মানবতাবিরোধী অপরাধ : মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খান রোকনুজ্জামান গ্রেপ্তার

আগের সংবাদ

ঝুঁকি প্রবল, প্রস্তুতি কম > বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা > মৃত্যুকূপ হবে রাজধানী > দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা নিয়ে সংশয়

পরের সংবাদ

ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ হোক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা শহর কি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে? ঢাকা কেন সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় থাকবে? এমন হাজারো প্রশ্নের মধ্যে নগরবাসী। রাজধানীতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে যানজট। এই যানজটের প্রধান কারণ ব্যক্তিগত গাড়ি। রাজধানীতে প্রতিদিন যে সংখ্যক যাত্রী চলাচল করে, এর মধ্যে ৬ থেকে ৮ শতাংশ ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল করে। বাকি যাত্রী গণপরিবহন (বাস ও মিনিবাস), রিকশা, মোটরসাইকেল এবং পায়ে হেঁটে চলাচল করে। কর্মব্যস্ত, কোলাহলমুখর নগর জীবনে যানজট নিত্যদিনের সমস্যা। প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি পর্যন্ত যানজট বিস্তৃত। যানজটে নিশ্চল হয়ে বসে থাকা যানবাহনের সারির দিকে তাকালে গণপরিবহনের তুলনায় ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাই বেশি দেখা যায়। তাছাড়া রাস্তার পাশে পার্ক করা গাড়ির কারণে রাস্তার পরিধি ছোট হয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় যানজট আরো তীব্র আকার ধারণ করে। অথচ ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণে আনার কথা কেউ চিন্তা করতে পারে না। গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা সম্ভব, ব্যক্তিগত গাড়ির কারণে আমাদের নগর জীবন কত দিক থেকে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
বিপণিবিতান, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশেও একই চিত্র। রাস্তার দুই পাশে লাইন ধরে ব্যক্তিগত গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়। এর ফলে এখানে আগত মানুষই যে কেবল সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তাই নয়, হেঁটে যাতায়াতরত সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হয়। অপরদিকে প্রায়ই দেখা যায় ফুটপাতের ওপর দিয়ে চলছে মোটরসাইকেল। এমন পরিস্থিতিতে নিশ্চিন্তে হেঁটে যাতায়াত ও সাইকেল চালানোর সুযোগ কতটুকু? চলাচল এবং পার্কিংয়ের মাধ্যমে ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তার বেশির ভাগ জায়গা দখল করে রাখে। রাস্তা জনগণের, এটা কারো ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের জায়গা নয়। তাই রাস্তায় মানুষ হাঁটবে, সাইকেল চালাবে- এটাই স্বাভাবিক। আমরা সবাই জানি, শারীরিক সুস্থতার জন্য হাঁটাহাঁটি এবং বাইসাইকেল চালানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হেঁটে ও সাইকেলে যাতায়াতে খুব কম জায়গার দরকার হয়, খরচ ও জ¦ালানির প্রয়োজন হয় না, পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। তাছাড়া যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে হাঁটা ও সাইকেল নিরাপদ।
প্রাইভেট কারের ব্যবহার না কমালে গণপরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি হাঁটা এবং সাইকেল চলাচলের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রায় অসম্ভব। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ করে একটি মানসম্মত ও কার্যকর গণপরিবহন ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব। ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা গেলে সব মানুষ তো নিশ্চয়ই, গরিবরা বিশেষভাবে উপকৃত হবে। হাঁটা ও সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর হয়ে গেলে এবং গণপরিবহনে সুব্যবস্থা নিশ্চিত হলে বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে যাতায়াতের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
গাড়ি ছাড়াই মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে চলাফেরা করেছে। অথচ এখন আমরা গাড়ি ছাড়া চলতে পারছি না কেন? যুগের সঙ্গে তাল ি পাশাপাশি অধিকতর দূরত্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপদ পরিবহন ব্যবস্থা হলে আশা করি, সম্মানিত অভিভাবকরা তাদের শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত গাড়ি পরিহার করে গণপরিবহনে যাতায়াত নিশ্চিত করবে।

এম এ মান্নান মনির : উন্নয়নকর্মী, ঢাকা।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়