রাজধানীর ওয়ারীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শ্রমিকের মৃত্যু

আগের সংবাদ

মুখে স্বস্তির ভাব, মনে উদ্বেগ : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড়

পরের সংবাদ

জলাবদ্ধতা থেকে নগরবাসীর মুক্তি মিলবে কবে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সঠিক পরিকল্পনার অভাব এবং দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে রাজধানীবাসী জলাবদ্ধতার ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে ঢাকা ওয়াসা, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংস্থা গত ১২ বছরে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করলেও কার্যকর কোনো সমাধান হয়নি। কারণ হিসেবে নদী, খাল-বিলের মতো প্রাকৃতিক জলাশয় দখল ও ভরাটকে দায়ী করছেন নগর বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি তারা দায়ী করছেন অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণকেও। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত টানা ছয় ঘণ্টার ভারি বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। বিভিন্ন সড়কে জমে থাকা পানিতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে। ছিঁড়ে পড়া তার থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে মিরপুরে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। বিষয়টি দুঃখজনক। এমন মৃত্যুর দায়ভার কে নেবে? ঢাকা শহর ৮০ থেকে ৯০ ভাগ কংক্রিটে আচ্ছাদিত। যেখানে একটি শহরে ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ সবুজ এবং জলাশয় থাকার কথা, সেটা তো নেই। এমন অবস্থায় নগর তো ডুববে, এটাই স্বাভাবিক। বৃহস্পতিবারের ৬ ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাজধানীর মালিবাগ, শান্তিনগর, সায়েদাবাদ, শনির আখড়া, পুরান ঢাকা, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, ধানমন্ডি, মিরপুর-১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশ, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেট যেতে লিং রোড, খামারবাড়ী থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকা, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, গুলশান লেকপাড় এলাকার সংযোগ সড়কসহ বিভিন্ন অলিগলিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। টানা বর্ষণে রাজধানী ও আশপাশের নিচু এলাকা তলিয়ে লাখ লাখ পানিবন্দি মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্দশা। ঢাকার মতো রাজধানী শহরে এ ধরনের জলাবদ্ধতা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, চলতি বছরে বর্ষা মৌসুমের আগে জলাবদ্ধতা নিরসনে বেশকিছু কাজ হয়েছে। ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দীর্ঘ ৩৪ বছর পর শাখা-প্রশাখাসহ ১১টি অচল খাল, বর্জ্যে জমাটবদ্ধ পাঁচটি বক্স কালভার্ট ও প্রায় ২০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে নর্দমার মালিকানা নিয়েছে সংস্থাটি। দায়িত্বভার গ্রহণের পর এসব খাল, বক্স-কালভার্ট ও নর্দমা থেকে বর্জ্য অপসারণ, সীমানা নির্ধারণ ও দখলমুক্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজস্ব অর্থায়নে ২২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গত তিন বছরে ১৩৬টি স্থানে অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করেছে ডিএসসিসি। প্রতিটি অর্থবছরেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন জলাবদ্ধতা নিরসনে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ রাখে। সে বরাদ্দ মাফিক কাজও হয়, কিন্তু ভোগান্তি শেষ হয় না। তাই প্রশ্ন উঠেছে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের হাজার হাজার কোটি টাকার আদৌ সদ্ব্যবহার হচ্ছে কিনা। নগরীর জলাবদ্ধতা নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখি কম হয়নি। সরকারের নানামুখী উদ্যোগ, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পরামর্শ কোনোটাই যেন কাজে আসছে না। আমরা মনে করি, জলাবদ্ধতা নিরসনে রাজধানীর খালগুলো ভূমিকা রাখতে সক্ষম। নগরীর খালগুলো উদ্ধারে কর্তৃপক্ষকে আরো সোচ্চার হতে হবে। শুধু প্রকল্পের মাধ্যমে বিপুল অর্থ ব্যয় করলে জলাবদ্ধতার সমাধান হবে না। বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার পথকে সব সময় উন্মুক্ত রাখতে হবে। সর্বোপরি জলাবদ্ধতার কারণ চিহ্নিত করে তা বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে কিনা, সেদিকে কঠোর দৃষ্টি দিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়