নাটোর : ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

রাজপথে ফের শক্তির মহড়া : বিএনপির ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণার পর দিনই টানা কর্মসূচি দিল আওয়ামী লীগ

পরের সংবাদ

স্মৃতিতে কত অজানারে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কলকাতা নগর প্রতিষ্ঠা এবং রাজধানীর মর্যাদা পাওয়ার আগে অখণ্ড বাংলার পূর্বাংশ পশ্চিমাংশের তুলনায় ছিল অগ্রসর। কেননা মোগল আমলে বাংলার রাজধানী ছিল ঢাকা। মোগলদের সুবেদার, আমির-উমরাহদের আবাসও ছিল ঢাকায়। ঢাকার মোগল স্থাপনাগুলোর অনেক নিদর্শন বর্তমানেও রয়েছে। নবাব মুর্শিদকুলি খান বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত করার ফলে ঢাকার ঐতিহ্যে ভাটা পড়ে যায়। তবে ঢাকাকে দ্বিতীয় রাজধানীর মর্যাদা দেয়ার ফলে ঢাকার মান কিছুটা রক্ষা হয়।
পলাশীর প্রহসন যুদ্ধের পর অখণ্ড বাংলা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির করতলগত হওয়ার পর থেকে ঢাকার মর্যাদা-ঐতিহ্যের ক্রমান্বয়ে বিলোপ ঘটে। ঢাকার বিখ্যাত মসলিম বস্ত্র, তাঁতসহ বস্ত্রশিল্পকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়া হয়। তাঁতশিল্পের কারিগরদের আঙ্গুল কেটে পর্যন্ত পূর্ববঙ্গের তাঁতিদের তাঁত শিল্প থেকে বিচ্যুত করা হয়। উৎপাদক থেকে আমরা পরিণত হয়ে যাই ব্রিটিশ পণ্যের ক্রেতা হিসেবে। ব্রিটিশ পণ্যের বাজারজাত করার অভিপ্রায়েই ইংরেজরা এমন নৃশংস পন্থা গ্রহণ করেছিল। ওদিকে আমাদের কাঁচামাল জাহাজ বোঝাই করে নিজ দেশে নিয়ে পণ্য উৎপাদন করে আমাদেরই ওই পণ্যের ক্রেতায় পরিণত করেছিল।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বন্দরের সুবিধা বিবেচনায় সুতানটি, গোবিন্দগঞ্জ এবং কোলকাতা নামক তিনটি গ্রামকে নিয়ে লন্ডনের আদলে গড়ে তোলে কলকাতা নগর। এবং রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে সরিয়ে কলকাতায় স্থানান্তরিত করার ফলে কলকাতা নগরীর গুরুত্ব ও মর্যাদা দ্রুত প্রতিষ্ঠা লাভ করে। অপরদিকে বাংলার নিম্নাঞ্চল পূর্ব বাংলার প্রতি কোম্পানির আগ্রহ কোনোরূপ না থাকার ফলে পূর্ববঙ্গ ক্রমাগত মফস্বলে পরিণত হয়। দুই বাংলার উন্নতি ও উন্নয়নের বিকাশ ঘটে সম্পূর্ণ বিপরীতে। পশ্চিম বাংলার অভাবনীয় উন্নয়ন আর পূর্ব বাংলার প্রতি ইংরেজদের অবহেলার দরুন পূর্ব বাংলার উন্নয়ন-অগ্রগতি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। অপরদিকে পুরো ভারতবর্ষকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছলে, বলে ও কৌশলে দখল করে নেয়। ভারতবর্ষের রাজধানীর মর্যাদায় কলকাতা শিক্ষা, সংস্কৃতি হতে সব ক্ষেত্রে ভারতবর্ষের শ্রেষ্ঠতম হয়ে ওঠে। ১৯১১ সাল অবধি কলকাতা ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বঙ্গভঙ্গ রদ হওয়ার ফলে ব্রিটিশরা প্রতিশোধে রাজধানী কলকাতা থেকে সরিয়ে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করে। ফলে কলকাতার গুরুত্ব-মর্যাদা হ্রাস পায়। কলকাতাকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশরা এক অনুগত শিক্ষিত শ্রেণি গড়ে তোলে। যারা ভারতীয় হলেও ইংরেজ সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তিতে ইংরেজ সরকারের তাঁবেদারে পরিণত হয়েছিল। যারা সুদীর্ঘ ১৯০ বছরব্যাপী ইংরেজ শাসনকে নির্বিঘœ করেছিল।
