নাটোর : ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন

আগের সংবাদ

রাজপথে ফের শক্তির মহড়া : বিএনপির ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণার পর দিনই টানা কর্মসূচি দিল আওয়ামী লীগ

পরের সংবাদ

লোক দেখানো নয়, কার্যকর অভিযান হোক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগে গতকাল থেকে সারাদেশে অভিযানে নেমেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ডেঙ্গু আক্রান্ত সব রোগীর জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) প্রয়োজন হয় না। তারপরও কিছু ক্লিনিক যাদের আইসিইউ সুবিধা নেই, তবুও রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আইসিইউতে রাখছে। হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তাই এমন অভিযানের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু অভিযান কতটুকু সফল হয়, সেটাই দেখার বিষয়। সারাদেশে গজিয়ে ওঠা অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। বিনা চিকিৎসা বা ভুল চিকিৎসায় এসব হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু যেন স্বাভাবিক বিষয়। আর উচ্চহারে বিল আদায়ের ঘটনা তো রয়েছেই। গত বছরের মে মাসের শেষের দিকে টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরপর মা ও নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের টনক নড়ে। ২৫ মে ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিনের মধ্যে দেশের সব অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই সময়ের পর নিবন্ধনহীন কোনো ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণাও দেয়া হয়। এতে দেড় হাজারেরও বেশি অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রথম ১০ দিন সাঁড়াশি অভিযান চললেও পরবর্তী সময়ে এ অভিযানের গতি অনেকটা কমে আসে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, অভিযান চলমান একটি প্রক্রিয়া। এর আগেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বরাবরই বলে এসেছে ভুয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান অব্যাহত থাকবে ও ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু জনবল সংকটের দোহাই দিয়ে কার্যকর কিছু দেখা যায়নি। দেশে ১৩ হাজার ৬৮০টি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লাইসেন্স আছে ৬ হাজার ১০২টির। এর মধ্যে হাসপাতাল ২ হাজার ১৪৮টি, প্যাথোলজি ল্যাব ৩ হাজার ৮৭২টি ও ব্লাড ব্যাংক ৮২টি। লাইসেন্সের জন্য আবেদন এবং পরিদর্শনের অপেক্ষায় আছে আরো কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠান। উদ্বেগের বিষয়, লাইসেন্স ও ভ্যালিড কাগজপত্র নেই, অন্যদিকে তারা যে ভালো সেবা দিচ্ছে তাও নয়। অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেই ন্যূনতম ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ান। চিকিৎসা না দিয়ে যেনতেনভাবে মানুষের গলা কেটে ব্যবসা করাই যেন তাদের মূল উদ্দেশ্য। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অভাবনীয় অগ্রগতি ঘটেছে। উন্নত বিশ্বের অনেক উদ্ভাবনের সুফল ভোগ করছে বাংলাদেশের মানুষ। তবে অর্থনৈতিক কারণে এ সুবিধা সবার কাছে সমভাবে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। বিশেষভাবে অসচ্ছল জনগোষ্ঠীর জন্য এ সমস্যা আরো তীব্র হয়, যখন চিকিৎসকরা অনেক ধরনের পরীক্ষা করাতে বলেন। মেডিকেল টেস্টকে কমবেশি সব চিকিৎসক বাড়তি উপার্জনের হাতিয়ারে পরিণত করছেন, এমন অভিযোগ ক্রমেই বাড়ছে। চিকিৎসাসেবাকে সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করতে সরকার প্রতি বছরই শত শত কোটি টাকা বাজেট বাড়াচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা থাকলেও দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং অনৈতিক কারসাজির সিন্ডিকেটের বাণিজ্যের জন্য সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের দরিদ্র মানুষ। এ ধরনের হয়রানি ও অনৈতিক বাণিজ্য বন্ধ করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়