চরমোনাই পীর : দেশ ভয়াবহ সংঘাতের মুখে নিপতিত

আগের সংবাদ

৩০ বছরেও শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছেনি থানচির দুর্গম অঞ্চলে

পরের সংবাদ

বিশ্বকাপে সাকিবের সামনে যত রেকর্ড

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ১, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শেখ মাহমুদুল হাসান নকীব : ভারতের মাটিতে আগামী ৫ অক্টোবর মাঠে গড়াবে এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ক্রিকেটের সবচেয়ে জাকজমক আসরটি রেকর্ড ভাঙা-গড়ার এক মহোৎসব। বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসানও অপেক্ষায় আছেন রেকর্ডবুকে নিজের নামকে আরো সমৃদ্ধ করার। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার নয়ে থাকা সাকিবের সামনে হাতছানি দিচ্ছে এ রেকর্ডবুকের তিনে ওঠার। এছাড়া বোলিংয়েও বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটসংগ্রাহকের তালিকাও উপরে উঠে আসার সুযোগ রয়েছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের সামনে।
বাংলাদেশের হয়ে ইতোমধ্যে চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন সাকিব আল হাসান। এ চার বিশ্বকাপে ২৯টি ম্যাচে ৪৫.৮৪ গড়ে তিনি করেছেন ১ হাজার ১৪৬ রান। যা বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে বাংলাদেশের জার্সি গায়ে কারো করা সর্বোচ্চ রান। বিশ্বকাপে সাকিবের রয়েছে ১০টি অর্ধ-শতক ও ২টি শতক হাঁকানো ইনিংস। সাকিবের বিশ্বকাপের মোট রানের মধ্যে ৬০৬ রানই করেছেন ইংল্যান্ডের মাটিতে অনুষ্ঠিত ২০১৯ বিশ্বকাপে। এ বিশ্বকাপে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৮৬.৫৭।
সে আসরে খেলা আট ম্যাচের মধ্যে রয়েছে দুইটি শতক ও ৫টি অর্ধশতক। বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় নয়ে থাকা সাকিবের সামনে সুযোগ রয়েছে তালিকার পাঁচ নাম্বারে উঠে আসার। বিশ্বকাপে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হতে বাংলাদেশ অধিনায়কের আর প্রয়োজন মাত্র ৬২ রান। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ রান করতে পারলেই প্রোটিয়া কিংবদন্তী এবি ডিভিলিয়ার্সকে পেছনে ফেলবেন সাকিব। ২০০৭ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত তিনটি বিশ্বকাপ খেলা ডিভিলিয়ার্স ২২ ইনিংসে করেছেন ১২০৭ রান। শুধু ডিভিলিয়ার্সই নয় সাকিবের সামনে সুযোগ রয়েছে তালিকার তিনে উঠে আসার। রবিন লিগ পদ্ধতিতে এবারের বিশ্বকাপে অংশ নেয়া প্রতিটি দল একে অপরের মুখোমুখি হবে। ফলে, নকআউট পর্বের আগে বাংলাদেশের ম্যাচ রয়েছে ৯টি। সাকিব যদি এবার ৫০০ রান করতে পারেন তাহলে তিনি পেছনে ফেলবেন লঙ্কান কিংবদন্তী উইকেট কিপিংব্যাটার কুমার সাঙ্গাকারাকে। শীর্ষ তিনে থাকা সাঙ্গাকারা খেলেছেন ২০০৩ থেকে ২০১৫ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। চারটি বিশ্বকাপে ৩৭টি ম্যাচে তিনি করেছেন ১৫৩২ রান। আর সাকিব যদি অন্তত ৬০০ রান করতে পারেন তাহলে তিনি শীর্ষ দুইয়ে থাকা সাবেক অজি ক্যাপ্টেন রিকি পন্টিংকে পেছনে ফেলবেন। ১৯৯৬ থেকে পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলা অস্ট্রেলিয়ান পন্টিং ৪৬ ম্যাচে করেছেন ১৭৪৩ রান। সাকিব এবার অন্তত ৬০০ রান করতে পারলে বিশ্বকাপে তার রানসংখ্যা হবে ১৭৪৬। তবে শীর্ষে থাকা শচীন টেন্ডুলকারকে ছোঁয়া অসম্ভবই বলা যায়। ১৯৯২ থেকে ২০১৫ অবধি ছয়টি বিশ্বকাপ খেলা ভারতীয় ক্রিকেট ঈশ্বর ৪৫ ম্যাচে করেছেন ২২৭৮ রান।
