রাজধানীর ওয়ারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু

আগের সংবাদ

মুখে স্বস্তির ভাব, মনে উদ্বেগ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড়

পরের সংবাদ

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন হই

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বর্তমানে আলোচিত এক রোগের নাম ডেঙ্গু। প্রতিদিন উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে বর্তমানে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে।
ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত রোগ। এডিস মশার কামড়ে এ রোগ হয়ে থাকে। তাই এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে পারলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব। সাধারণত বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মশার উৎপাত বাড়ে। তাই মশার উৎপাত বাড়ার পূর্ব থেকে মশা নিধন কার্যক্রম শুরু করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সামাজিকভাবেও মশা নিধন কার্যক্রমের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সাধারণত দেখা যায় মশার উৎপাত বেড়ে গেলে মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করতে অতীত অভিজ্ঞতা সেটাই বলে। সে ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে মশার উৎপাত বেড়ে যাওয়ার সময়ের পূর্বে থেকে পরিকল্পনা করে মশা নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। পাশাপাশি প্রচার মাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালাতে হবে। প্রচারের মাধ্যমে জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে হবে। মানুষ যত সচেতন হবে, তত রোগমুক্ত থাকা যাবে। তাই বলা হয়, অসচেতনতা বাড়ায় দুর্ভোগ, সচেতনতা কমায় রোগ। অধিকাংশ মানুষের স্বভাব অল্প থাকতে গুরুত্ব না দেয়া। বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সচেতন হওয়া। এ স্বভাবটা বদলানো প্রয়োজন। অল্পতে যদি কোনো রোগকে নির্মূল করা যায়, তবে সে রোগ বাড়তে পারে না। তাই যে কোনো কিছু অল্পতে নির্মূল করার পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। ডেঙ্গু রোগের জীবাণু বহনকারী মশাকেও বংশবিস্তার করার পূর্বে নির্মূল করার পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে রোগের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ না করে। আমাদের অসচেতনতার কারণে বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শহরের পাশাপাশি গ্রামেও ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিয়ে হাজির হয়েছে। বলা যায়, ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করতে চলেছে। নিজেদের পাশাপাশি সর্বসাধারণকে সচেতন করা অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। এডিস মশার বংশ রোধে আমাদের করণীয় হচ্ছে- এডিস মশা যেখানে স্বচ্ছ পানি জমে থাকে সেসব স্থানে বংশ বিস্তার করে; যেমন- ডাবের খোসা, নারকেলের মালা, গাড়ির পুরনো টায়ার, প্লাস্টিক বক্স, আইসক্রিম বক্স, বাড়ির ছাদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাদ, নির্মাণাধীন ভবন, ফুলের টব, নালা, পানির বদনা, পানির ট্যাপের আশপাশের স্থান, ফ্রিজ এবং এসির পানি জমার স্থান, পানির পাম্প, হাইকমোড প্রভৃতি স্থানে এডিস মশা বংশ বিস্তার করে। তাই এসব স্থান প্রতিদিন সম্ভব না হলে এক দিন পরপর পরিষ্কার রাখতে হবে, যাতে এডিস মশা বংশ বিস্তার করতে না পারে। প্রতিদিন দিনে ও রাতে অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে আতঙ্কিত না হয়ে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখতে হবে সচেতনতাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায়। পরিবারের শিশুদের যতœ নিতে হবে। দিনের বেলা বাইরে বের হলে হাত-পায়ের উন্মুক্ত স্থান কাপড় দিয়ে ঢেকে যায় এমন পোশাক পরিধান করে বের হতে হবে। শিক্ষকদের বিদ্যালয়ের চতুর্পাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা ডেঙ্গু মশার আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। শিক্ষকরা ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে এবং বাড়ির আশপাশ সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে পরামর্শ দিতে হবে। প্রয়োজনে মা অভিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে শিক্ষকরা এলাকাবাসীকে সচেতন করতে পারেন। শিক্ষকরা হচ্ছেন সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিতে সব সচেতন মহলকে এগিয়ে এসে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ডেঙ্গু মুক্ত করতে হবে দেশকে। আসুন সচেতন হই ডেঙ্গুকে দেশ থেকে তাড়াই। এডিস মশার বাস করব এবার নাশ। এই কথাটি আসুক সবার বোধে। আসুন সবাই হই সচেতন। ঘাতক এডিস মশা প্রতিরোধে।

বিভাস গুহ : শিক্ষক ও লেখক
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়