কাগজ ডেস্ক : সবার আগে ভারত এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করায় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে গতকাল পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ অঘোষিত সেমিফাইনালে পরিণত হয়। টান টান উত্তেজনাকর এ ম্যাচে ফলাফল নির্ধারণ হয় ম্যাচের শেষ বলে। শেষ ২ ওভারে ম্যাচ জিততে শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন হয় ১২ রান। ৪১তম ওভারে ৪ রান নেয়ায় শেষ ওভারে ৮ রান দরকার হয় লঙ্কানদের। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের ২৫২ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা ৪২ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান তোলে ২ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়। রবিবার ১৭ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের মোকাবিলা করবে শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানকে হারানোর মধ্য দিয়ে সুপার ফোরের ৩ ম্যাচের ২টিতে জিতেছে সিংহলিজরা। বাংলাদেশকে ২১ রানে হারানোর পর পাকিস্তানকে ২ উইকেটে হারায়। অন্যদিকে সুপার ফোরের ৩ ম্যাচে অংশ নিয়ে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারা পাকিস্তান টাইগারদের বিপক্ষে জিতেছে।
এশিয়া কাপের সুপার ফোরের নিজেদের শেষ ম্যাচে গতকাল শ্রীলঙ্কাকে জেতার জন্য ৪২ ওভারে ২৫২ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে পাকিস্তান। জিতলেই ফাইনাল নিশ্চিত, এমন সমীকরণ নিয়ে মাঠে নেমে শুরুতেই বৃষ্টির বাধায় পড়ে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট পর খেলা শুরু হলে ম্যাচ নেমে আসে ৪৫ ওভারে। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লেও দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে পাকিস্তান। বৃষ্টির বাধায় আবারো খেলা বন্ধ হলে খেলা ৪২ ওভারে নেমে আসে। আবদুল্লাহ শফিকের অর্ধ-শতকের পর শেষদিকে রিজওয়ান-ইফতেখারের ১০৮ রানের পার্টনারশিপে ৪২ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ২৫২ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। বৃষ্টির কারণে দুবার খেলা বন্ধ হওয়ায় ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ম্যাচ জিততে ৪২ ওভারে শ্রীলঙ্কাকে ২৫২ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়। শুরুতে দলীয় ২০ রানের মাথায় কুশল পেরোর উইকেট হারায় সিংহলিজরা। ৭৭ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লেও তৃতীয় উইকেট জুটিতে সাদেরার সঙ্গে ১০০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন কুশল মেন্ডিজ। সাদেরা ৪৮ রানে সাজঘরে ফিররেও অন্য প্রান্ত আকড়ে রাখে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে দলীয় ২১০ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৯১ রানে আউট হন কুশল মেন্ডিজ। এরপর চারিথ আসালাঙ্কা ৪৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালের টিকেট এনে দেন।
এর আগে কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে পাকিস্তান। স্কোর বোর্ডে ৯ রান তুলতেই তারা হারিয়ে ফেলে ওপেনার ফখর জামানকে। ১১ বলে ৪ রান করে লঙ্কান পেসার প্রোমোদ মধুশানের বলে বোল্ড হন তিনি।

এরপর ম্যাচে হাল ধরার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ও পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। তবে ধীর গতিতে ব্যাটিং করতে থাকেন দুইজন। ফলশ্রæতিতে ১১.১ ওভারের প্রথম দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে পাকিস্তান। ১৬তম ওভারের শেষ বলে ৩৫ বলে ২৯ রান করা বাবর আজমকে আউট করে শ্রীলঙ্কাকে ব্রেক থ্রু এনে দেন দুনিথ ভেল্লালাগে। এরপর রিজওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে খেলার হাল ধরার চেষ্টা করেন শফিক। মাথিশা পাথিরানার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হওয়ার আগে শফিক তুলে নেন পাকিস্তানের জার্সিতে প্রথম ওয়ানডে অর্ধ-শতক। ৩ চার ও ২ ছক্কায় শেষ পর্যন্ত বিদায় নেন ৬৯ বলে ৫২ রান করে বিদায় নেন তিনি। এরপর মোহাম্মদ হারিস ও মোহাম্মদ নাওয়াজও দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন। হারিস করেন ৯ বলে ৩ রান, নাওয়াজের ব্যাট থেকে আসে ১২ বলে ১২ রান। এরপর বৃষ্টি নামলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। খেলা নামিয়ে আনা হয় ৪২ ওভারে। বিরতির পর ইফতেখার আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন রিজওয়ান। ভেল্লালাগেকে দারুণ এক স্কয়ার ড্রাইভে চার মেরে ৪৮ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন রিজওয়ান। ৪০ বলে ৪৭ রান করে পাথিরানার শিকার হন ইফতেখার। শ্রীলঙ্কার হয়ে পাথিরানা নেন ৩টি উইকেট।