ইংরেজ শাসনাধীনে অখণ্ড বাংলার পূর্ব বাংলা হয়ে পড়েছিল অবহেলিত এক পশ্চাৎপদ জনপদ। অপরদিকে পশ্চিম বাংলার সমৃদ্ধি বৃদ্ধির ফলে পূর্ব বাংলা পশ্চিম বাংলার অধীন হয়ে পড়ে। পূর্ব বাংলার বস্ত্রশিল্পসহ নানা সম্ভাবনার অপমৃত্যু ঘটিয়ে ইংরেজ শাসকরা পূর্ব বাংলাকে কৃষিনির্ভর হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল।
পশ্চিম বাংলার স্থানীয় বাঙালিরা পূর্ববঙ্গীয়দের সম্পর্কে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য মনোভাব পোষণ করত। তার নজির আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় পর্যন্ত জেনেছি। বহু আগে থেকে কলকাতাসহ ভারত ভ্রমণের ফলে কিছু ব্যক্তির সঙ্গে আলাপে তাদের মনোভাব জেনেছি। করোনার পূর্বে শান্তিপুর লোকাল ট্রেনে ফুলিয়া থেকে শিয়ালদা ফেরার পথে ট্রেনে জনৈক শান্তিপুরের স্থানীয় এক ব্যক্তি চিৎকার করে অন্যদের শুনিয়ে বলছিলেন, ‘কুকুরকে আশ্রয় দিলেও বাঙালদের আশ্রয় দিতে নেই।’ তিনি কেন অমন কথা বলছেন, জানতে চাইলে বলেছিলেন অনেক কথা। তার কথার সার-সংক্ষেপ ছিল, তার বাবার শান্তিপুরে তিন বিঘা সম্পত্তি ছিল। সাতচল্লিশের দেশভাগে পূর্ব বাংলা প্রত্যাগত মানুষরা তার বাবার হাত-পা ধরে দুই কাঠা, তিন কাঠা করে আড়াই বিঘা জায়গা কিনে নেয়। এতে তাদের পাঁচ কাঠার ওপর বসতভিটায় বসবাস করতে হচ্ছে। আর পৈতৃক জায়গায় বসবাস করা বাঙালদের দাপটে তাদের চুপসে থাকতে হয়। একজনের সঙ্গে বিবাদ হলে বাঁদরের ন্যায় সবাই একত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাঙালদের দাপটে তাদের কোণঠাসা দশা। এসব কারণেই তিনি পূর্ববঙ্গীয়দের সম্পর্কে অমন কথাগুলো বলেছিলেন।
১৯৮৬ সালে কলকাতায় পশ্চিম বাংলার স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। প্রথমজন প্রায় ৯০ বছর বয়সি ক্ষিতিশচন্দ্র ধর। তিনি পূর্ব বাংলা এবং পূর্ববঙ্গীয়দের সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক এমন সব কথা বলেছিলেন তাতে বিষণ্ন হয়েছিলাম। তার কথাগুলো ছিল এরূপ : পশ্চিম বাংলাই নানাভাবে পূর্ব বাংলাকে সমৃদ্ধ করেছে। পূর্ব বাংলার মানুষদের শিক্ষা ও জীবিকার জন্য কলকাতামুখী হতে হয়েছে। পূর্ব বাংলা আগাগোড়া পশ্চিম বাংলার ওপর নির্ভরশীল ছিল। পূর্ব বাংলা সভ্য মানুষের বসবাসযোগ্য ছিল না। খাল-বিল, নদ-নদী, জলাশয়, কাদা-মাটিতে লেপ্টে থাকা পূর্ববঙ্গ অখণ্ড বাংলার এক পশ্চাৎপদ জনপদ। সভ্যতা বঞ্চিত অজপাড়া গাঁ বিশেষ। পূর্ব বাংলার মানুষদের সভ্য বলেও তিনি গণ্য করেন না। সাতচল্লিশের দেশভাগে পূর্ববঙ্গীয় উদ্বাস্তুদের কারণে তাদের মরণদশা হয়েছিল। বাঙালদের চাপের ওই কুফল তারা আজ অবধি ভোগ করছে। দুই বাংলার সংস্কৃতিগত পার্থক্য জ্বাজল্যমান, পশ্চিম অগ্রে, পূর্ব পশ্চাতে। পূর্ব বাংলা ও পূর্ববঙ্গীয়দের সম্পর্কে তার ধারণা অত্যন্ত নিম্নস্তরের। পশ্চিম বাংলার মানুষদের পূর্ব বাংলায় যাওয়ার কোনো প্রয়োজন পড়েনি। পূর্ব বাংলার বাঙালদের বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহও ছিল না। শিক্ষা, সংস্কৃতিতে