জন্মদিনের শুভেচ্ছাপত্র

আগের সংবাদ

অদ্ভুদ আবাস!

পরের সংবাদ

ডেঙ্গুর টিকা উদ্ভাবন : গবেষক দলকে অভিনন্দন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ গবেষণার পর অবশেষে ডেঙ্গু প্রতিরোধে টিকার সফল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের গবেষকরা এই টিকার সফল পরীক্ষা করেছেন। এটি একটি আশাব্যঞ্জক ঘটনা। এ উদ্ভাবন সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকসহ সবাইকে আমরা অভিনন্দন জানাচ্ছি। প্রতিবছর দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। এতে করে অসংখ্যা প্রাণ ঝরছে। এমতাবস্থায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে টিকার বিষয়টি বারবার সামনে আসছে। ২০১৫ সালে আইসিডিডিআরবি ও যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের গবেষকরা ‘ডেঙ্গু ইন ঢাকা ইনিশিয়েটিভ (ডিডি)’ নামে এ গবেষণাটি শুরু করে। এর লক্ষ্য ছিল ডেঙ্গু টিকার উন্নয়নে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করা। শুরুতে আইসিডিডিআরবিতে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ল্যাবরেটরি পরীক্ষণ অবকাঠামো এবং ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অধ্যয়ন সংশ্লিষ্ট গবেষণায় প্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি করা হয়। ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪। টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে, ৪টি ধরনের বিরুদ্ধেই এই টিকা অ্যান্টিবডি তৈরিতে সাফল্য দেখিয়েছে। এই টিকার নাম দেয়া হয়েছে টিভি-০০৫ (টেট্রাভেলেন্ট)। গবেষকরা বলছেন, এ টিকা শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের প্রয়োগ নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম। আমরা আশ্বস্ত হতে চাই। গবেষকরা বহু বছর ধরে ডেঙ্গু ভাইরাসের বিরুদ্ধে একটি কার্যকর টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ২০১৯ সালে বিখ্যাত ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি সানোফির আবিষ্কৃত ডেনভ্যাক্সিয়া নামক একটি ডেঙ্গু টিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমোদন লাভ করে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ২০ ডেঙ্গুপ্রবণ দেশে এটি ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যদিকে জাপানের তৈরি কিউডেঙ্গা সবচেয়ে বেশি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে ডেন-২ সেরোটাইপের বিরুদ্ধে। সুতরাং এদিক থেকেও টিকাটি অন্য টিকার চেয়ে এগিয়ে আছে। কিউডেঙ্গা টিকা ইতোমধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে এবং নরওয়ে, আইসল্যান্ড, লিচেনস্টাইন, ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে অনুমোদন পেয়েছে। ডেঙ্গুর প্রকোপ মোকাবিলায় মশা নিধনের পাশাপাশি ডেঙ্গুর ভ্যাকসিন প্রয়োগে মনোনিবেশ এবং এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নীতিনির্ধারকদের তাগিদের কথা শুনছি। যুক্তরাষ্ট্র্রের টিকা প্রয়োগের কথাও শোনা গেছে। টিকাবিষয়ক জাতীয় কমিটি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কয়েকটি বৈঠক করেছে। অগ্রগতি কী আমাদের জানা নেই। এর মধ্যে বাংলাদেশে নতুন টিকা উদ্ভাবনের খবর জানলাম। এটি কখন থেকে প্রয়োগ করা যাবে, সেটা এখন দেখার বিষয়। এ বছর এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৩১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাই বলছেন, এর বাইরে অন্তত চার গুণ বেশি মানুষ এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এ বছরের আগে দেশে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছিল ২০১৯ সালে। এবার ডেঙ্গুতে মৃত্যু হাজার ছাড়িয়ে গেছে। কালের পরিক্রমায় ডেঙ্গু সংক্রমণের সময়েরও পরিবর্তন ঘটেছে। আমরা দেখছি, প্রতি বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। এমতাবস্থায় টিকা প্রয়োগের বিষয়টি সরকারকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেয়া উচিত।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়