তবে সাকিব অন্য একটি তালিকায় শীর্ষ স্থান নিজের করে আছেন। জাতীয় দলের বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে তার রানসংখ্যাই সর্বোচ্চ। ১১৪৬ রান করা সাকিবের পরই দুইয়ে আছেন ভারতের বিরাট কোহলি। ২০১১, ২০১৫, ২০১৯ এ তিনটি বিশ্বকাপে খেলা কোহলি ২৬ ম্যাচে ১০৩০ রান করেছেন। এবারের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড দলে জায়গা পাননি মার্টিন গাপটিল। তবে এখনো অবসরেও যাননি তিনি। তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন গাপটিলই। নিউজিল্যান্ডের এই ওপেনার ২৭ ম্যাচে ৪৩.২৬ গড় নিয়ে করেছেন ৯৯৫ রান। তার ঝুলিতে রয়েছে ২টি শতক ও ৪টি অর্ধশতক হাকানো ইনিংস। তালিকায় এরপরে রয়েছেন ৬২ গড়ে ১৮টি ম্যাচে ৯৯২ রান করা অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার।
বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসনের সামনে সুযোগ রয়েছে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তালিকায় অবস্থান আরো সামনে আনার। ২৯ ইনিংসে ৩৪ উইকেট শিকার করা সাকিবের বর্তমান অবস্থান ১৬ নাম্বারে। এবারের আসরে ১০টির বেশি উইকেট নিজের ঝুলিতে নিতে পারলেই সাকিব উঠে আসবেন তালিকার ছয় নম্বরে। তালিকায় যৌথভাবে ৬ নম্বরে রয়েছেন দুই ভারতীয় জহির খান ও শ্রীনাথ। তাদের রয়েছে ৪৪টি করে উইকেট।
এশিয়া কাপে ভরাডুবির পর ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হারের কষ্ট নিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে ভারত যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে, এর মধ্যে অভিজ্ঞ ওপেনার তামিম ইকবালের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়া নিয়ে সরব ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গন। সবমিলিয়ে মানসিকভাবে ফুরফুরে থাকার কোনো কারণ ছিল না। গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রধান শিরোনাম বিশ্বের এক নাম্বার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তামিম ইকবালের বিশ্বকাপ দলে জায়গা না পাওয়ার জন্য তামিম ভক্তরা দায়ি করেছেন সাকিবকেই। সে সাকিবের নেতৃত্বেই ভারতে বিশ্বকাপ মিশনে গেছে বাংলাদেশ।
টাইগারদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে বলাই যায়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে ৭ উইকেটের এক স্বস্তির জয় পায় বাংলাদেশ। যদিও, চোট পাওয়ায় সে ম্যাচে খেলতে পারেননি সাকিব আল হাসান। গুয়াহাটিতে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচের আগের রাতে ফুটবল খেলতে গিয়ে বা পায়ে ব্যাথা পান সাকিব। এতে, তার পা অনেকটাই ফুলে যায়। যার কারণে ৭ অক্টোবর বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষেও সাকিবের খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দেয়।
যদিও বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন দিয়েছেন স্বস্তির খবর। গণমাধ্যমকে তিনি আস্বস্ত করেন, ‘বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সাকিব অবশ্যই খেলবে। তার ইনজুরি মোটেও গুরুতর কিছু না। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের আগেই সে পুরোপুরি ফিট হয়ে যাবে।’ এরপরই সুজন বলেন, ‘সাকিবের কিছুটা অস্বস্তি ছিল। এ কারণে সতর্কতা হিসেবে বিশ্রাম দেয়া হয়েছিল তাকে। যদিও শুনছি সাকিবের ইনজুরি নিয়ে দেশে তোলপাড়।
আসলে তেমন গুরুতর কোনো ইনজুরি না এটা। আমি বলছি, সাকিব ৭ অক্টোবর অবশ্যই বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়