর হিসেবে। সে সঙ্গে টিম ম্যানেজমেন্টেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। জয় দিয়ে বিশ্বকাপ আসর শুরু করা বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য- সেমিফাইনাল। টাইগারদের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করেন, বাংলাদেশ দলের সেমিফাইনালে খেলার সামর্থ্য আছে। তারুণ্য নির্ভর বাংলাদেশ দলের শেষ চারে খেলার সম্ভাবনা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সুজন বলেন, ‘হ্যাঁ অবশ্যই আছে। কেন থাকবে না? সম্ভাব্য সেমিফাইনালিস্ট হিসেবে যাদের কথা ভাবা হচ্ছে, তাদের বিপক্ষে কি আমরা কখনো জিতিনি? জিতেছি। এদের মধ্যে কারো কারো বিপক্ষে সিরিজ জয়ের রেকর্ডও আছে আমাদের। কাজেই অতীতে যেহেতু পেরেছি এবার বিশ্বকাপেও পারব। আমি আসলে এভাবেই চিন্তা করছি। আর তাই বলছি সেমিতে খেলার স্বপ্ন দেখাই যায়।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়