পিছিয়ে থাকা পূর্ব বাংলা তাদের নিকট তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের প্রতীক। ভাষা ও সংস্কৃতিগত কারণে পূর্ববঙ্গীয়দের তারা বাঙালির স্থলে ‘বাঙাল’ বলত। অবশ্য সাতচল্লিশের দেশভাগের পর পূর্ববঙ্গীয়রাও তাদের ‘ঘটি’ বলে উপহাস করা শুরু করে। দুই বাংলার মানুষদের মধ্যে কোনো সামাজিক সম্পর্ক নেই বললেই চলে। ব্যক্তিগত পছন্দে ছেলেমেয়ের বিয়ে সম্পাদনে দুপক্ষের অভিভাবকরা বাধ্য হলেও পারিবারিকভাবে পরস্পরের সন্তানদের বিয়ে অতীতেও দেয়নি, আজো দিতে আগ্রহী নয়। এ বিষয়ে ক্ষিতিশ বাবুকে প্রশ্ন করলে তিনি এককথায় জবাব দিয়েছিলেন। সংস্কৃতিগত ব্যবধানের জন্যই দুই বাংলার নারী-পুরুষের মধ্যকার সামাজিক আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার উপায় নেই। দুই বাংলার মানুষের মাঝে প্রত্যক্ষ বিরোধ-বিবাদ নেই সত্য। মনস্তাত্ত্বিকভাবে বৈপরীত্য কিন্তু উভয়ের মাঝে বিরাজ করে আসছে। যার নজির দেখা গেছে ইস্ট বেঙ্গল ও মোহনবাগান ফুটবল দলের খেলাকে কেন্দ্র করে ঘটি ও বাঙালদের পরস্পরের বিভাজন ও বিরোধ।
পূর্ববঙ্গীয়দের সম্পর্কে ক্রমাগত নেতিবাচক কথায় তাকে আমি বলেছিলাম, ‘আজকের পশ্চিম বাংলার খ্যাতিমান লেখক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক, অভিনয় শিল্পী, রাজনীতিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী সবার ব্যাকগ্রাউন্ড কিন্তু পূর্ববঙ্গীয়।’ তিনি দমার পাত্র নন। জোরের সঙ্গে বলেছিলেন, ‘তারা এখানে আসার ফলেই ঋদ্ধ হতে পেরেছে। আমাদের সংস্পর্শে না এলে কুলি, কামার, মজুর, চাষাই থাকত।’ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন, ‘কিসের মুক্তিযুদ্ধ! বলো ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধ, যুদ্ধে পাকিস্তানিদের পরাজিত করে ভারত রাষ্ট্র বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে তোমাদের রক্ষা করেছে।’ আমরা বাংলাভাষী রাষ্ট্রের নাগরিক। একজন বাঙালি হিসেবে আপনার তো গর্ভ করা উচিত? এই প্রশ্নে তিনি বলেছিলেন, ‘দেখো আমি প্রথমে ভারতীয়। তারপর অন্যকিছু।’ আরো বলেছিলেন, ‘পূর্ববঙ্গীয়রা শুদ্ধ বাংলাও জানে না। যতটুকু শিখেছে সেটা আমাদের কাছ থেকেই। তোমাদের যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, সেটা আমাদের জন্যই। টালিগঞ্জের এক বাঙাল অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে বাঙাল বলে গর্ব করে। এত বছরেও বাংলায় কথা পর্যন্ত বলতে পারল না। বাঙাল ভাষায়ই কথা বলে। এমনকি সিনেমাতে পর্যন্ত বাঙাল ভাষায় সংলাপ বলে আসছে।’ আমি তাকে মনে করিয়ে দিই খ্যাতিমান গায়ক, সুরকার শচীন দেববর্মন বাঙাল ভাষায় জীবনভর কথা বলেছেন। এতে তো তার সৃজনশীলতায় কোনো বিরূপ প্রভাব পড়েনি? তিনি আমাকে থামিয়ে বলেন, ‘ভুল বকছো কেন? শচীন কর্তা বাঙাল বা বাঙালি নন। তিনি ত্রিপুরার রাজাদের বংশধর এবং জাতিতে বোরো বা ত্রিপুরী। বাল্যকাল থেকে কুমিল্লায় থাকার ফলে বাঙালদের সংশ্রবে বাঙাল ভাষায় অভ্যস্ত হয়েছেন। ত্রিপুরায় থাকলে ককবরক কিংবা বোরো ভাষাই জানতেন।’
