গ্রেপ্তার ৩ : মাদকের টাকা যোগাড় করতে চুরি

আগের সংবাদ

সাহারার সেকাল একাল

পরের সংবাদ

সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা- এ পাঁচটি মৌলিক অধিকারের মধ্যে শিক্ষা অন্যতম। বাংলাদেশের সংবিধানে সব নাগরিকের জন্য শিক্ষা মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। সংবিধান ও আইনে সবার জন্য সমতাভিত্তিক শিক্ষা, গুণগত ও সমমানের শিক্ষা লাভের অধিকার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে। আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৭-তে বলা হয়েছে- ‘(ক) একই পদ্ধতির গণমুখী ও সর্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সব বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য (খ) সমাজের প্রয়োজনের সহিত শিক্ষাকে সঙ্গতিপূর্ণ করার উদ্দেশ্যে যথাযথ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও সদিচ্ছাপ্রণোদিত নাগরিক সৃষ্টির জন্য, (গ) আইনের দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
সময়ে সময়ে সরকারকর্তৃক প্রণীত নীতিমালাসমূহ, সাংবিধানিক এ স্বীকৃতি, ১৯৭৯ সালে জাতিসংঘকর্তৃক গৃহীত নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ, ১৯৯০ সালে থাইল্যান্ডের জমতিয়েনে অনুষ্ঠিত সর্বজনীন বিশ্ব শিক্ষা সম্মেলন, ১৯৯৫ সালে বেইজিং ঘোষণা এবং ২০০০ সালে সেনেগালের ডাকারে অনুষ্ঠিত সবার জন্য শিক্ষা (ঊঋঅ) ঘোষণাপত্রের অঙ্গীকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যের সঙ্গে অভিন্ন। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০, রূপকল্প-২০৪১ ও সর্বোপরি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (ঝউএ) ৪নং অভীষ্ট পূরণকল্পেই এই মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের আন্দোলন। ২০১৬ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জিতব্য জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৪নং অভীষ্ট তথা ঝউএ-৪ এ বলা হচ্ছে ‘ঊহংঁৎব ওহপষঁঁংরাব ধহফ ঊয়ঁরঃধনষব ছঁধষরঃু ঊফঁপধঃরড়হ ধহফ চৎড়সড়ঃব খরভবষড়হম খবধৎহরহম ভড় ধষষ.’ যা সরল বাংলায় দাঁড়ায়- সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমতাভিত্তিক গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি। এর ৭টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৪ দশমিক ১ ও ৪ দশমিক ২ প্রাথমিক শিক্ষার সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক; যা হলো- ৪ দশমিক ১; ২০৩০ সালের মধ্যে সব ছেলে ও মেয়ে যাতে প্রাসঙ্গিক, কার্যকর ও ফলপ্রসূ অবৈতনিক, সমতাভিত্তিক ও গুণগত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করতে পারে তা নিশ্চিত করা। ৪ দশমিক ২; ২০৩০ সালের মধ্যে সব ছেলে ও মেয়ে যাতে প্রাথমিক শিক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাসহ শৈশবের একেবারে গোড়া থেকে মানসম্মত বিকাশ ও পরিচর্যার মধ্য দিয়ে বেড়ে ওঠে তার নিশ্চয়তা বিধান করা।
সে লক্ষ্যেই ২০৩০ সালের মধ্যে সব শিশুর জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের রূপকল্পে (ঠরংরড়হ) বর্ণিত আছে- সবার জন্য মানসম্মত প্রাথমিক ও মৌলিক শিক্ষা। এর জন্য অভিলক্ষ্য (গরংংরড়হ) ঠিক করা হয়েছে- প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ ও গুণগতমান উন্নয়নের মাধ্যমে সবার জন্য প্রাথমিক ও মৌলিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ। আর এই অভিলক্ষ্য অর্জনের জন্য ৪টি কৌশলগত লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে; যা হলো- ১. সর্বজনীন, একীভূত ও বৈষম্যহীন প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণ। ২. মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ। ৩. উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সম্প্রসারণ ও নিশ্চিতকরণ। ৪. প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাপনা বিকেন্দ্রীকরণ।
সর্বশেষ জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২৫ সালের জন্য গৃহীত সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার ১৭.৭.২-এ বর্ণিত প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও ১৭.৭.৩-এ বর্ণিত প্রাথমিক শিক্ষার ঝরে পড়া ও অনুপস্থিতি কমানো, শিক্ষায় আরো ভালো সুফল, উত্তম নাগরিক সৃষ্টি এবং পাঠদানের ফলাফল পরিমাপে আরো ভালো পরিমাপের উন্নয়ন বিষয়গুলো সবার জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যেই গৃৃহীত। আজকের শিশুদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের (৪ওক) জন্য দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাদের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই। তৎপ্রেক্ষিতেই প্রাথমিক শিক্ষার পরিবর্তিত লোগো ‘সবার জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ।’

আশীষ কুমার আচার্য্য : তোমরা, রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়