প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেছেন

আগের সংবাদ

ব্যাখ্যা চায় ক্ষুব্ধ গণমাধ্যম : গণমাধ্যমের বিরুদ্ধেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকির প্রতিক্রিয়া

পরের সংবাদ

এ মৃত্যুর দায় কে নেবে?

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

একসময় রাজনৈতিক ও সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হরহামেশাই বড় ধরনের খুনের ঘটনা ঘটত। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ ধরনের খুনের ঘটনা আগের তুলনায় কমে গেছে। বেড়ে গেছে বীভৎস, বিকৃত ও লোমহর্ষক খুনের ঘটনা। প্রতিদিনই এ ধরনের খুনের ঘটনা কোথাও না কোথাও ঘটছে। পাশাপাশি নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণ, মাদক কারবার, অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বাড়ছে। এমন ঘটনাগুলো আমাদের ভাবায়। ভাবতে হয়। গত দুদিন ধরে গণমাধ্যমের আলোচিত বিষয় ভুবন চন্দ্র শীল। গত সোমবার রাতে ঢাকার রাস্তায় সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ার সময় তিনি আহত হন। গতকাল সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির বেসরকারি একটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সেখানে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। জানা যায়, ওই রাতে তেজগাঁও শিল্প এলাকার বিজি প্রেসের সামনের রাস্তায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ ওরফে মামুনের প্রাইভেট কার লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে এক দল সন্ত্রাসী। এ সময় মোটরসাইকেলে করে ওই পথ দিয়ে নিজ বাসায় ফেরার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হন ভুবন। এমন ঘটনা হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করা, খুনিদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা জরুরি মনে করছি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন- এই ছয় মাসে রাজধানীতে ৮৪টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে গেল জুন মাসেই খুনের ঘটনা ঘটেছে ২৪টি। পুলিশ এর মধ্যে ২০টি খুনের রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে। বাকি চারটির তদন্ত চলমান রয়েছে। সম্প্রতি রাজধানীতে ছিনতাইয়ের ঘটনাও বাড়ছে। গত দেড় বছরে চার শতাধিক ব্যক্তি ছিনতাইকারীর হামলার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে অন্তত ৩০ জন ছিনতাইকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন হয়েছেন। খুনের ঘটনার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পুলিশ জানায়, ব্যক্তিগত বিরোধ, পারিবারিক কলহ, আর্থিক লেনদেন, মাদক, সামাজিক আধিপত্য নিয়ে বিরোধ, জমিজমা দখল এবং কোথাও কোথাও রাজনৈতিক কারণে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সাধারণ মানুষের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এসব কেবল আইনশৃঙ্খলার অবনতির দৃষ্টান্তই নয়, সামাজিক অসুস্থতারও লক্ষণ। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, সামাজিক অস্থিরতা, পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হওয়া ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। ভোগবাদী হয়ে উঠছে মানুষ। কমছে মানুষের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ। এ কারণে তুচ্ছ ঘটনার জেরে একে অপরকে নৃশংস খুন করতে দ্বিধা করছে না। সাধারণভাবে এ ধরনের খুন-খারাবি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিই নির্দেশ করে। দেশে আইনের শাসন, অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা বলবৎ থাকলে অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে থাকারই কথা। আমাদের দেশে এ ক্ষেত্রে দুর্বলতা আছে, তা স্বীকার করতেই হবে। অনেক আলোচিত, চাঞ্চল্যকর হত্যা-নির্যাতনের ঘটনা বিচারহীন থাকছে দিনের পর দিন। অপরাধীরা নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে লঘু দণ্ডে পার পেয়ে যেতে পারছে। নাগরিকদের রক্ষা করাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। যে কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর দ্রুত তার রহস্য উদ্ঘাটন করা এবং অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়