সাতচল্লিশে বাংলা ভাগ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে বলেছিলেন, ‘বাংলা ভাগ অনিবার্য ছিল। কেননা অখণ্ড বাংলায় সংখ্যাগরিষ্ঠরা ছিল মুসলমান। এতে হিন্দুরা মুসলমানদের দ্বারা পিষ্ট হতো। অনুন্নত শ্রেণির কবলে চিড়ে চ্যাপটা হতে হতো। বাংলা ভাগে আমাদের ক্ষতিটা হয়েছে শরণার্থী বাঙালদের আগমনের কারণে। নয়তো বাংলা ভাগে আমাদের কোনো সংকট ছিল না।’ ছেচল্লিশের দাঙ্গা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেছিলেন, ‘ওই দাঙ্গা জিন্নাহর ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে পালনকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছিল। আর কলকাতা দাঙ্গায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সুরাবর্দী (সোহরাওয়ার্দী)। তবে ওই দাঙ্গা সংঘটনে প্রধান ভূমিকায় ছিল বিহারি এবং শিখরা। বাঙালিরা দাঙ্গা সংঘটনে যুক্ত ছিল না।’ শিখরা তো হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়। তারা কেন মুসলমানদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা করেছিল? এই প্রশ্নে ক্ষিতিশ বাবুর বক্তব্য ছিল, মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর এবং আওরঙ্গজেব শিখদের দুজন গুরুনানককে হত্যা করেছিল। ওই ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতিশোধ হয়তো শিখরা নিয়েছিল। তার সঙ্গে আলাপে আমি হতাশই হয়েছিলাম। তবে পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয়রা আমাদের সম্পর্কে কিরূপ ধারণা পোষণ করতেন। তার চিত্রটি সেই ১৯৮৬ সালেই পেয়েছিলাম।
ওই একই সময়ে নিউ আলিপুরে এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা ও আলাপ হয়েছিল। তিনি নকশাল বাড়ি আন্দোলনের কর্মী। নির্যাতন ও কারাভোগ পর্যন্ত করেছিলেন। তার সঙ্গে কথা বলে ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নকশাল বাড়ি আন্দোলনে সর্বাত্মক ক্ষতিসাধন করেছিল। বাঁকা ঠোঁটে হেসে বলেছিলেন, তোমাদের অবস্থা জলের কুমির ও ডাঙার বাঘের খপ্পরে পড়ার দশা। দেশ ভাগের তীব্র সমালোচনা করে স্বাধীন ভারত ও পাকিস্তানের শাসকশ্রেণিকে এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে দায়ী করে খিস্তি করে অনেক কথাই বলেছিলেন। আমরা সাতচল্লিশে পাকিস্তান রাষ্ট্রের উপনিবেশিক শাসনাধীন হয়ে পড়েছিলাম। এবং একাত্তরের স্বাধীনতায় অপ্রত্যক্ষে হলেও ভারত রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে পড়েছি। শক্তিধর প্রতিবেশীর পাশে বসবাস বাঘ-কুমিরের সঙ্গে বসবাসের সমতুল্য। অচিরেই আমরা সেটা টের পাব। পরনির্ভর স্বাধীনতা কখনো শুভফল দেয় না। দুই বাংলার জনগণের দশা অভিন্ন। সেটা পাকিস্তান রাষ্ট্রে যেমন ছিল, আজো তেমনি। আর পশ্চিম বাংলাসহ সারা ভারতের সাধারণ মানুষেরও একই দশা। এখন না বুঝলেও আগামীতে নিশ্চয় বুঝতে পারবে। এই ছিল তার কথার সার-সংক্ষেপ। সেবার বিচিত্র ধরনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছিলাম। এত বছর পরও তাদের কথা বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যায়নি। তাদের কথাগুলোর প্রাসঙ্গিকতা মাঝে মাঝেই ভাবিয়ে তোলে।

মযহারুল ইসলাম বাবলা : নির্বাহী সম্পাদক, নতুন দিগন্ত।
[email protected]

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়