‘রাজাকারদের জনসংখ্যা বেড়েছে’

আগের সংবাদ

চাপ কমলেও সতর্ক থাকবে আ.লীগ

পরের সংবাদ

এশিয়াডে বাংলাদেশের পতাকা সাবিনার হাতে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন এবারের এশিয়ান গেমসে গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদের সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা বহন করবেন। চলতি মাসের ২৩ তারিখেই মাঠে গড়াবে এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত এশিয়ান গেমস। একই দিনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে চীনের হ্যাংঝুতে। সেখানে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা বাহনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে দুজনকে। তাদের মধ্যে সাবিনা একজন, যাকে বাংলাদেশ নারী ফুটবলের অধিনায়ক হিসেবে এই মর্যাদা দিয়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন।
এবারের এশিয়াডে মোট ১৭টি ডিসিপ্লিনে অংশগ্রহণ করবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এর মধ্যে আছে নারীদের ফুটবলও। আর সেখানে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেবেন সাবিনা খাতুন। তিনি বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলে আক্রমণভাগে খেলেন। জাতীয় দল ছাড়াও ক্লাব ফুটবলে তিনি খেলেন বসুন্ধরা কিংসের হয়ে।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় নারী ফুটবল দলের জার্সি গায়ে সাবিনার পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০৯ সালে। জাতীয় দলের অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে তিনি ২০১২ সাল পর্যন্ত মোট ৫ ম্যাচ খেলেছেন। যেখানে তিনি ১টি গোল করতে পেরেছিলেন। গোলের সংখ্যাটা নেহায়েত কম হলেও সাবিনা প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে চাপ সৃষ্টি করতে যথেষ্ট পারদর্শী। আর আক্রমণাত্মক ভঙ্গির খেলার কারণেই তাকে ২০০৯ সালেই জাতীয় নারী দলে ডাকা হয়। বয়স কম হওয়াতে তিনি জাতীয় দলের কিছু ম্যাচে খেলার সঙ্গে নিয়মিত অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলতেন। অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে তিনি নিয়মিত জাতীয় নারী দলের খেলোয়াড় হন ২০১২ সালের পর। জাতীয় দলের ক্যারিয়ারের শুরু থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখ পর্যন্ত সাবিনা মোট ৪৬টি ম্যাচে মাঠে নেমেছেন। বেঙ্গল টাইগ্রেস অধিনায়ক এই পর্যন্ত গোল করেছেন ৩১টি। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে এই সংখ্যাটা মোটেও কম নয়। আন্তর্জাতিক মহলে সাবিনা খাতুনের সবচেয়ে বড় অর্জন ২০২২ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপার ছোঁয়া পাওয়া। এর আগে তিনি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ দলের হয়ে সাফে রানার্সআপ হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন।
ক্লাব ফুটবলে অবশ্য সাবিনার অর্জনের তালিকাটা অনেক বেশি আলোকিত। ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি খেলেছেন সাতক্ষীরা জেলার হয়ে। জন্মসূত্রেই সেই জেলার হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন এই তারকা নারী ফুটবলার। সাতক্ষীরা জেলার হয়ে তিনি মাত্র ২১টি ম্যাচে ৭০টি গোল করেন। ম্যাচ অনুপাতে এখানে তার গোলের সংখ্যাটা রীতিমতো বিশাল। একই সময়ে তিনি বাংলাদেশ ভিডিপির হয়েও খেলেছেন। সেখানে তার ম্যাচ সংখ্যা ৫ ও গোল সংখ্যা ৬। ২০১১ সালে তিনি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের নারী দলের হয়ে খেলেছেন। দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির হয়ে সাবিনা ৫ ম্যাচে ২৫ গোল করেছেন। এই ক্লাবের হয়ে তার গোল সংখ্যা ম্যাচ সংখ্যার ৫ গুণ! শেখ জামালের জার্সি গায়ে খেলা শেষ করে তিনি যোগ দেন ঢাকা মোহামেডান ক্লাবে। সেই ক্লাবের হয়েও মাত্র ৫ ম্যাচ খেলেছেন সাবিনা। যেখানে তার গোল সংখ্যা শেখ জামালের চেয়েও ৩টি বেশি, অর্থাৎ ২৮টি। এরপর ২০১৪ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বিজেএমসি দলের হয়ে খেলেছেন সাবিনা। সেই দলের হয়ে বর্তমান বাংলাদেশ অধিনায়কের গোল সংখ্যা ৭৪টি। এত বেশি সংখ্যক গোল করতে সাবিনা খেলেছেন মাত্র ১২টি ম্যাচ। ২০১৫ সালের পর মালদ্বীপ প্রতিরক্ষা বাহিনী দলের হয়ে তিনি ৭টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান। বরাবরের মতো সেখানেও আলো ছড়িয়েছেন সাবিনা। ৭টি ম্যাচে তিনি মোট ২২ বার জালের দেখা পেয়েছেন। এরপর ২০১৮ সালে সাবিনা নাম লেখান সেতু এফসিতে। সেখানে তিনি ৭ ম্যাচে ৬টি গোল করেন। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা এই নারী ফুটবলার তখন কিছুটা ছন্দহীনও ছিলেন। তাছাড়া তখন কঠিন প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করতে হয়েছে তাকে। সাবিনা ২০২০ সালটা খেলেন বসুন্ধরা কিংসের হয়ে। পুরুষদের ক্লাব ফুটবলে দেশের শীর্ষ ক্লাবগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বসুন্ধরা কিংস। সম্প্রতি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের প্রীতি ম্যাচ দিয়ে এই ক্লাবের স্টেডিয়াম বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়। এটিই বাংলাদেশের প্রথম কোনো ক্লাব স্টেডিয়াম, যেখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ দুটির মধ্যে একটি ছিল ফিফা উইন্ডোর ম্যাচ। নিজের আলোকিত ক্যারিয়ার পরিসংখ্যানের কারণেই সাবিনা দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ক্লাবে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। বসুন্ধরা কিংসের হয়ে তার খেলা ম্যাচ সংখ্যা ৩৩, যেখানে তার পা থেকে গোল এসেছে ৮১টি। এরপর ২০২১ সালে তাকে মালদ্বীপ সেনা ফুটবল ক্লাবে ধারে খেলতে পাঠানো হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়