ডেঙ্গু পরিস্থিতি : ১৫ দিনে মৃত্যু হয়েছে ১৯৭ জনের

আগের সংবাদ

চিকিৎসার নামে লোক ঠকানো : অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান আজ থেকে > অব্যাহত রাখলে জনগণ উপকৃত হবে

পরের সংবাদ

জঞ্জালমুক্ত জীবন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোটা দাগে, মিনিমালিজম হলো স্বল্প দখলদারিত্ব। জীবনযাত্রায় যত সাধারণ থাকা যায়, তত ভালো। অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাদের জীবনযাপনে যা সত্যিকারভাবেই প্রয়োজন তাই মিনিমালিজম। জীবনকে জঞ্জালমুক্ত রেখে সময় ও অর্থ বাঁচিয়ে পারিবারিক জীবন, ধর্মীয় চর্চা ও নিজের আত্মোন্নয়নে বেঁচে যাওয়া বাড়তি অর্থ ও সময় ব্যয় করাকে “মিনিমালিজম” বলা যেতে পারে। এ ধরনের লাইফস্টাইলের অনুসরণকারীদের বলা হয় “মিনিমালিস্ট”। তাই মনটা পরিপূর্ণ করার উপায়ই হল জঞ্জালমুক্ত হালকা জীবন বেছে নিয়ে মিনিমালিস্ট হওয়া।
আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় অধিকাংশের ধারনা, ভাল থাকার মূলমন্ত্রই হলো অঢেল সম্পত্তির অধিকারী হওয়া। তারা বিশ্বাস করে যে, যার যত আছে সে-ই তত সুখী মানুষ। এবং অজান্তেই এই ধারণাটি গ্রহন করেছে যে, সুখ বুঝি কোনো ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কেনাকাটার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই ধারনা নিয়েই আমাদের দৈনন্দিন কর্মযজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে করোনা কালীন সংকটময় সময়। আমরা সবাই খুব ব্যস্তময় জীবনযাপন করি এবং সার্বক্ষণিক চাপের মধ্যে থাকি। পরিবার ও নিজের লম্বা লম্বা বিল পরিশোধের জন্য আমরা রোজ উৎসাহী হয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করি, কিন্তু তারপরেও প্রতিদিন গভীর ঋণের নিচে চাপা পড়ে যাই। আমরা প্রতিনিয়ত এক কাজ থেকে অন্য কাজের মধ্যে ছুটে চলি, এমনকি মাল্টিটাস্কিংও বাদ দেই না, তবুও মনের মধ্যে অস্থিরতা, শূন্যতা, অসন্তুষ্টি রয়েই যায়। সবসময় মনে হয় যেন কিছুই করা হলো না। আমরা আমাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অন্যের সাথে নিরবচ্ছিন্নভাবে যোগাযোগ রাখি, সময় সময় ইন্টারনেটে কর্মঘন্টা নস্ট করি সোশ্যাল মিডিয়া স্টক করে। অথচ খুব কাছের মানুষটির খবর রাখি না বা সত্যিকার অর্থে যে সম্পর্কগুলো আমাদের জীবনে গুরুত্ব বহন করে তা কৌশলে এড়িয়ে চলি।
মিনিমালিজমের গ্রহণ এসব দখলদারিত্বের আবেগ থেকে মুক্তি নিয়ে আসে। এটি ভোগবাদের ট্রেডমিলকে সরিয়ে দেয়। এটি পারস্পরিক সম্পর্ক, অভিজ্ঞতাকে মূল্য দেয় এবং আত্মোপলব্ধি শেখায়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস জীবন থেকে দূর করতে অভ্যস্ত করে তুলে। সরলতম জীবনযাত্রার মাঝেই প্রাচুর্যময় জীবনের সন্ধান এনে দেয়।
মিনিমালিস্ট হয়ে ওঠা জীবনকে অনেকখানি ধীর করে দেয় এবং আমাদের “কখনো না থেমে দ্রুত এগিয়ে চলা বা শুধুই ছুটে চলার” এই উন্মাদনা থেকে মুক্তি দেয়। এটি জীবনে ছাড় দেওয়ার স্বাধীনতা দেয় এবং কেবল গুরুত্ববহ জিনিসগুলো রাখার চেষ্টা করে, যা জীবনকে তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলতে সহায়তা করে।
মিনিমালিস্টরা অনেক বেশি উদার মনের। তারা জীবনযাত্রায় প্রয়োজনের বাড়তি সবকিছু দান করে দেন। এতে মনটা উদার থাকে। তারা বাড়তি মোহগ্রস্থ বা খ্যাতির পিছনে সময় ব্যয় করে না। বেশি সময় ব্যয় করতে পারে পরিবারের জন্য, ধর্মরে জন্য ও পছন্দের কাজে ফোকাস করার জন্য।
ইউরোপ আমেরিকায় মিনিমালিস্ট জনগোষ্ঠী বাড়ছে। জাপান অনেক আগে থেকেই মিনিমালিস্ট হওয়ার চর্চা করে। হয়ত আমাদের দেশের মধ্যবিত্তরাও সচেতন হবে খরচ সীমিত করায় আর কম প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুদ করা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য। তবে, কৃপণতা মিনিমালিস্টরা অপছন্দ করে। তারা হয়ত ওয়্যারড্রব ভর্তি শার্ট রাখবে না। যে কয়টা রাখবে তা হবে বেস্ট কোয়ালিটি। তারা কোয়ানটিটি নয় কোয়ালিটিকে প্রাধান্য দেয়। তারা জীবনকে সহজ করতে যত খরচই যাক টেকনোলজির সহায়তা নেয়। তারা জীবন সহজ করতে মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন ও ডিশ ওয়াশার মেশিন বিলাসীতা নয় প্রয়োজন মনে করে।
জীবনে বিনোদন থেকে পণ্যের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বেশি কাজ ক?রে।

দ্বৈত জীবনাচার থেকে মিলবে মুক্তি
বেশিরভাগ মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন করে না অথবা বুঝতেই পারে না যে তারা ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করে। যেমন- তারা তাদের পরিবারের অভ্যন্তরে একরকম, সহকর্মীদের সাথে একরকম, এবং প্রতিবেশীদের সাথে আরেকরকম জীবনযাপন করে।

পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে জীবনযাত্রা বেছে নেয়। অন্যদিকে, একটি মিনিমালিজম বা সাধারণ জীবন অবিচ্ছিন্ন এবং ধারাবাহিক। এটি এমন একটি জীবনযাত্রা যা পরিস্থিতি নির্বিশেষে সম্পূর্ণ স্থানান্তরযোগ্য, এবং যা কি না শুক্রবার সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের মাঝে অথবা রবিবার সকালে অফিসের কলিগদের মাঝে কোনো ব্যতিক্রম হয় না। এটি সৎ, স্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য এবং অপরিবর্তনীয় একটি জীবনধারা, যা সব পরিস্থিতিতে কাজ করে।

মডেল ও মেকওভার :

সেগুফতা আজমী, বিউটি ব্লগার
সূত্র : রিডার ডাইজেস্ট

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়