সংসদে বিল পাস : মিথ্যা দলিল তৈরি ও জাল স্বাক্ষরে ৭ বছর কারাদণ্ড

আগের সংবাদ

বাজার নিয়ন্ত্রণে হিমশিম > ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম বেঁধে দিল সরকার > ফল না পেলে আমদানি : বাণিজ্যমন্ত্রী

পরের সংবাদ

জ্ঞান শৈল সড়ক কথন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

ব্রিটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশের বয়স হবে দুইশ পঁচাত্তর বছর। রতনপুর হিন্দুপাড়াটা কাঁদে! বাড়ির সামনেই রাস্তাটা শত বছরের পুরনো। কোনোদিন রাস্তায় কার্পেট কিংবা বিটুমিন দেয়া হয়নি। আবার এই রাস্তা এক এক গ্রুপ এক এক নাম দিতে চায়। অন্যদিকে হারগেজি খালের পাড় ভেঙে পানি মানুষের বাড়িতে ঢুকে পড়ে।
আমরা কি বাংলাদেশের মানচিত্রে আছি? আমাদের সহজ-সরল গ্রামটি কোনোদিন সহজ ছিল না। কোনো না কোনো গ্রুপের অশান্তিতে আলোচনায় ছিল। সেজন্যই হয়তো বা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ উন্নত বিশ্বের ছায়ায় গেলেও আমাদের ছোট গ্রাম মধ্যযুগে পড়ে থাকে। আমি ভাবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কত কিছু করেছেন সমাজ নির্মাণে। চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করা ভারতের সর্বোচ্চ পুরস্কার পাওয়া মৈত্রেয়ী দেবী। যার ১৯৩০ সালে প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘উদিত’ বইটির ভূমিকা লিখে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনিও সাহিত্য ছাড়া ও সমাজসেবী হিসেবে বিশাল ভূমিকা রেখেছিলেন। শুধু সরকার কেন আমারও তো দায়বোধ রয়েছে। আমার দেশ আমাকে ভালোবাসে। সড়কের নাম দিলাম ‘জ্ঞান শৈল সড়ক’। জ্ঞান মানে জ্ঞানেন্দ্রলাল দাশ, শৈল মানে শৈল প্রভা দাশ। আমার দাদু-দিদার নামেই রাস্তা। এই নামে গত ৪০ বছর কোটি কোটি টাকার মানবিক কাজ করা হয়েছে।
রাস্তা করার প্রস্তুতি নিলাম ৩১ মার্চ ২০২১। কাজ শুরু হলো ৫ এপ্রিল ২০২১। কাজ শেষ হল ১ম বার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১। তখন জ্ঞান শৈল সড়ক ঊংঃরসধঃব পড়ংঃ ঃশ ৫১,৮১,৯২৬.০০ পাস হলো। এই সময়ে আমাকে যেতে হয়েছে মেডিকেলে বারবার। তোমরা মনকে কর কমিউনিস্টের কিংবা সমাজতন্ত্রের। কাজ কর প্রগতিশীলের। ধর্ম কর মানবতার। যে যেখানে জন্মেছ সে সেই ধর্মবিশ্বাস কর। ধর্মে ধর্মে বিভাদ কর না। মানুষে মানুষে হিংস্র হয়ে ওঠো না। শুধু স্বার্থপর হয়ে ওঠো না। ১৮৬৩ সালে আশ্রম হিসেবে শান্তিনিকেতন হয়। প্রথমে নাম ছিল ছাতিম তলা। শুরু করেছিলেন মহর্ষী দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার ছেলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায় ১৫ বছর পর। ২৭ জানুয়ারি ১৮৭৮ সালে প্রথম আসেন। রবীন্দ্রনাথ এই প্রতিষ্ঠানকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ এক প্রতিষ্ঠান করেন। আমার জীবনে দেখা শ্রেষ্ঠ এক শৈল্পিক তৃপ্তির জায়গা। যেখানে রবীন্দ্রনাথের প্রায় লেখার সৃষ্টি হয়েছিল। আমিও ভেবেছিলাম ২৭৫ বছর না হওয়া রাস্তা। আমার ফুলকাকুরও সহযোগিতায় ‘জ্ঞান শৈল সড়ক’ নামকরণে করি। এরপর গ্রামটাকে আরো অনেক উন্নয়নে সাজাব। রাস্তার কাজে রাষ্ট্রের সব ধরনের সুযোগ পাওয়ার পরও জীবনটা হাঁফাতে হাঁফাতে শেষ। তিন বছর বহু বিপদ মোকাবিলা করে আবার ২য় ঊংঃরসধঃব ঈড়ংঃ রাস্তাটা টেন্ডার হয়। আনন্দের বিষয় হলো ৮ আগস্ট আমার জন্মদিন ছিল- ওই দিন ওয়ার্ক অর্ডার হয়। ভাবছিলাম আমি কি ৩৯ বছরে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়া বিবেকানন্দ! দুঃখ যার সঙ্গী হলেও সফলতা প্রচুর। এবার ৪৮,৮৯,০০৫ টাকা দ্বিতীয় বারে হলে কাজ শুরু হয়। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন হুইপ আলহাজ শামসুল হক চৌধুরী এমপি। বর্ষার এমন অসময়ে কাজ চলছে দ্রুত। তার থেকেও দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন গ্রামের এক মর্ডান, পোস্ট-মর্ডান ক্রিমিনাল। যার যন্ত্রণায় সারা গ্রাম অশান্ত! কথায় কথায় মামলা করা, কথায় কথায় জায়গা দখল, কথায় কথায় পুলিশের এসআই আনা, কথায় কথায় ফেসবুক স্ট্যাটাসে যা ইচ্ছে তা লেখা। ধর্মীয় অনুভূতিকে ফায়দা লুটিয়ে-মানুষের পিঠ মাটিতে লাগিয়ে দেয়া। জ্ঞান শৈল সড়ক নির্মাণে সব মানুষ সহযোগিতা করছে। সব অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সারা গ্রাম ঐক্য হয়ে প্রতিহত করা হয়। জ্ঞান শৈল সড়ক নির্মাণে আমি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব গ্রামের মানুষের কাছে। পাশপাশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এমপি, হুইপ আলহাজ শামসুল হক চৌধুরী এমপি, সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালেদ এমপি, এলজিআরডি মন্ত্রণালয়, আওয়ামী লীগের স্বনামধন্য কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুর ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এবং জ্ঞান শৈলের মহাত্মা অনুপ বরণ দাশ আপনার প্রতি।

বিদ্যুৎ কুমার দাশ : পটিয়া, চট্টগ্রাম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়